হাজারো মানুষের নাগরিকত্ব বাতিল করেছে কুয়েত সরকার

কুয়েত সরকার এক হাজার ৬০ জনেরও বেশি মানুষের নাগরিকত্ব বাতিল করেছে, যা দেশটির ইতিহাসে নাগরিকত্ব জালিয়াতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। একটি বিস্তৃত ও দীর্ঘমেয়াদি তদন্তে কয়েক দশক ধরে চলা পরিচয় জালিয়াতির নেটওয়ার্ক ও ভুয়া নথিপত্রের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

এই অভিযান পরিচালনা করেছে কুয়েতি নাগরিকত্ব বিষয়ক তদন্তের জন্য গঠিত সর্বোচ্চ কমিটি, যা দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতীয়তা তদন্ত বিভাগ এর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করেছে। খবর গালফ নিউজের। স্থানীয় পত্রিকা আল রাইয়ের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তদন্তে উঠে এসেছে-ভুয়া পরিচয় ব্যবহার,মিথ্যা পারিবারিক সম্পর্ক দাবি করে নাগরিকত্ব নেয়া, দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখার অপরাধ (যা কুয়েতি আইন অনুযায়ী অবৈধ)।

এই তদন্তে ২০০৮ সালের একটি পুরোনো মামলাও আবার চালু হয়। এক ব্যক্তি, যার জন্ম ১৯৫৬ সালে, ভুয়া কুয়েতি পরিচয় নিয়ে থাকতেন, যদিও তার ছিল উপসাগরীয় আরেকটি দেশের নাগরিকত্ব।তিনি ২০০৬ সালে জালিয়াতির কথা স্বীকার করেন, তবুও তিনি সরকারি রেকর্ডে রয়ে যান এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ৪৪ সন্তান ও ১২২ নির্ভরশীল সদস্য তার নামে রেকর্ডে যুক্ত হন।

পরবর্তীতে ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়, তাদের অনেকের সঙ্গেই তার কোনও রক্তের সম্পর্ক নেই। এর পরিপ্রেক্ষিতেই বড় সংখ্যায় নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়।

অন্য একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনায় দেখা যায়, ১৯৪০ সালে জন্ম নেয়া এক মৃত ব্যক্তির নামে অন্তত ৪৪০ জন অবৈধভাবে কুয়েতি নাগরিকত্ব পেয়েছেন। এই একটি মামলাতেই একসঙ্গে সব নাগরিকত্ব বাতিল করে কমিটি।
সর্বশেষ কমিটির বৈঠকে চারটি বড় ফাইল থেকে প্রায় ৭০০ জনের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। এছাড়াও ১৬ জনের দ্বৈত উপসাগরীয় বা আরব নাগরিকত্ব থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা কুয়েতের নিয়ম লঙ্ঘন করে।

কুয়েতি কর্মকর্তারা জানান, সব নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্তই যাচাই করা নথি ও প্রমাণের ভিত্তিতে নেয়া হয়েছে। এই অভিযান কুয়েতে পরিচয় জালিয়াতি ও ভুয়া নাগরিকত্বের বিরুদ্ধে এক নজিরবিহীন পদক্ষেপ হিসেবে ইতিহাসে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।

এছাড়া নাগরিকত্ব বাতিল হওয়া ব্যক্তিদের স্ত্রী বা সন্তানদের আইনি অবস্থান নিয়েও সরকার শিগগির পর্যালোচনা শুরু করবে বলে জানা গেছে।

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
এক মাসের প্রস্তুতি, বিরামহীন প্রচারণা! জামায়াতের ব্যয়বহুল সমাবেশে নজির Jul 20, 2025
img
নব্বইয়ের অসমাপ্ত রাম চরিত্রে সালমান নয়, রামের ভূমিকায় অবশেষে রণবীর! Jul 20, 2025
img
নির্বাচনের মুখে জাপান, প্রধানমন্ত্রীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা Jul 20, 2025
img
ফিলার্স সরিয়ে বিপাকে উর্ফী,ঠোঁট ফুলে ঢোল Jul 20, 2025
img
অসুস্থ জামায়াত আমিরকে দেখতে তার বাসায় গেছেন ধর্ম উপদেষ্টা Jul 20, 2025
img
পোশাক নিয়ে বিতর্ক! উর্ফীর পাশে দাঁড়ালেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া Jul 20, 2025
সাকিবের নাম নিলে বাংলাদেশের নাম চলে আসে, পাকিস্তানের বিপক্ষে সাকিব কে মিস করবো! Jul 20, 2025
img
অভিবাসী আটক ক্ষমতা বাড়াতে দেশজুড়ে টেন্ট শিবির তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র Jul 20, 2025
img
সমাবেশের অসুস্থতা কাটিয়ে দায়িত্বপালনে খুলনা যাচ্ছেন ডা. শফিকুর রহমান Jul 20, 2025
img
পার্বত্য অঞ্চলে পরিপূর্ণভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার সিরিয়াস: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 20, 2025
img
মা হতে চেয়েছিলেন শেফালী Jul 20, 2025
img
‘সেনা সদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২৫’ এর উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা Jul 20, 2025
img
সুনামগঞ্জে দেড় কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য আটক Jul 20, 2025
img
বিজয়ের ‘কিংডম’-এর হিন্দি রূপ ‘সাম্রাজ্য’, মুক্তি পাচ্ছে এই জুলাইয়ে Jul 20, 2025
img
জিপিএ ৫ এর পেছনে দৌড়াতে-দৌড়াতে শিক্ষাব্যবস্থার ১২টা বেজে গেছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 20, 2025
img
চলতি বছর ৩টি যৌথ সামরিক মহড়া চালাবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র Jul 20, 2025
গুরুতর আহত কিং খান, চিকিৎসার জন্য নেওয়া হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে Jul 20, 2025
কার্তিক-শ্রীলিলা বিয়ে? জানালেন আসল সত্য Jul 20, 2025
img
জুলাই চেতনাকে সম্মান জানাতেই দ্রুত ডাকসু নির্বাচন: ঢাবি উপাচার্য Jul 20, 2025
মিষ্টিকেই বিয়ে করছেন শাকিব! যা জানালো ভারতীয় সংবাদমাধ্যম Jul 20, 2025