মানবিক সাহায্য নিতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন ‘ফিলিস্তিনি পেলে’খ্যাত সুলেইমান আল ওবেইদ। এই ঘটনায় তার ‘বিদায়’ উল্লেখ করে একটি বার্তা দিয়েছে ইউরোপীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা উয়েফা। যা নতুন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। উয়েফার দিকে প্রশ্ন তুলেছেন লিভারপুলের মিশরীয় তারকা মোহামেদ সালাহ–ও।
ফিলিস্তিন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (পিএএফ) জানিয়েছে, ‘গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে মানবিক সাহায্যের জন্য অপেক্ষমাণ মানুষের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় ও বিচ সার্ভিসেস দলের তারকা সুলেইমান আল ওবেইদ শহীদ হয়েছেন। তিনি ফিলিস্তিন ফুটবলে “দ্য ব্লাক পার্ল (কালো মুক্তা)”, “দ্য গ্যাজেল (হরিণ)”, “হেনরি অব প্যালেস্টাইন” এবং “পেলে অব প্যালেস্টাইন ফুটবল” নামে পরিচিত ছিলেন।
ফিলিস্তিন ফুটবলের এই পেলে পাঁচ সন্তান রেখে মারা গেছেন।’
৪১ বছর বয়সী সুলেইমানের মৃত্যুতে উয়েফা নিজেদের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে লিখেছে, ‘সুলেইমান আল ওবেইদকে বিদায়, তিনি “ফিলিস্তিনি পেলে”। একইসঙ্গে এমন এক প্রতিভা যিনি অসংখ্য শিশুর কাছে ছিলেন আশার উৎস, এমনকি সময়ের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়েও।’
ইউরোপীয় ফুটবলের এই অভিভাবক সংস্থার বার্তা দেখে নেটিজেনদের অভিযোগ যেন সুলেইমানের মৃত্যু স্বাভাবিকভাবে হয়েছে। প্রায় একই সুরে প্রশ্ন তুললেন তারকা ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলের তারকা ফুটবলার সালাহ।
উয়েফার দিকে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘আপনারা কি বলতে পারবেন তিনি কীভাবে মারা গেছেন, কোথায় এবং কীভাবে?’
মিশরীয় এই ফরোয়ার্ড আগে থেকেই গাজায় চলমান নারকীয় হামলা নিয়ে সরব। ইসরায়েলের আগ্রাসনে নারী-শিশুসহ ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের সহানুভূতি প্রকাশ করতে দেখা যায় সালাহকে। দুই বছর আগে তিনি মিশরীয় রেড ক্রসের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছেন। সুলেইমানসহ চলমান এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ন্যূনতম ৬৬২ ফিলিস্তিনি ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও তাদের স্বজনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। দুর্দান্ত গতি ও দক্ষতার জন্য সুলেইমান ২০০৭ সালে ফিলিস্তিন জাতীয় দলে জায়গা করে নেন। ২০১৩ সালে জাতীয় দলের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলার আগে ২৪ ম্যাচে ২ গোল করেন তিনি।
গাজায় জন্ম নেওয়া সুলেইমান সার্ভিসেস বিচ ক্লাবের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন। পশ্চিম তীরে গিয়ে সেখানকার ক্লাব আল আমারি ইয়ুথ সেন্টারে ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত খেলেন তিনি। এরই মাঝে ২০১০-১১ মৌসুমে ফিলিস্তিনের প্রথম পেশাদার ফুটবল লিগ জেতেন। আল আমারির পর আল শাতিয়া ক্লাবে এক মৌসুম খেলেন এই ফুটবলার। এরপর গাজা স্পোর্টস ক্লাবের হয়ে সাউদার্ন গভর্নরেটস প্রিমিয়ার লিগে ২০২৬–১৭ মৌসুমে ১৭ গোল এবং পরের মৌসুমে আল খাদামা ক্লাবের হয়েও লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন।
এমকে/টিকে