হামাস নিরস্ত্রের প্রস্তাবে সায় নেই তুরস্কের

সম্প্রতি জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত ফিলিস্তিন বিষয়ক এক সম্মেলনে তুরস্ক ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নিরস্ত্র করার প্রস্তাব সমর্থন করেছে— এমন দাবি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটি।

দেশটি বলছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত হামাসকে নিরস্ত্র করার পক্ষে নয় তারা। শনিবার (২ আগস্ট) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ২৮ থেকে ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনের নাম ছিল “ফিলিস্তিন প্রশ্নের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং দুই-রাষ্ট্র ভিত্তিক পথ বাস্তবায়ন বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন”। এটি যৌথভাবে আয়োজন করে সৌদি আরব ও ফ্রান্স।

সম্মেলনের চূড়ান্ত ঘোষণার ১১ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, হামাস যেন গাজা শাসনের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্যোগের আওতায় নিজেদের অস্ত্র ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে। অনেকে এটিকে হামাসকে নিরস্ত্র করার আহ্বান বলে ব্যাখ্যা করেন।

তবে তুরস্ক জানায়, তাদের হস্তক্ষেপের পর মূল দলিল ও সংযুক্তিতে ‘নিরস্ত্রীকরণ’ শব্দটি সরিয়ে ফেলা হয়। বরং অস্ত্র হস্তান্তরের বিষয়টি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক লক্ষ্যসংশ্লিষ্ট করে পুনর্গঠন করা হয়।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের রেকর্ড বিবেচনায় তুরস্ক মনে করে, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর যেকোনো নিরস্ত্রীকরণ অবশ্যই স্বাধীন, একক এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে হবে। অথবা আন্তঃফিলিস্তিনি ঐক্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্জিত কোনো চুক্তির আওতায় হতে হবে।”

তারা আরও জানায়, আন্তর্জাতিক ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে এবার আনুষ্ঠানিক আপত্তি তোলা হয়নি, তবে ভবিষ্যতে যেন তাদের উদ্বেগ বিবেচনায় নেওয়া হয় সেই আশা করা হচ্ছে। তুরস্ক এটাও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, তারা হামাসকে বিনাশর্তে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির আহ্বান জানায়নি।

তারা বলেছে, সম্মেলনের ৮ নম্বর অনুচ্ছেদটিকে যুদ্ধবিরতির সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে দেখতে হবে। সেখানে মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি চুক্তির পক্ষে সমর্থন জানানো হয়েছে, যাতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, সকল জিম্মি মুক্তি, ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময়, মরদেহ হস্তান্তর এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনের লক্ষ্য ছিল, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের দুই-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের জন্য একটি সময়সীমাবদ্ধ ও বাস্তব রোডম্যাপ তৈরি করা।

এতে জাতিসংঘের ১২২টি সদস্য দেশ এবং ছয়টি আন্তর্জাতিক সংস্থা অংশ নেয়। সম্মেলনের সহ-সভাপতি ছিলেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান ও ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাঁ-নোয়েল বারো। ফিলিস্তিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তাফা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারসেন আগাবেকিয়ান।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও সাধারণ পরিষদের সভাপতি ফিলেমন ইয়াংও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

এফপি/ টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

মাইনাস-টু প্রজেক্টে তৎপর ডিপ স্টেট- দাবি মাসুদ কামালের Dec 01, 2025
বেগম জিয়ার স্মরণে—সাবেক বিএনপি নেতার আবেগঘন বার্তা Dec 01, 2025
দুর্নীতি মামলার আগেই রাষ্ট্রপতির ক্ষমা চাইলেন নেতানিয়াহু Dec 01, 2025
প্লেয়ার ড্রাফটে হতাশ নোয়াখালীবাসী, তবু ‘নোয়াখালী এক্সপ্রেস’-এ প্রত্যাশা অটুট Dec 01, 2025
দুর্নীতির অভিযোগে ফিলিপাইনে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ Dec 01, 2025
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে ফার্সিকাল ইলেকশন হবে: জিল্লুর রহমান Dec 01, 2025
শেখ হাসিনাকে ফেরত না দিলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে, জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা Dec 01, 2025
img
হাসি আর ব্যথার সমন্বয় ব্যাখ্যা করলেন নীলাঞ্জনা Dec 01, 2025
নাটকীয়তার পর দল পেলেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ সর্বোচ্চ দাম মোহাম্মদ নাঈমের Dec 01, 2025
আমার কাছে সাকিব বিশ্বের নাম্বার ওয়ান , শান্ত-মিরাজদের ভালো লাগে: শ্রাবণ্য তৌহিদা Dec 01, 2025
সিলেটকে চ্যাম্পিয়ন করতে চাই: মিরাজ Dec 01, 2025
১৬টি ছক্কা হাঁকিয়ে ছক্কার নতুন রেকর্ডে অভিষেক Dec 01, 2025
img
৩ ম্যাচ পর জয় পেল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং লিভারপুল Dec 01, 2025
img
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি Dec 01, 2025
img
তাদের সম্মানে নিয়মও বদলেছে Dec 01, 2025
img
প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে ফিলিপিন্সে বিক্ষোভ Dec 01, 2025
img
সম্পর্ক নিয়ে সমাজের ধ্যানধারণায় প্রশ্ন তুললেন শুভশ্রী Dec 01, 2025
img
২০২৭ বিশ্বকাপে রোহিত-কোহলির থাকা নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিল ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট Dec 01, 2025
img
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য কৌশলগত অধ্যায় আখাউড়া যুদ্ধ : আইএসপিআর Dec 01, 2025
img
চীনের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের যুবাদের Dec 01, 2025