ভারত জ্বালানি স্বনির্ভরতা ও নিজস্ব শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার পথে এগোচ্ছে জানিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার ‘দেয়ালের মতো’ দেশের স্বার্থ রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি ও প্রবল চাপের মুখে থাকা অবস্থায় ভারতের নয়াদিল্লির লালকেল্লা চত্বরে দেওয়া বার্ষিক স্বাধীনতা দিবস ভাষণে মোদি এ কথা বলেন।
মোদি বলেন, ‘উন্নত ভারতের ভিত্তি হলো স্বনির্ভরতা। যদি কেউ অন্যের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে যায়, তাহলে স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে পড়ে।’
এর আগে সামরিক হেলিকপ্টারের মাধ্যমে হাজারো আমন্ত্রিত অতিথির মাথার ওপর ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চূড়ান্ত নির্দেশের পর থেকে দিল্লি-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে। রাশিয়া এ তেলের আয় দিয়েই ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে বলে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র ।
ভারত জানিয়েছে, তারা ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে সহায়ক উদ্যোগে অংশ নিতে ‘প্রস্তুত’ আছে।
এ ছাড়া ভারত শুক্রবার আলাস্কায় ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য শীর্ষ সম্মেলনকেও সমর্থন করেছে।
তবে ভারত অপরিশোধিত তেলের সরবরাহকারী পরিবর্তন না করলে, ২৭ আগস্ট থেকে ভারতের ওপর নতুন আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল দেশ ও পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির নেতা মোদি আরো বলেন, ‘আমরা জানি, জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আমরা এখনো বহু দেশের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সত্যিকারের স্বনির্ভর ভারত গড়তে হলে আমাদের জ্বালানি স্বাধীনতা অর্জন করতে হবে।’
মোদি বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন যুদ্ধবিমান ইঞ্জিন, সেমিকন্ডাক্টর চিপ ও সামরিক হার্ডওয়্যারসহ গুরুত্বপূর্ণ খাত ও প্রযুক্তি উন্নয়নে মনোনিবেশ করেন। তিনি বলেন, ‘বছর শেষ হওয়ার আগেই বাজারে ভারত-নির্মিত সেমিকন্ডাক্টর চিপ পাওয়া যাবে ।’
তিনি আরও জানান, দেশটি নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরির দিকেও এগোচ্ছে ও আগামী এক দশকের মধ্যে একটি ‘প্রতিরক্ষা ঢাল ’ পাবে, যদিও বিস্তারিত কিছু জানাননি।
মে মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে চার দিনের সংঘাতে অংশ নেওয়া সশস্ত্র বাহিনীকেও সম্মান জানান মোদি।
ট্রাম্পের নাম সরাসরি উল্লেখ না করে মোদি বলেন, কৃষকের স্বার্থের ক্ষতি করতে পারে- এমন যেকোনো নীতির বিরুদ্ধে তিনি ‘দেয়ালের মতো ’ দাঁড়াবেন।
ভারতে বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান কৃষির সঙ্গে যুক্ত, যা দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্য আলোচনার অন্যতম বড় বিতর্কের বিষয়।
মোদি বলেন, ‘যখন অর্থনৈতিক স্বার্থপরতা দিনে দিনে বাড়ছে, তখন আমাদের সংকট নিয়ে বসে থাকার বদলে নিজেদের শক্তির ওপর মনোযোগী হতে হবে। ’
সূত্র : এএফপি
কেএন/এসএন