দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক) মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পরে হঠাৎ একটি বাহিনীর আর্বিভাব ঘটলো, আমরা সেটিকে বলতাম সিক্সিটিন ডিভিশান।
এবারও আপনাদের সামনে আরেকটি নতুন সংকট—ভুয়া সমন্বয়ক। এটাকে বলা হয় ফিফথ অগাস্ট ডিভিশান। এটাও সামাল দিতে হচ্ছে। আমার অফিসেও এমন ভুয়া সমন্বয়ক পেয়েছি।
তিনি বলেন, ভুয়া সমন্বয়ক বা প্রকৃত সমন্বয়ক—কাউকেই অবৈধভাব সুযোগ দেওয়ার কোনো কারণ নেই। এটা যদি আপনারা প্রতিরোধ করা এখনি শুরু করেন তাহলে আগামী দিনে অনেক সংকট থেকে মুক্ত থাকবেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বরিশালে দুদকের ভবন নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন শেষে বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এসব কথা বলেন তিনি। বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দুদক মহাপরিচালক বলেন, আমার অফিসে একজন কথিত সমন্বয়ক আসতো। তাকে অন্য একটি জেলাতে গ্রেপ্তার করিয়েছি। আরেকজন আমার অফিসে এসে কথা বলেছে। তাকে আমি বলেছি, দ্বিতীয়বার আমার অফিসে দেখলে গ্রেপ্তার করা হবে। আমাদের এমন অনেক ধরনের সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
তিনি বলেন, এরকম ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে ঘটেনি—প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে যাবেন, বায়তুল মোকাররমের খতিব পালিয়ে যাবেন, প্রধান বিচারপতি পালিয়ে যাবেন, বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের প্রধানরা পালিয়ে যাবেন। সার্বিকভাবে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অবক্ষয় এমন একটা পর্যায়ে গেছে, আমরা এমনভাবে সেগুলো করতে দিয়েছি শেষ পর্যন্ত সামলে নেওয়াটা কঠিন হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক বলেন, আমরা অনেক সময়ে বলে থাকি প্রশাসনকে রাজনীতিকিকরণ করা হয়েছে। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখি এটা উলটো। আমরাই (সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী) রাজনীতিবিদের কাছে যাই—গিয়ে রাজনীতিবিদকে বলি স্যার আমরা আপনার সেবাদাস। আমি কখনো বেগম খালেদা জিয়া কিংবা শেখ হাসিনাকে বলতে শুনিনি যে বলেছেন (সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী) আমাদের দলে যোগদান করো। তাদের সঙ্গে গেলে তারা খুশি হন। কিন্তু যোগদান করার জন্য কিংবা খুব নগ্নভাবে দলীয় আনুগত্যে চলে যাওয়ার জন্য তারা নিশ্চয়ই বলেননি।
সেক্ষেত্রে আমরা যদি এবার একটা স্ট্যান্ড নিতে পারি তাহলেই কিন্তু আমরা পরিবর্তন আনতে পারি। পরিবর্তনটা আনা আমাদের পক্ষে সম্ভব।আমার মনে হচ্ছে অর্ন্তবর্তীকালীন সময়ে আমরা সুবর্ণ সুযোগ পাচ্ছি।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আহসান হাবিবের সভাপতিত্বে মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ, স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এমআর/টিএ