এমন বিষণ্ণ বিকেল এখানে কখনো দেখিনি : উপ-প্রেস সচিব

উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পুরো দেশ শোক আর আতঙ্কে স্তব্ধ। এ নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, এমন বিষণ্ণ বিকেল এখানে কখনো দেখিনি। যারা এই দুর্ঘটনায় প্রিয়জন হারিয়েছেন তাদের জন্য আন্তরিক শোক ও সমবেদনা।

আহতরা যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠে কায়মনো বাক্যে সেই প্রার্থনা করি।
সোমবার (২১ জুলাই) রাতে ওই ফেসবুক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

উপ-প্রেস সচিব লিখেন, ইয়াসিন মজুমদার আমার কাজিন, বন্ধুও বটে। আমাদের ছোটবেলা একসঙ্গে কেটেছে। একসঙ্গে এসএসসি পাস করে আমরা ঢাকায় পা দিয়েছি। আজ যখন বিমান দুর্ঘটনার খবর পেলাম, কি মনে করে অন্য সবাইকে বাদ দিয়ে আমি তাকেই ফোন দিলাম। এরপর যা শুনলাম, সেটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। ‘আমার এক মেয়ে গুরুতর আহত, তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া হচ্ছে।

তোর ভাবী ও আরেক মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছে না। পারলে হেল্প কর, প্লিজ।’ কাঁপা কণ্ঠে তার এই আকুতি শুনে তাৎক্ষণিক কি করা উচিত বুঝে উঠতে পারছিলাম না।

তিনি আরো লিখেন, বিকেল নাগাদ যখন ঢাকা মেডিক্যালে পৌঁছাই, দুই মেয়েকেই পাওয়া যায়। দুজনই দগ্ধ। ভাবীরও খোঁজ মেলে। হাসপাতালে তখন আহতদের আর্তনাদ। স্বজনদের ভিড়। আমার সাহস হয়নি উপরে উঠে তাদের কাউকে দেখব। ততক্ষণে দুর্ঘটনার বিস্তারিত খবর আমাদের কাছে আসতে শুরু করেছে।

আজাদ মজুমদার লিখেন, জাতীয় বার্ন ইউনিটের নিচতলায় সাংবাদিকদের ১৬ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়ে আমরা সিএমইচএ যাই। সেখানে বেশ কয়েকজনের মরদেহ রাখা আছে। যথারীতি মর্গের সামনে স্বজনদের ভিড়। একটু এগিয়ে যেতেই দেখা পাই বৈশাখি টিভির এক সহকর্মীর। না, তিনি সেখানে রিপোর্ট করতে যাননি। গিয়েছেন দুর্ঘটনায় নিহত মেয়ের লাশ আনতে। আমাদের দেখে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়লেন। কাঁদছেন আরো অনেকের স্বজন। এরা সবাই আমাদেরই আপনজন। কাকে রেখে কাকে সান্ত্বনা দেব।

উপ-প্রেস সচিব লিখেন, সবাইকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে যমুনায় ফিরলাম। এমন বিষণ্ণ বিকেল এখানে কখনো দেখিনি। যারা এই দুর্ঘটনায় প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাদের জন্য আন্তরিক শোক ও সমবেদনা। আহতরা যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠে- কায়মনো বাক্যে সেই প্রার্থনা করি। রাতে হাসপাতাল থেকে এক সহকর্মী ছবি তুলে জানিয়েছেন, আমার বন্ধু ইয়াসিনের ১০ বছর বয়সী দুই যমজ মেয়ে আশঙ্কামুক্ত। এখন মনঃপ্রাণ দিয়ে চাইছি, শিশুসহ বাকি যারা আহত তারাও যেন আশঙ্কামুক্ত হয়ে যায় এবং দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসে।

ইউটি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জামায়াত আমিরের সঙ্গে শিল্প মালিক প্রতিনিধিদের সৌজন্য সাক্ষাৎ Sep 16, 2025
img
মিয়ানমারে অবৈধভাবে পণ্য পাচারের সময় ১১ জনকে আটক করেছে নৌবাহিনী Sep 16, 2025
img
চবিতে ‘হোস্টেল সংসদ’ নির্বাচনের ঘোষণা Sep 16, 2025
img
সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করল বিএসএফ Sep 16, 2025
img
বিশ্ববাজারে ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম Sep 16, 2025
img
দুই জয়ে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে শ্রীলঙ্কা, খালি হাতে বিদায় নিল হংকং Sep 16, 2025
img
ভোজ্যতেল আমদানিতে ব্যয় বৃদ্ধি করল এনবিআর Sep 16, 2025
img
ইভ্যালি থেকে বেরিয়ে একই কৌশলে প্রতারণা, নারী গ্রেপ্তার Sep 16, 2025
img
এশিয়া কাপ জিতেনি বাংলাদেশ গুগোল করে নিশ্চিত হলেন ট্রট Sep 16, 2025
img
ড. ইউনূস ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের স্বপ্ন বিনষ্ট হবে : রাশেদ খান Sep 16, 2025
img
ডাকসুর ভোট ম্যানুয়ালি গণনার জন্য উমামার লিখিত আবেদন Sep 16, 2025
img

মাসুদ সাঈদী

জনগণের ভালোবাসা অর্জন করুন, তাহলে নির্বাচন বর্জনের দরকার হবে না Sep 16, 2025
img
আরও ১ মাস বাড়লো ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ Sep 16, 2025
img
আগস্টে ৪৯ মামলায় জড়িত ৩১১ দুর্নীতিবাজ Sep 15, 2025
img
১৫ কেজির কোরাল মাছ বিক্রি ১৮ হাজারে Sep 15, 2025
img
শ্রীলঙ্কার সামনে হংকংয়ের ১৫০ রানের চ্যালেঞ্জ Sep 15, 2025
img
নিকুঞ্জে নাগরিক জাগরণ: হারানো শান্তি ফিরে পাওয়ার গল্প Sep 15, 2025
img
সুপার ফোরে খেলবে বাংলাদেশ, আত্মবিশ্বাসী কোচ Sep 15, 2025
img
ম্যাচের আগে বাংলাদেশের প্রশংসায় জনাথন ট্রট Sep 15, 2025
img
অসুস্থ অমিতাভকে ২০০ জন ৬০ ব্যাগ রক্ত দিয়েছিলেন Sep 15, 2025