আদালতে দাঁড়িয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন দীপু মনির অন্যায় আবদার রাখতে বাধ্য করতেন তাকে।
রোববার (০৭ আগস্ট) দুদকের করা মামলায় গ্রেফতারের পর আদালতে তোলা হলে ওই সময় নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ এসব কথা জানান।
তবে শুনানি শেষে বেরোবির উন্নয়ন কাজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় প্রতিষ্ঠাটির সাবেক উপাচার্য (ভিসি) নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এর আগে বেরোবি সাবেক উপাচার্য এ কে এম নুরু-উন-নবী, নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহসহ ৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
এদিন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন ইসলাম নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন।
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া অন্যরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদার মো. আ. সালাম বাচ্চু এবং এম এম, হাবিবুর রহমান।
বেরোবির সাবেক ভিসি ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। দুদকের মামলায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা এবং জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারের চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক এ ভিসি এবং আরও চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। মামলার এজাহারে অভিযোগ, তারা পরস্পর যোগসাজশে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের ডিপিপি উপেক্ষা করে সরকারি নিয়মাবলী লঙ্ঘন করেছেন।
দুদক অভিযোগে জানায়, এই পাঁচ আসামি মোট ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এর মধ্যে ছিল ৩০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের চুক্তি সম্পাদন, নকশা পরিবর্তন, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কাজ চালানো এবং নিরাপত্তা জামানত হিসেবে রাখা অর্থ এফডিআর হিসেবে ব্যাংকে জমা করা।
দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, এই মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এ কে এম নূর-উন-নবী, সাবেক উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদার মো. আবদুস সালাম বাচ্চু এবং এম এম হাবিবুর রহমানসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, তারা অগ্রিম অর্থ প্রদান না করেই ঠিকাদারকে আর্থিক সহযোগিতার নামে ব্যাংক গ্যারান্টি গ্রহণ করে অগ্রিম বিল প্রদান করেছিলেন। এর পর, তাদের চুক্তি অনুযায়ী খরচের জন্যে প্রয়োজনীয় সব নথি উপেক্ষা করে খরচ অনুমোদন করেছেন। এছাড়া, দ্বিতীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ এবং পিপিআর-২০০৮ অনুযায়ী দরপত্র মূল্যায়ন না করার মতো অভিযোগও উঠেছে।
এমকে/টিএ