বাঁশখালীতে ফিশিং বোটে নিষিদ্ধ সরঞ্জাম, ভারতীয়সহ আটক ৪

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ফিশিং বোটে নিষিদ্ধ ট্রলিং সরঞ্জাম স্থাপনের মূলহোতা ভারতীয় এক নাগরিকসহ চারজনকে যৌথ অভিযানে আটক করেছে কোস্ট গার্ড ও সেনাবাহিনী। গত সোমবার দিবাগত রাতে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃত ব্যক্তিরা বরগুনার অমল চন্দ্র (৪৫), মোংলার নাথন বিশ্বাস (৬০) ও সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা আকাশ বিশ্বাস (৩৫। এ ছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বাসিন্দা পণ্ডিত বিশ্বাস (৩৮)।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট রাফিদ-আস-সামি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানাধীন শেখেরখীল এলাকার একটি গোডাউনে ফিশিং বোটের নিষিদ্ধ ‘আর্টিসনাল ট্রলিং সরঞ্জাম’ তৈরির কাজ চলছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার মধ্যরাতে কোস্ট গার্ড কন্টিনজেন্ট বাঁশখালী ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে উক্ত এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযান চলাকালীন একটি গোডাউনে তল্লাশি চালিয়ে নিষিদ্ধ ট্রলিং জাল তৈরির সময় প্রায় ২৫ লাখ টাকা মূল্যের ৭টি অবৈধ ট্রলিং জাল, ১৭ হাজার টাকা মূল্যের ৩৪ পিস ইয়াবা, ৩০০ টাকা মূল্যের ১০ গ্রাম গাঁজা ও নগদ ৭৩ হাজার ২৩০ টাকাসহ ৩ জন বাংলাদেশি কারিগর এবং নিষিদ্ধ ট্রলিং সরঞ্জাম স্থাপনের মূলহোতা ১ জন ভারতীয় নাগরিককে আটক করা হয়।

আটককৃত ভারতীয় নাগরিকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত গোডাউনের মালিক মান্নান মিয়ার বাড়িতে তল্লাশি করে উক্ত ব্যক্তির একটি ভারতীয় পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আটককৃত পণ্ডিত বিশ্বাস বাংলাদেশে দীর্ঘদিন যাবৎ ফিশিং বোটে নিষিদ্ধ ‘আর্টিসনাল ট্রলিং’ সরঞ্জাম স্থাপন করে আসছিল। উক্ত ব্যক্তি ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর থেকে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে নিয়মিত বাংলাদেশে যাতায়াত করত।

সর্বশেষ গত ২ মে পুনরায় সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে প্রথমে বরগুনা জেলার পাথরঘাটায় এবং পরবর্তীতে গত ২৫ জুলাই থেকে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিভিন্ন ফিশিং বোটে নিষিদ্ধ ট্রলিং সরঞ্জাম স্থাপনের কাজ করছে। তার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্তের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

উল্লেখ্য, কাঠের তৈরি ফিশিং বোটে অবৈধভাবে ট্রলিং সরঞ্জাম ও ছোট ফাঁসের ‘বেহুন্দি জাল’ স্থাপন করে যান্ত্রিক ‘ট্রলিং ট্রলারে’ রূপান্তর করা হয়। যার ফলে প্রবাল, সামুদ্রিক গাছপালা ও পোনামাছ ধ্বংস হয়ে ইকোসিস্টেমের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে বঙ্গোপসাগরে মৎস্য শূন্যতার আশঙ্কা তৈরি করছে। জব্দকৃত আলামত ও আটককৃত আসামিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানায় কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট রাফিদ-আস-সামি।

কেএন/এসএন


Share this news on:

সর্বশেষ

img
৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ Nov 06, 2025
img
হাসপাতালে থেকেও ইতিবাচক বার্তা অভিনেতা জিতু কমলের Nov 06, 2025
img
মুক্তিযুদ্ধ-বাহাত্তরের সংবিধানের বিরুদ্ধে কথা বলতে দেব না : আইনজীবী পান্না Nov 06, 2025
img
ফজলুর রহমানকে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্তটি ভালো হয়েছে : জিল্লুর রহমান Nov 06, 2025
img
৬ জেলেকে তুলে নিয়েছে আরাকান আর্মি Nov 06, 2025
img
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টকে জনসমক্ষে চুমু দেওয়ার চেষ্টা, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার Nov 06, 2025
img
সেকেন্ড লাইফ হিসেবে কোচিং করার কথা ভেবেছিলাম: মোহাম্মদ আশরাফুল Nov 06, 2025
img
বিএনপি-জামায়াতকে ‘মল্লযুদ্ধ’ বন্ধ করার আহ্বান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর Nov 06, 2025
img

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

একটি দল নিজস্ব কিছু ব্যক্তিকে মানুষের উপরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে Nov 06, 2025
img
প্রযুক্তির উন্নতি ও অগ্রগতি, মানবদেহে প্রাথমিক পরীক্ষায় সফল ক্যান্সারের টিকা Nov 06, 2025
img
তারেক রহমানের দলকে নিবন্ধন দিলে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে : নাছির উদ্দীন নাছির Nov 06, 2025
img
বিনানুমতিতে ম্যানেজিং কমিটিতে থাকায় শাস্তি পেলেন উপসচিব Nov 06, 2025
img
জিতুকে দেখতে হাসপাতালে পৌঁছালেন শ্রাবন্তী Nov 06, 2025
img
বিশ্বকাপ জয় ও শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে রোনালদো এবং মেসির ভিন্নমত Nov 06, 2025
img
বাংলাদেশের সিনেপ্লেক্সেও মুক্তি পাবে নতুন ‘প্রিডেটর’ Nov 06, 2025
img
নারীদের যন্ত্রণা বুঝতে পুরুষদেরও এই অভিজ্ঞতা হওয়া উচিত : রাশমিকা Nov 06, 2025
img
৩০০ কোটির সিনেমার চেয়ে ইউটিউব আয়ে শীর্ষে ফারাহ Nov 06, 2025
img
বঙ্গবিভূষণ সম্মানে ভূষিত হলেন আরতি মুখোপাধ্যায় ও শত্রুঘ্ন সিনহা Nov 06, 2025
img
দিনশেষে জনতার যে রায়, সে রায়ই আমরা মেনে নেবো: হাসনাত আবদুল্লাহ Nov 06, 2025
img
ফ্যামিলি ফিউডের অনুষ্ঠানে সাংবাকিদের প্রতি তাহসানের অনুরোধ Nov 06, 2025