দশ বছরে সারা দেশে গুম হয়েছে ১২০৯ জন: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকে এখন পর্যন্ত সারাদেশে গুম হওয়া মানুষের সংখ্যা ১২০৯ জন। যার ভেতরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গুমের সংখ্যা ৭৮১ জন। একদিন তদন্ত করে এর বিচার হবেই।

‘আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলীয় ওই পরিসংখ্যান তুলে ধরেন রুহুল কবির রিজভী।

গুম হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু, ঢাকা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর চৌধুরী আলম, লাকসাম বিএনপি নেতা হুমায়ুনর কবির পারভেজ, ছাত্রদল নেতা জাকির, নিজাম উদ্দিন মুন্না, তারিকুল ইসলাম ঝন্টু, আদনান চৌধুরী, মো. সোহেল, খালিদ হোসেন সোহেল, সম্রাট মোল্লা, মাহবুব সুমনসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলোর ‘শত শত নেতাকর্মী’ রয়েছেন বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

তিনি বলেন, ‘গুম হওয়া পরিবারগুলোর ছোট শিশুরা অপেক্ষা করছে বাবা ফিরে আসবে সেই আশায়। সন্তানের দুচিন্তায় অনেকের বাবা-মা দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন। নিখোঁজ সুমনের মা চোখের পানি ফেলতে ফেলতে অন্ধ হয়ে গেছেন। গুমের শিকার প্রতিটি পরিবারে কান্না-আহজারি আর প্রতীক্ষার দিবানিশি শেষ হচ্ছে না।’

রিজভী বলেন, ‘গুম একটি ভয়ঙ্কর মানবতাবিরোধী অপরাধ। বাংলাদেশে বর্তমান গুমের ধারাবাহিকতা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা শুরু হয়েছিল ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালে। গণতন্ত্রের অকাল প্রয়াণ ঘটানোর জন্যই গুমের মত অমানবিক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। গণতন্ত্র হত্যায় রাষ্ট্রের এই নিষ্ঠুর চেহারা দেখে জনগণ শোক জানাতেও ভয় পায়।’

‘সুদূরপ্রসারী উদ্দেশ্য নিয়ে, বিরোধী দল ও মতকে নির্মূল করে রাষ্ট্র-সমাজে একমাত্রিকতা, কর্তৃত্ববাদী ও একদলীয় শাসনব্যবস্থাকে দীর্ঘস্থায়ী করাই এর মূল লক্ষ্য।’

আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশে গুমের ইতিহাস সৃষ্টি করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় মদদ ছাড়া কাউকে গুম করা অসম্ভব। গুম ও ক্রসফায়ারের মতো গুরুতর অপরাধের ঘটনাগুলো সমাজে, সংবাদ মাধ্যমে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হলেও তাতে সরকারের টনক নড়ে নাই।’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করিম শাহিন, আবেদ রাজা, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: