জুলাই সনদে শেখ হাসিনার নাম না থাকা মেনে নেওয়া যায় না : ইসলামী আন্দোলন মহাসচিব

জুলাই সনদের খসড়ার ব্যাপারে এক প্রতিক্রিয়ায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ বলেছেন, জুলাই সনদের খসড়া পড়ে এটাকে পতিত স্বৈরাচারের প্রতি নমনীয়, আইনি বাধ্যবাধকতাহীন দুর্বল সনদ বলে মনে হয়েছে।

তিনি বলেন, জুলাই সনদে শেখ হাসিনার নাম না থাকা মেনে নেওয়া যায় না। একই সাথে জুলাই সনদে পতিত ফ্যাসিবাদকে গৎবাঁধা শব্দে ব্যক্ত করা হয়েছে। ফলে পতিত ফ্যাসিবাদের নির্মমতা, নৃশংসতা ও বিভীষিকাময় দুঃশাসনের চিত্র খসড়া সনদে নাই।

আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নিয়মিত বৈঠকে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেন, খসড়ায় একবারের জন্যও পতিত ফ্যাসিবাদের মূল হোতা ও অশুভ চক্রের প্রধান শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করা হয় নাই। অথচ পুরো ফ্যাসিবাদ তারই নেতৃত্বে নৃশংসতা চালিয়েছে। সাম্প্রতিক একাধিক প্রমাণিত ফোনালাপে শেখ হাসিনাকে সরাসরি হত্যার নির্দেশ দিতে শোনা গেছে।

তারপরও জুলাই সনদে শেখ হাসিনার নাম না থাকা মেনে নেওয়া যায় না। একই সাথে জুলাই সনদে পতিত ফ্যাসিবাদকে গৎবাঁধা শব্দে ব্যক্ত করা হয়েছে। ফলে পতিত ফ্যাসিবাদের নির্মমতা, নৃশংসতা ও বিভীষিকাময় দুঃশাসনের চিত্র খসড়া সনদে নাই।

মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেন, জুলাই সনদের ক্ষেত্রে প্রধান চাওয়া ছিল, এর আইনী মর্যাদা ও বাধ্যবাধকতা।

কিন্তু খসড়া সনদে এই সম্পর্কে কিছুই বলা হয় নাই। ফলে এই সনদের আদতে কোনো তাৎপর্য আছে বলে মনে হয় না। অঙ্গীকারনামা ৭-এ যথাযোগ্য স্বীকৃতি দেওয়ার অঙ্গিকার করার কথা বলা হয়েছে। এখানে ‌‌‘যথাযোগ্য’ শব্দটি আপেক্ষিক। যে যার মতো করে এর মর্যাদা ও তাৎপর্য নির্ধারণ করবে।

অথচ জুলাইয়ের তাৎপর্য আপেক্ষিক না বরং রক্ত রঞ্জিত বাস্তবতা।

তিনি বলেন, সনদের কোথাও অংশগ্রহণকারীদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আইনি সুরক্ষা রাখা হয় নাই। ফলে অভ্যুত্থানের নায়কদের নিরাপত্তা দীর্ঘমেয়াদে বিপদে পড়ার আশংকা থেকে যাচ্ছে। অংশ নেওয়া শক্তি ও পক্ষের উল্লেখ নাই। মাদরাসা শিক্ষার্থীদের উল্লেখ নাই। ফ্যাসিবাদের দোসরদের সম্পর্কেও সনদের খসড়া নিশ্চুপ। এর ফলে স্বৈরাচারের দোসরদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন সহজ হবে।

ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ যে দেড় দশক স্বৈরতন্ত্রের যাতাকলে পিষ্ট হলো তার প্রধান দায় ভারতের। অথচ জুলাই সনদে ভারত নিয়ে রহস্যজনক নিরবতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সামগ্রিকভাবে খসড়া সনদ খুবই দুর্বল প্রকৃতির হয়েছে। এবং আইনি বাধ্যবাধকতাসহ অপরিহার্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ পড়েছে। একই সাথে পতিত স্বৈরাচারের অপকর্মের চিত্রায়নে ব্যর্থতা ফুটে উঠেছে।

সাপ্তাহিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ১৮তম, শীর্ষে কিনশাসা Jul 30, 2025
img
রাশিয়ায় ৮.৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প, ২ দেশে সতর্কতা জারি Jul 30, 2025
img
দেশের ৭ অঞ্চলে দুপুরের মধ্যে ঝড়ের আভাস Jul 30, 2025
img
না ফেরার দেশে মিষ্টি জান্নাতের বাবা Jul 30, 2025
img
৩০ জুলাই: বিশ্বব্যাপী ইতিহাসে এই দিনে কী ঘটেছিল? Jul 30, 2025
img
দুর্গাপূজার আগে পদ্মার ইলিশের অপেক্ষায় কলকাতার ব্যবসায়ীরা Jul 30, 2025
img
তারুণ্যের নেতৃত্ব জাতিসংঘের যুববিষয়ক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 30, 2025
img
ফিলিস্তিনকে সেপ্টেম্বরে স্বীকৃতি দেবে ইউরোপের আরও একটি দেশ Jul 30, 2025
img
জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও জরুরি সংস্কার চায় বিএনপি : মির্জা ফখরুল Jul 30, 2025
img
৩৭ বছর পর বাংলাদেশের দুই সাঁতারুর ইংলিশ চ্যানেল জয় Jul 30, 2025
img
চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে গণমাধ্যম সম্পর্ক শক্তিশালী করতে চুক্তি স্বাক্ষর Jul 30, 2025
img
মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে নেতানিয়াহুর সঙ্গে পুতিনের ফোনালাপ Jul 30, 2025
img
ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল একজনের, হাসপাতালে ভর্তি ৩৯৩ Jul 30, 2025
img
আবারও মিরপুরেই থাকছেন গামিনী Jul 30, 2025
img
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় বরখাস্ত Jul 30, 2025
img
নারায়ণগঞ্জের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে Jul 30, 2025
img
চাঁদপুরে বিএনপিসহ যুবদলের ৪ নেতা বহিষ্কার Jul 30, 2025
img
জানা গেল রোনালদো-বেকহ্যামদের জার্সি নিষেধাজ্ঞার পেছনের কারণ Jul 30, 2025
img
চারটে পুরুষের সঙ্গে দাঁড়িয়ে অন্তর্বাসের বিজ্ঞাপন করতে পারব না : স্মৃতি Jul 30, 2025
img
ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির কাউন্সিলে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই নেতা বহিষ্কার Jul 30, 2025