নয়াদিল্লি পুলিশের এক চিঠিতে বাংলা ভাষাকে 'বাংলাদেশি ভাষা' বলে উল্লেখ করায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, এটি শুধু অপমানজনক নয়, বরং ভারতীয় সংবিধান ও বাঙালি জাতির মর্যাদার পরিপন্থি।
সম্প্রতি দিল্লির লোধি কলোনি থানার এক তদন্ত কর্মকর্তা আটজন সন্দেহভাজন বাংলাদেশি নাগরিকের বিষয়ে ‘বাংলাদেশি ভাষায় লেখা’ নথিপত্র অনুবাদের অনুরোধ জানিয়ে বঙ্গভবনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে একটি চিঠি পাঠান। সেই চিঠির বিষয় শিরোনাম ছিল— ‘বাংলাদেশি ভাষায় লেখা তথ্যের অনুবাদ সংক্রান্ত’। ওই চিঠিতে বাংলাকে ‘বাংলাদেশি জাতীয় ভাষা’ বলে উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেস তীব্র প্রতিবাদ জানায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, বাংলা আমাদের মাতৃভাষা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দ, বঙ্কিমচন্দ্রের ভাষা, আমাদের জাতীয় সংগীত আর জাতীয় গান এই ভাষাতেই লেখা। এই ভাষাকে বাংলাদেশি ভাষা বলা সংবিধানবিরোধী ও ঘৃণ্য।
তিনি আরও বলেন, এটি শুধু বাঙালিদের অপমান নয়, বরং একটি জাতিসত্তার অসম্মান। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত এই বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং এই ধরনের বিভ্রান্তিকর শব্দচয়ন থেকে বিরত থাকা।
তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যান্য নেতাও একই ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দলীয় সংসদ সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কড়া বক্তব্য রাখেন। তবে কেন্দ্রীয় সরকার এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি।
এদিকে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের সংসদ সদস্য সুকান্ত মজুমদার বলেন, আমি চিঠিটি দেখিনি, মন্তব্য করতে পারছি না। তবে যারা আটক হয়েছেন তারা যদি বাংলাদেশি হন, তাহলে সেই প্রেক্ষাপটে ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলা হয়েছে কিনা, তা দেখা দরকার।
সূত্র : ডেকান ক্রনিকল
এমআর/টিকে