২০২১ সালে অ্যাস্টন ভিলা থেকে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ডে জ্যাক গ্রিলিশকে (প্রায় ১৬,৩৭ কোটি টাকা) দলে ভিড়িয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি, যা তাকে সবচেয়ে দামি ব্রিটিশ ফুটবলারের তকমা এনে দেয়। কিন্তু সিটিজেনদের ডেরায় এসে নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফিটনেস ইস্যুও ক্লাবে তার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে পড়েছিল। শেষপর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ক্লাব বিশ্বকাপের স্কোয়াড থেকেও বাদ পড়েছিলেন তিনি। ফলে এই মৌসুমে তার ম্যানসিটি ছাড়া অনেকটাই নিশ্চিত ছিল।
ম্যানচেস্টার সিটি ছেড়ে প্রিমিয়ার লিগের আরেক ক্লাব এভারটনে যোগ দিয়েছেন জ্যাক গ্রিলিশ। তবে স্থায়ীভাবে ইতিহাদ স্টেডিয়াম ছাড়া হচ্ছে না তার। মার্সিসাইডের ক্লাবটি তাকে এই মৌসুমের জন্য ধারে দলে টেনেছে।
২৯ বছর বয়সী গ্রিলিশ চলতি মৌসুমে ষষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে এভারটনে যোগ দিলেন। তার আগে কিয়েরনান ডিউসবুরি-হল, চার্লি আলকারাজ, থিয়েরনো ব্যারি, মার্ক ট্র্যাভার্স ও আদম আজনৌ'র কে দলে ভিড়িয়েছে ক্লাবটি। অ্যাস্টন ভিলা থেকে ২০২১ সালের আগস্টে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ডের ব্রিটিশ রেকর্ড ফিতে সিটিতে যোগ দিয়েছিলেন গ্রিলিশ এবং ক্লাবটির হয়ে ১৫০টিরও বেশি ম্যাচ খেলে জিতেছেন তিনটি প্রিমিয়ার লিগ, একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ ও একটি এফএ কাপ। কিন্তু গত মৌসুমে তিনি দলে নিয়মিত ছিলেন না, লিগে মাত্র সাতটি ম্যাচে শুরুর একাদশে ছিলেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ক্লাব বিশ্বকাপের স্কোয়াডেও জায়গা পাননি।
এভারটনে যোগ দেয়ার পর যেন হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন গ্রিলিশ। প্রথম প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, 'আমি যেতে চাইতাম এমন জায়গা একটাই ছিল।' তিনি জানান, টফিস (এভারটনের ডাকনা) ম্যানেজার ডেভিড ময়েসের সঙ্গে কথোপকথনই তাকে হিল ডিকিনসন স্টেডিয়ামে আসার সিদ্ধান্তে পৌঁছে দেয়।
'এভারটনে সাইন করতে পেরে আমি দারুণ খুশি। এটা আমার জন্য বিশাল ব্যাপার, সত্যিই। এটা দারুণ এক ক্লাব, অসাধারণ সমর্থক রয়েছে,–বলেন ইংল্যান্ডের এই উইঙ্গার।
তিনি আরও বলেন, 'ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলার পরই বুঝে গিয়েছিলাম, আমি কোথায় যেতে চাই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এভারটন সমর্থকদের কাছ থেকে প্রচুর বার্তা পেয়েছি, সেটাও এখানে আসার আরেকটা কারণ। যে সমর্থকরা আমাকে এতগুলো বার্তা পাঠিয়েছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আপনাদের ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ। আমি আশা করি, আমি আপনাদের ঋণ শোধ করতে পারব — আর নিশ্চিতভাবে পারবও।'
সোমবার (১৮ আগস্ট) লিডসের বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগে এভারটনের প্রথম ম্যাচেই অভিষেক হতে পারে গ্রিলিশের। এভারটনে আসা তার জন্য ক্যারিয়ার পুনরুজ্জীবিত করার ও নতুন স্টেডিয়ামে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় থাকার সুযোগ এনে দিয়েছে।
ইংল্যান্ডের হয়ে ৩৯টি ম্যাচ খেলা গ্রিলিশ ফের ইংল্যান্ড জাতীয় দলে ফিরতে চান। এভারটনের কোচ ময়েস মনে করেন, এই ক্লাব তাকে সাহায্য করতে পারবে। গত গ্রীষ্মে ইউরো ২০২৪ স্কোয়াডে বাদ পড়ার পর তিনি বলেছিলেন, এটা তাকে 'ভেঙে দিয়েছে।'
এভারটন বস ময়েস বলেন, 'আমার মনে হয়, আমরা তাকে ভালো সময়ে পাচ্ছি কারণ সে অভিজ্ঞ, প্রিমিয়ার লিগ সম্পর্কে জানে এবং আমরা সবাই জানি সে কতটা উচ্চমানের পারফরম্যান্স দিতে সক্ষম। আমরা সবাই তার সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি এবং তাকে নিজের সেরা সংস্করণটা দেখানোর একটা প্ল্যাটফর্ম দিতে চাই।'
নতুন ক্লাবে গ্রিলিশ ১৮ নম্বর জার্সি পরবেন এবং জানান, দুইজন প্রিয় খেলোয়াড়কে অনুসরণ করতেই তিনি এই নম্বর বেছে নিয়েছেন।
গ্রিলিশ বলেন, '১৮ নম্বর নেওয়ার একটা কারণ আছে। আরও কিছু নম্বর ছিল, কিন্তু আমার দুই প্রিয় ইংলিশ খেলোয়াড় ওয়েইন রুনি ও পল গ্যাসকয়েন — দুজনেই এখানে ১৮ নম্বর পরেছিলেন। তাই, যখন জানলাম এই ডিল প্রায় হয়ে গেছে, তখন খোঁজ নিলাম ১৮ নম্বরটা ফ্রি আছে কি না — আর সেটা ফ্রি ছিল, তাই তখন থেকেই ঠিক করেছিলাম এই নম্বরই নেব।'
'এখানে আসার আগে ওয়েইনের (রুনি) সঙ্গে কথা বলেছিলাম এবং তাকে ১৮ নম্বর নেওয়ার বিষয়টাও বলেছি — আশা করি, সেও খুশি হবে।'–গ্রিলিশ যোগ করেন।
ইউটি/এসএন