১৫ বছর ছিল শুধু আগস্ট আগস্ট, এখন শুধু জুলাই জুলাই : মাসুদ কামাল

‘১৫ বছর ছিল শুধু আগস্ট, আগস্ট। আর এখন শুধু জুলাই, জুলাই।’ ‘সব কিছু করা হচ্ছে একটা বিষয়কে সামনে রেখে। সেটা হলো, এই সরকারের মেয়াদ আরো বেশি করা।


শনিবার (২ আগস্ট) ইউটিউবের ‘দর্শকের কথা’ অনুষ্ঠানে একটি কমেন্টের বিশ্লেষণে এসব কথা বলেন সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল।

গতকাল রাতে ‘জুলাই নিয়ে নতুন বিতর্ক, কী চান নাহিদ ইসলাম?’ নামে একটি কনটেন্ট আপ করেছিলাম। এই ছিল কনটেন্টের টাইটেল। এর থাম্বনেলে লেখা ছিল, ‘মির্জা ফখরুল, সাদিক কায়েম, নাহিদ ইসলাম, কে মিথ্যা বলছেন? আরেকটা ছিল, ‘দাবি করলেই দাবিদার হওয়া যায় না’।

এই কনটেন্টের ওপর যে কমেন্টগুলো আছে তা পড়া হবে।

তিনি বলেন, দেখুন, তিনজন লোক তিন ধরনের কথা বলছেন। তিনটাই তো সত্য হতে পারে না। তিনটা যদি সত্য না হয়, তাহলে যেকোনো দুজন মিথ্যা বলছেন ও একজন সত্য বলছেন।

কে সেই সত্যবাদী? আমি জানি না। কিন্তু দুজন যে মিথ্যাবাদী নিশ্চিত। কিন্তু এই দুজনের কাউকে তো আপনি ইগনোর করতে পারবেন না। এরাই তো আমাদের নেতা। এই নেতারা আমাদের মাথার ওপর আছেন।

এটা আমাদের জাতির জন্য একটা ভয়াবহ তথ্য। এ নিয়ে আলোচনা না করি।

প্রথম কমেন্ট লিখেছেন ডক্স সুলতান। তিনি লিখেছেন, জুলাইয়ের যন্ত্রণায় বর্তমান বাংলাদেশের মানুষ অস্বস্তিতে আছে। দেখুন, জুলাই আন্দোলন কিন্তু আমাদের জাতির একটা বড় অর্জন। একটা বড় গর্ব করার বিষয়। কিন্তু সেই গর্ব করার বিষয়টা নিয়ে এত লেবু চেপা হয়েছে যে এখন তেতো হয়ে গেছে। হয়তো সে জন্যই সুলতান সাহেব মন্তব্য করেছেন, জুলাইয়ের যন্ত্রণায়। এই যে জুলাইকে একভাবে বিশেষায়িত করা, এটাই আমি মনে করি আমাদের জন্য সবচেয়ে বেদনার।

পরের মন্তব্যটা করেছেন শিমন বিডি। তিনি লিখেছেন, আপনার কথা ১০০ শতাংশ সঠিক। এটা সাধারণ জনগণের আন্দোলন। আমি বলেছিলাম, এটা একক কোনো একটা শ্রেণির বা গোষ্ঠীর আন্দোলন ছিল না। গত বছরের জুলাই গণ-আন্দোলন ছিল। আসলে দেশের সাধারণ জনগণের উনি আমার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।

শেখ শিরিন লিখেছেন, একদম সত্য কথা বলেছেন। এনসিপির সবার আপনার অনুষ্ঠান দেখা উচিত। তাহলে তারা বাস্তবতায় ফিরে আসবে। লজ্জায় তখন এত কথা বলবে না।

জাহাঙ্গীর আলম লিখেছেন, স্যার, জুলাই নিয়ে কি একটু বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে না? দেশের কত সমস্যা? ব্যবসা-বাণিজ্য এত খারাপ। আমরা যারা ছোট ব্যবসায় আছি, আমরা খুব খারাপ অবস্থায় আছি। এসব নিয়ে কারো চিন্তা নাই।

দেখুন, এই যে জাহাঙ্গীর আলম সাহেব কথাটা বলেছেন, এই কথাটা যখন রাষ্ট্র গুরুত্ব দেবে, সরকার গুরুত্ব দেবে, আমি মনে করি, তখনই একটা সরকার কিন্তু জনগণের সরকার হয়ে উঠতে পারবে। ছোট ছোট ব্যবসায়ীর কথা কেউ জানে না, কেউ শোনে না, কেউ গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু তারাই কিন্তু আমাদের দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। বড় বড় ব্যবসায়ীর কণ্ঠস্বর শোনা যায়। বড় বড় ব্যবসায়ীরা চাইলে যেকোনো সময় উপদেষ্টা বা মন্ত্রীর অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে পারে। ছোট ব্যবসায়ীরা পারে না। ছোট ব্যবসায়ীদের এই কথাগুলি হলো আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের কথা।

এর পরের কমেন্টে লিখেছেন, মোহাম্মদ সুজন আকন্দ। তিনি লিখেছেন, ২০ কোটি জনগণের ওপর দায়ভার চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে আমি মনে করি। সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনগণের ওপর ভোট প্রদানের দায়িত্ব দেওয়া হোক। জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত করবে। দেশ ও জাতির স্বার্থে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব প্রদান করবেন বলে আমি সাধারণ জনগণ হিসেবে মনে করি।

বিশেষ সুজন আকন্দ। আমিও আপনার সঙ্গে কিন্তু একমত। আমিও এটাই বলি যে এত আলোচনা, এত বিচার-বিশ্লেষণ, এত সিদ্ধান্ত যা কিছুই করেন আসলে কিন্তু জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে। জনগণই ঠিক করবে যে তারা কোন সংস্কারটা চায়। জনগণই ঠিক করবে। এই সংস্কারটা কে বাস্তবায়ন করবে। জনগণই ঠিক করবে যে সরকার কে চালাবে। কাজেই আপনি একা বিরাট বুদ্ধিমান সব ঠিক করে দিলেন, এটা আসলে আমি মনে করি। একদিকে বাস্তবসম্মত নয়, অপরদিকে জনগণের যে ক্ষমতা এবং জনগণের যে বিচার করার ক্ষমতা, তাকে অপমান করা হয়।

প্রতিজ্ঞা মিডিয়া লিখেছে, ১৫ বছর ছিল শুধু আগস্ট, আগস্ট। আর এখন শুধু জুলাই, জুলাই।

জার্মান পোকা নামে এক ছদ্মনামধারী তিনি লিখেছেন, একটা সময় আসবে, এই ক্রেডিট নিতে কেউ চাইবে না। লজ্জায়, ভয়ে। এটা বাংলাদেশ। বছরে ছয় ঋতু। সব কিছু সময়ের সাথে বদলে যায়।

ইলাহী মানিক লিখেছেন, সব কিছু করা হচ্ছে একটা বিষয়কে সামনে রেখে। সেটা হলো, এই সরকারের মেয়াদ আরো বেশি করা। মেয়াদ বাড়ানো। আরো বেশিদিন থাকার জন্য।

মামুন সুর লিখেছেন, জুলাই বিপ্লবের ক্রেডিট দাবিদারদের অনাবশ্যক বিতর্ক জুলাই বিপ্লবের ঐতিহাসিক গুরুত্বকে খর্ব করছে। আপনার জুলাই আন্দোলনের বিশ্লেষণ সুস্পষ্ট।

জব্বার খান লিখেছেন, আপনাদেরও দেশের এই অবনতির জন্য দায় নিতে হবে। জব্বার খান, আপনার বক্তব্য অবশ্যই একদম উড়িয়ে দেওয়ার মতো না। এটা কিছু অভিমান মিশ্রিত একটা বক্তব্য। সবাইকে দায় নিতে হবে। দেশে যদি উন্নতি হয় এর দায়ও সবাইকে নিতে হবে। তখন দায়টা আবার হবে পজিটিভ অর্থে। আর যদি অবনতি হয়, তাহার দায়ও নিতে হবে সবাইকে। কাজেই আমরা সবাই দায়ী এবং এ জন্যই আমরা কিন্তু উদ্বিগ্ন বটে। আমরা কিভাবে ঠিক পথে আসতে পারি, সেই চিন্তাটা কিন্তু আমাদের সবাইকে মিলেই করতে হবে।

মোহম্মদ ফারুক আহমেদ লিখেছেন, ৩৬ দিনের জুলাই নিয়ে যদি এরা ব্যবসা করতে পারে তাহলে ৯ মাসের যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা নিয়ে ব্যবসা করতে সমস্যা কোথায়? না আসলে কোনো অর্জন নিয়েই ব্যবসা করা উচিত না। এরা ব্যবসা করতে পারলে আপনি ব্যবসা করবেন। অথবা এই ঘটনায় কিনে ব্যবসা করতে পারলে ওটাকে ব্যবসা করা যাবে। এভাবে দেখা মনে হয় উচিত না। জাতির এ ধরনের বিশাল অর্জন সেটা আসলে ব্যবসার বিষয় না। যারাই ব্যবসা করুক, তারাই ভুল করছে। তারাই অন্যায় করছে।

নাজিয়া বেগম লিখেছেন, কে সত্যি বলেছে জানি না। তবে সততার ক্ষেত্রে জামায়াত-শিবির অপেক্ষাকৃত নিরাপদ। কী বলেন? না, ভাই। আমি কিছুই বলি না। আপনি বলেছেন, এটা শুনলাম।

শাকিল তুষার লিখেছেন, নিরপেক্ষ থাকা খুব কঠিন। তবে প্রতিকূল পরিবেশে সত্য বলা, যুদ্ধ করা আরো কঠিন। মাসুদ কামালের এই প্রচেষ্টা চোখে পড়ার মতো। ভালো থাকবেন। মিস্টার তুষার আপনিও ভালো থাকবেন।

এমআর/টিকে 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ইউনেস্কোর সভাপতির দায়িত্ব পালন শুরু করল বাংলাদেশ Oct 30, 2025
img
তোমার স্বামী খুব কঠোর, কেভিন পিটারসেনের স্ত্রীকে বললেন লোকেশ রাহুল Oct 30, 2025
img
‘শাপলা কলি’ নয়, ‘শাপলা’ই চায় এনসিপি Oct 30, 2025
img
১৬ নভেম্বর পোস্টাল ব্যালটে ভোটের অ্যাপ উদ্বোধন : ইসি সচিব Oct 30, 2025
img

জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা

বিজয়ী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা বিনিময় Oct 30, 2025
img
সন্তানকে মত প্রকাশের সুযোগ দিন : হাসনাত আব্দুল্লাহ Oct 30, 2025
img
মোজাম্মেল হকের আয়কর নথি জব্দের অনুমতি পেয়েছে দুদক। Oct 30, 2025
img
ডাকসু নেতাদের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ Oct 30, 2025
img
ঐক্য কমিশনের প্রতিবেদনে অনৈক্যের সুর : শামা ওবায়েদ Oct 30, 2025
img
বিশ্ববাজারে ফের বেড়েছে সোনার দাম Oct 30, 2025
img
কাবুলের সার্বভৌমত্ব-অখণ্ডতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত Oct 30, 2025
img
ফুটবলার নিবন্ধনে ফিফার নিষেধাজ্ঞা পেল মোহামেডান Oct 30, 2025
img
যারা ফেব্রুয়ারির নির্বাচন চায় না, তারা জনগণের বিরোধী শক্তি : এম এ মালিক Oct 30, 2025
img

নারী বিশ্বকাপ ২০২৫

ভারতের সাবেক ও বর্তমান অধিনায়কের রেকর্ড ভাঙলেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার Oct 30, 2025
img
চসিক সিইও অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ, ১৫ দিনের আলটিমেটাম Oct 30, 2025
img
যারা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়, তারা গণভোট চায় না : মাসুদ Oct 30, 2025
img
সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বাড়াতে হবে : এ্যানি Oct 30, 2025
img
ঐকমত্যে ব‍্যর্থ হলে ভয়ানক পরিস্থিতির ঝুঁকি দেখছে এবি পার্টি Oct 30, 2025
img
সচিবালয়ে তিন স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে সরকার Oct 30, 2025
img
আজ রাতেই গণভোটের তারিখ ঘোষণা করুন : আব্দুল্লাহ তাহের Oct 30, 2025