রাশিয়ার ওপর নতুন করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় কাজ না-ও হতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরও তিনি নিষেধাজ্ঞা দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই রাশিয়ার ওপর দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও এসব নিষেধাজ্ঞা রুশ অর্থনীতিতে কতটুকু প্রভাব ফেলে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করেন ট্রাম্প। কিন্তু যুদ্ধের অবসান দূরে থাক, রাশিয়াকে এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতিতেও সম্মত করাতে পারেননি তিনি।
সেই ক্ষোভ থেকে রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতির জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বলেছেন, ৮ আগস্টের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হলেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেবেন তিনি।
যুদ্ধবিরতির জন্য সময় বেঁধে দিয়ে ট্রাম্পের হুমকির পর হামলা আরও জোরদার করেছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহর লক্ষ্য করে বড় ধরনের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ বাহিনী।
রাতভর চালানো ওই হামলায় ছয় বছর বয়সি এক শিশুসহ ১২ জন নিহত হয় এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়। এছাড়া কিয়েভের পশ্চিমাঞ্চলে একটি নয়তলা আবাসিক ভবনের অংশ ধসে পড়ে।
এদিকে ক্রেমলিন জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলে একটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি দখল করেছে। সামরিক ঘাঁটির পতনের পর একজন সামরিক বিশ্লেষক বলেছেন, রাশিয়া সম্ভবত এখন পূর্ব ইউক্রেনের দিকে আরও এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে।
রাশিয়ার ওই হামলার পর কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ট্রাম্প। ওই হামলাকে ‘বিরক্তিকর’ অভিহিত করে তিনি আবারও নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন। ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি শিগগিরই তার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে রাশিয়া পাঠাবেন।
যদিও এসব নিষেধাজ্ঞায় কাজ হবে কি না তা নিজেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। পুতিনের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আমরা নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছি। আমি জানি না, এই নিষেধাজ্ঞা তিনি আদৌ পরোয়া করেন কি না।’
তিনি আরও বলেন, 'তারা [রাশিয়া] নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে জানে। নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক এসব বিষয়ে আমি যেকোনো মানুষের চেয়ে ভালো জানি। এটা কোনো প্রভাব ফেলবে কি না জানি না। তবে আমরা এটা করব।'
রাশিয়ার ওপর এবারের নিষেধাজ্ঞায় শুল্কারোপের বিষয়টি বিষয়টি রাখতে পারেন ট্রাম্প। যেমনটা তিনি আগেই উল্লেখ করেছেন, নতুন পদক্ষেপ হতে পারে ‘দ্বিতীয় পর্যায়ের শুল্ক’ যেখানে চীন ও ভারতের মতো রাশিয়ার বাণিজ্য অংশীদারদেরকে টার্গেট করা হতে পারে।
ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে আগামী ৮ আগস্টের মধ্যে সমাধানে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। যেমন-রাশিয়ার ওপর ১০০ শতাংশ শুল্কারোপ এবং দেশটির বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হতে পারে।
এই পদক্ষেপে রাশিয়াকে দমন করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও আন্তর্জাতিক অর্থনীতিকেও উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি তৈরি করবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এরই মধ্যে এমন পদক্ষেপ শুরু করেছেন। ইরান থেকে জ্বালানি কেনায় ছয় ভারতীয় কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
কেএন/টিকে