ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দিয়ে শেষ পর্যন্ত স্থগিত করেছে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রীরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণহত্যা’ বিষয়ে কথা বলতে বুধবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রীরা। তবে অনুষ্ঠানের ঠিক আগমুহূর্তে তা স্থগিত করা হয়।
বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (বিএইচআরডব্লিউ) নামে একটি অস্তিত্বহীন সংগঠনের ব্যানারে স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৫টায় এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের কথা ছিল। এর আয়োজক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী যিনি নিজেকে ওই সংগঠনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার মহাসচিব হিসেবে দাবি করেন।
আয়োজকরা জানিয়েছিলেন, সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের ‘গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও মন্ত্রীরা’ গোপালগঞ্জের সাম্প্রতিক ‘সহিংসতা’ এবং দেশের ‘গণহত্যা’র প্রসঙ্গে বক্তব্য দেবেন।
তবে সাংবাদিকরা সম্মেলনস্থলে জড়ো হওয়ার পর সিদ্দিকী এক বিবৃতিতে জানান, ঢাকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের সম্মানে অনুষ্ঠানটি স্থগিত করা হয়েছে। ওই দুর্ঘটনায় ৩৫ জনের বেশি মানুষ, যাদের বেশিরভাগই শিশু, প্রাণ হারান এবং প্রায় ১৭০ জন আহত হন।
জানা গেছে, গত কয়েক দিনে আওয়ামী লীগের একাধিক সাবেক নেতা—যেমন ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, হাসান মাহমুদ, ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল—দিল্লি সফর করেছেন। তাদের কয়েকজনের এই সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা ছিল।
সংবাদ সম্মেলনের আয়োজক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, এই গভীর শোকাবহ পরিস্থিতিতে এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমরা সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করার কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনুষ্ঠানটি পরবর্তী সময়ে নতুন তারিখে অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে দিল্লিতে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, এই সম্মেলন নিয়ে বাংলাদেশ সরকার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনানুষ্ঠানিকভাবে উদ্বেগ জানিয়েছিল।
বিশেষ করে, আগামী ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক বছর পূর্ণ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেশী দেশের মাটিতে এমন একটি বিতর্কিত অনুষ্ঠান প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চলমান প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।
এসএন