আগামী ২৬ আগস্টের মধ্যে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারির আল্টিমেটাম দিয়েছেন রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে আরও দুই দফা দাবিও জানিয়েছেন তারা।
বুধবার (৬ আগস্ট) বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালনের পর সংবাদ সম্মেলনে এসব ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান আন্দোলন-সংগ্রামের পর প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির বাস্তবায়ন কার্যক্রম এখন শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। শিক্ষার্থীদের লাগাতার দাবির মুখে গত সোমবার সরকার প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা তুলে ধরে। দীর্ঘদিনের নীরবতা ভেঙে সরকারের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা একে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলায় একটি ‘মাইলফলক’ বলে উল্লেখ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে প্রথমবারের মতো ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চলতি আগস্ট মাসের মধ্যেই ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের কথা রয়েছে। এই প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে কার্যত যাত্রা শুরু করেছে নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়। এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সরকারের নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সরাসরি দায়িত্ব পালন করছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এজন্য ইউজিসিকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের নেতৃত্ব ও নির্দেশনায়ই এই স্বপ্ন বাস্তবতার দোরগোড়ায় পৌঁছেছে।
তিনি আরও বলেন, গত সোমবার সরকারের ব্রিফিংয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলোর মধ্যে অধ্যাদেশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ ও লোগো নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট বক্তব্য আসেনি। শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, সরকার কৌশলে এসব স্পর্শকাতর বিষয়ের কথা এড়িয়ে গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে অধ্যাদেশ জারি করা হতে পারে। তবে শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, বিষয়টি আবারও কালক্ষেপণের দিকে যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, পূর্বের একাধিক আল্টিমেটাম সত্ত্বেও সরকার অধ্যাদেশ নিয়ে গঠনমূলক কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এতে করে ‘ইচ্ছাকৃত দেরির’ আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন আন্দোলনকারীরা।
এমন অবস্থায় পূর্বঘোষিত আল্টিমেটাম অনুযায়ী আজ শিক্ষার্থীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আব্দুর রহমান বলেন, আগামী ২৬ আগস্টের মধ্যে অধ্যাদেশ জারি না হলে আন্দোলনের মাত্রা আরও বাড়ানো হবে। এছাড়া কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি উত্থাপন করেছে। দাবিগুলো হলো—
১. ২৬ আগস্টের মধ্যে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ/আইন জারি করতে হবে এবং অধ্যাদেশ প্রণয়নে একটি ডেডিকেটেড সরকারি কমিটি গঠন করতে হবে।
২. অধ্যাদেশ জারির পর ভিসি, প্রক্টরসহ পূর্ণাঙ্গ প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করে ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
৩. বর্তমানে সাত কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অফিসিয়ালি ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধীনে স্থানান্তর করতে হবে এবং তাদের নতুন পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে।
তবে দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের ধারাবাহিকতা চলবে বলেও জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।
এসএন