জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে র্যাংকিং পদ্ধতি নিয়ে জামায়াতসহ এক-চতুর্থাংশ দল একমত। আর বিএনপিসহ কয়েকটি দল দ্বিমত পোষণ করেছে।’
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২১তম দিনের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিষয়ে কমিশন প্রথম দফায় পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটির কথা বলেছে—যেখানে সদস্য হিসেবে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার এবং অন্যান্য বিরোধী দল থেকে একজন করে। তাতে একমত না হলে এই পাঁচজনের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আরো দুই বিচারপতিকে যুক্ত করা হবে। তারা শুধু গোপন ভোট দেবেন। কিন্তু নাম প্রস্তাব করতে পারবেন না।’
তিনি বলেন, ‘এতেও একমত না হলে র্যাংকিং পদ্ধতিতে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে বাছাই করা হবে। তবে এ প্রস্তাবে এক-চতুর্থাংশ দল একমত। আর বিএনপিসহ কয়েকটি দল দ্বিমত জানিয়েছে। তারা এ বিষয়টি জাতীয় সংসদে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে চান।’ সেখানেও সম্ভব না হলে ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুসরণ করতে চান। তবে সেখানেও সর্বশেষ অপশন হিসেবে রাষ্ট্রপতিকে চান না। তারা হয়তো পয়েন্ট অব নো ডিসেন্টও দিতে পারেন। তবে আমরা আরো আলোচনার পক্ষে। আশা করি, আগামী দুই দিনের মধ্যে সমাধানে আসতে পারব।’
আলী রীয়াজ বলেন, ‘সাংবিধানিক বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান মহাহিসাব নিরীক্ষক, দুদক, পিএসসি ও ন্যায়পাল গঠনে সাংবিধানিক পদ্ধতি চায় জামায়াসহ অধিকাংশ দল। আর বিএনপিসহ কয়েকটি দল এ ক্ষেত্রে নির্বাহী আইনের পক্ষে। নারী আসনের বিষয়ে আমরা বলেছি—এক-তৃতীয়াংশ আসনে সরাসরি মনোনয়ন দিতে। এটি নিয়ে একটি অগ্রগতি আছে। আশা করি, এ নিয়ে একটি অগ্রগতি হবে।’
জাতীয় সনদের খসড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বুধবারের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সংশোধনী দেবে। এরপর একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছা যাবে।’ আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদের একটি রূপ পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, এলডিপি, গণ অধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
ইউটি/টিএ