আইপিএলের ২০২৪ আসরে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে শিরোপা জিতিয়েছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। তবুও ফ্র্যাঞ্চাইজির পক্ষ থেকে তিনি প্রাপ্য মূল্যায়ন পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর ভারতের ঘরোয়া লিগ মুস্তাক আলি ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন এবং আইপিএলের নতুন মৌসুমে পাঞ্জাব কিংসকে তুলেছিলেন ফাইনালে। এমনকি ব্যাট হাতে ১৭৫ স্ট্রাইকরেটে ৬০৪ রান করা আইয়ারের জায়গা মেলেনি এশিয়া কাপের ভারতীয় স্কোয়াডে।
গতকাল (মঙ্গলবার) এশিয়া কাপের জন্য ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছিল ভারত। যেখানে বাদ পড়াদের মধ্যে আলোচিত নাম আইয়ার ও যশস্বী জয়সওয়াল। এর মধ্যে জয়সওয়াল স্ট্যান্ডবাই তালিকায় থাকলেও, সেখানেও জায়গা হয়নি তার অপর সতীর্থের। আইয়ারকে বাদ দেওয়ার খুব একটা ব্যাখ্যা নেই ভারতীয় নির্বাচক অজিত আগারকারের কাছে, ‘শ্রেয়াসের সুযোগ না পাওয়াটা ওর দোষ নয়, এমনকি আমাদেরও দোষ নয়। দলে ১৫ জনই থাকতে পারে। এর বেশি ক্রিকেটারকে রাখার সুযোগ নেই। ওকে কার জায়গায় নেওয়া যেত!’
আইয়ারের মতো জয়সওয়ালও সর্বশেষ আইপিএলে ১৪ ম্যাচে ৪৩ গড়ে ৫৫৯ রান করেন, স্ট্রাইকরেট ছিল ১৫৯.৭১। জাতীয় দলেও তার ব্যাট ম্লান ছিল না। তবে ওপেনারদের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েছেন জয়সওয়াল। আগারকার বলেন, ‘যশস্বীর দলে না থাকা দুর্ভাগ্যজনক। অভিষেকের পারফরম্যান্স উপেক্ষা করা কঠিন ছিল। আমরা টি-টোয়েন্টিতে ওর পারফরম্যান্স জানি। পাশাপাশি অভিষেক বলও করতে পারে। যা অধিনায়কের হাতে অতিরিক্ত বিকল্প দেয়। ওদের দু’জনের মধ্যে একজনকে বসতেই হতো।’
আইয়ারের বাদ পড়া ‘দুঃখজনক ও অন্যায্য’ বলে নিজের ইউটিউব চ্যানেল অ্যাশ কি বাত-এ উল্লেখ করেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ‘শ্রেয়াস আইয়ারের মতো একজন ক্রিকেটারের আর কী করার ছিল? দলে ফিরে এসে সে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতিয়েছে।
শুভমান গিল ফর্মে আছে ঠিকই, তবে শ্রেয়াসও দারুণ খেলছে। এই প্রশ্নগুলোর জবাব কে দেবে? সে কী ভুল করেছে? কেকেআরকে জিতিয়েছে, পাঞ্জাবকে ফাইনালে তুলেছে, দুর্বলতাও কাটিয়েছে শর্ট বলে। রাবাদা আর বুমরাহদের সহজেই খেলেছে। তার জন্য আমি ভীষণ দুঃখিত। শ্রেয়াস আর যশস্বীর প্রতি এটা একেবারেই অন্যায়।’
ভারতের ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে ফরম্যাটটিতে ২৬ ম্যাচ খেলেছেন আইয়ার। যেখানে সাত ফিফটি ও এক সেঞ্চুরিতে প্রায় ৫০ গড় এবং ১৭৯.৭৩ স্ট্রাইকরেটে ৯৪৯ রান করেছেন। তবুও তার এশিয়া কাপের স্কোয়াডে না থাকায় হতাশ ইরফান পাঠান। সাবেক এই ভারতীয় অলরাউন্ডার নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘শ্রেয়াস আইয়ার কেবল টি-টোয়েন্টি দলেই নয়, নেতৃত্বের গ্রুপেও যে সে অনুপস্থিত আমার এ নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই। এই মুহূর্তে ধৈর্যই তার জন্য প্রধান হাতিয়ার।’
অন্যদিকে, আইয়ারকে না নেওয়ার সিদ্ধান্তে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুললেন ভারতের সাবেক সহকারী কোচ অভিষেক নায়ার, ‘আমার একটা বিষয় জানার ইচ্ছা– কীভাবে আপনাদের রিজার্ভ খেলোয়াড়ের তালিকায়ও সে (আইয়ার) নেই? অথচ বলছেন সে শক্তিশালী প্রতিযোগী ছিল।
মাঝেমধ্যে নির্বাচকদের সভা ও আলোচনাকে খুব মজার মনে হয়। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না, ২০ জনের তালিকায়ও কীভাবে আইয়ারের জায়গা হয় না। তার মানে হয়তো তাকে টি-টোয়েন্টির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হচ্ছে না। সম্ভবত আইয়ার অন্য কারও চেয়ে কিছুটা কম পছন্দের!’
এমআর/এসএন