জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার এত দ্রুত করা যাবে না: চিফ প্রসিকিউটর

জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার এত দ্রুত করা যাবে না বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেছেন, ‘এই বিচার এত দ্রুততার সঙ্গে করা যাবে না। এটা মোবাইল কোর্টের বিচার না। সেপ্টেম্বরে দায়িত্ব নিয়ে নভেম্বর পর্যন্ত কোর্টের সব কিছু ঠিকঠাক করতে সময় লেগেছে।’

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‘জুলাই গণহত্যার বিচার: আলোচনা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘তদন্ত সংস্থায় যারা কাজ করেন, তারা পুলিশ বাহিনী থেকে আসলেও স্বৈরাচারের দোসর না। তারা বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন ভাবে বঞ্চিত ছিলেন। সেখানে থেকে বেছে বেছে আমাদের তদন্ত সংস্থায় আনতে হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ক্রাইম এগেইস্ট হিউম্যানিটিতে হত্যার প্রমাণের পদ্ধতিটা ভিন্ন। গুলিতে মারা গেছে, মাথার খুলি উড়ে গেছে মৃত্যুর কারণে লেখা হয়েছে করোনায় মারা গেছে। লাশটা বুঝে নেয়ার সময় দেয়নি, দাফন কাজ সম্পন্নের সময় দেয়া হয়নি, জানাজাতে বেশি মানুষ অংশ নিতে দেয়া হয়নি।’

আগামী ৩ আগস্ট প্রথম সাক্ষী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন বলে জানিয়েছেন তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘যে গুলি করেছে সে আসামি না বরং যে গণভবনে বসে নির্দেশ দিয়েছে সে প্রকৃত আসামি।’

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘বিচার করতে গেলে আমাদের আবেগটা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। কারণ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখতে হয় আমাদের। তাড়াহুড়ো করে বিচার করলে আপনারাই হয়তো বলবেন কি করেছেন?’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দুইদিক ভারসাম্য করতে হয়, শহীদ পরিবারের আবেগ, চাওয়া অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড। ডিসেম্বরের মধ্যে কিছু বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।’

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এই বিচারগুলো না হলে পরবর্তী সরকারেও গুম, খুন সংস্কৃতি অব্যাহত হবে। কিন্তু এই বিচারগুলোতে সময় লাগবে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বিচার করা খানিকটা কষ্টসাধ্য, কিন্তু অসম্ভব নয়। যতদিন পর্যন্ত বিচার কার্যক্রম লাগবে চলবে, তবু এই বিচার কোনোভাবেই যেন বন্ধ না হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিচারের ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা আছে। ট্রাইব্যুনালে যারা আছি সবাই বলতে পারবো সৃষ্টিকর্তার কাছে আমরা এক বিন্দু অবহেলা করিনি। বিচারের প্রক্রিয়া নিজস্ব গতিতে চলছে। আমরা অবশ্যই এটিকে সমাপ্ত করবো ইনশাআল্লাহ। এই বিচারের সঠিক পরিণতি আপনারা বাংলাদেশে দেখতে পাবেন। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যারা মানুষকে অপহরণ করে, তারা কোনো গোয়েন্দাবাহিনী তৈরি করবে না।’

এমআর/টিকে 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বড়দিন উপলক্ষে জ্যাকুলিনকে ফের চমকে দিলেন সুকেশ! Dec 24, 2025
img
বিশ্বের সকল খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের বড় দিনের শুভেচ্ছা জানালেন তারেক রহমান Dec 24, 2025
img
পিস্তলসহ স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা গ্রেপ্তার Dec 24, 2025
img
‘সাইয়ারা’র খ্যাতির পর ভয়ঙ্কর চিঠি ও জন্মদিনের শুভেচ্ছায় আহান পাণ্ডে Dec 24, 2025
img
১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বিএনপিতে যোগ দিলেন ড. রেদোয়ান Dec 24, 2025
img
বছরের শেষ, বড়দিনে নিজেকে সাজাতে পারেন সেলিব্রিটি স্টাইলে! Dec 24, 2025
img
গোবিন্দর প্রেমের গুঞ্জন নিয়ে মুখ খুললেন স্ত্রী সুনীতা Dec 24, 2025
img
ঝুঁকিতে ভারতীয় পেসার বুমরাহর শীর্ষস্থান Dec 24, 2025
img
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেকে গুলশান-পল্টনে লাইন দিচ্ছে: হাসনাত Dec 24, 2025
img
আরবাজ খান ও সুরার বিয়ের ২ বছর, নাচের ভিডিওতে মলাইকাকে খোঁচা! Dec 24, 2025
img
ফের রিয়ালিটি শোতে জোজো, বিচারক নন তাহলে কোন ভূমিকায় থাকছেন তিনি? Dec 24, 2025
img
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ভাঙচুর Dec 24, 2025
img
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহাবস্থান টেকসই সমাজের পূর্বশর্ত : ধর্ম উপদেষ্টা Dec 24, 2025
img
সিক্যুয়েল আসার আগেই জাপানে মুক্তি পাচ্ছে ‘অ্যানিমেল’ Dec 24, 2025
img
তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে সফরসঙ্গী হচ্ছেন কারা! Dec 24, 2025
ডি ভিলিয়ার্সের রেকর্ড ভাঙলেন সূর্যবংশী, দ্রুততম ১৫০ রানের কীর্তি Dec 24, 2025
img
ভারতীর দ্বিতীয় সন্তানের সঙ্গে আবেগঘন প্রথম সাক্ষাৎ Dec 24, 2025
img
প্রথম আলো-ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, গ্রেপ্তার ৩১ Dec 24, 2025
img
ব্যাডমিন্টনে চমক, চার বাংলাদেশি জুটি কোয়ার্টার ফাইনালে Dec 24, 2025
img
রিয়াজ সুস্থ আছেন, মৃত্যুর খবরের কোনো ভিত্তি নেই Dec 24, 2025