নির্বাচন পেছালে উগ্রবাদের উত্থান ঘটতে পারে : রিজভী

আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন পেছালে দেশে উগ্রবাদের উত্থান ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দেশের মানুষ এটা চায় না।

বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির এক কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এ কথা বলেন।

জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, সংস্কার কমিশনে প্রস্তাব দিয়েছেন সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছেন ভালো কথা। কিন্তু পিআর না হলে নির্বাচনে যাবেন না, এই শর্ত দেন কেন? চৌদ্দটি ইউনিভার্সিটি দখল করেছেন, এসব ইউনিভার্সিটির ভিসি আপনাদের। বিএনপি যদি সরকার গঠন করে, সেখানে আপনাদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাবে। এই ভয়ে এখন শর্ত দিয়ে নির্বাচন পেছানোর তালবাহানা করছেন?

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকারের জন্য গত ১৭ বছর বিএনপির নেতাকর্মীরা আন্দোলন করেছে, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে দেশের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে থেকেছে; আর আপনারা (জামায়াত) এসে বলছেন- আপনারা যা বলবেন তা না মানলে নির্বাচনে যাবেন না। আপনারা নির্বাচন পেছানোর টালবাহানা করছেন আর ওইদিকে ইন্ডিয়ায় বসে শেখ হাসিনা ষড়যন্ত্র করছে।’

দিল্লি সরকার ডাবল স্ট্যান্ডার্ড আচরণ করছে অভিযোগ করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, একদিকে তারা বাংলাভাষী মানুষকে বাংলাদেশে পুশআউট করছে, অন্যদিকে শেখ হাসিনাকে জামাই আদরে রাখছে। এটা স্পষ্টতই ইন্ডিয়ার দ্বিচারিতা।

রিজভী বলেন, দেশের সব ব্যাংক এস আলমকে দেওয়ার চুক্তি করেছে শেখ হাসিনা। তারা আড়াই হাজার কোটি টাকা দিয়েছে, আরো দুই হাজার কোটি টাকা আওয়ামী লীগকে দেবে। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র চলছেই। শেখ হাসিনা ইন্ডিয়ায় বসে ভিডিও কলে কথা বলছে, দেশে অশান্তি ছড়িয়ে দিচ্ছে। এর মধ্যে নির্বাচন পেছানোর তালবাহানা দেশের ক্ষতি করা ছাড়া কিছু নয়।

দেশের সাধারণ মানুষ পিআর কী জিনিস- তা জানে না বলে জানান রুহুল কবির রিজভী। এ সময় সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা কি এমন নির্বাচন চান, যেখানে আপনারা যাকে পছন্দ করে ভোট দিবেন- তিনি নির্বাচিত না হয়ে অন্য কেউ নির্বাচিত হবেন? নেতাকর্মীরা তখন সমন্বরে ‘না’ ‘না’ বলে জবাব দেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য এম রশিদুজ্জামান মিল্লাতের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন-দলের মিডিয়া সেলের আহবায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম, জেলার সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. ওয়ারেস আলী মামুন প্রমুখ।

কর্মী সমাবেশের আগে চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে নিহত ও আহত আঠারটি পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের উপহার তুলে দেয়া হয়। এ সময় তিনটি শহীদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা, ১৪টি আহত পরিবারকে চিকিৎসা সহায়তা এবং একটি গুরুতর আহত পরিবারকে অটোরিকশা প্রদান করা হয়।

‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনির যৌথ পরিচালনায় মানবিক এ কর্মসূচিতে রুহুল কবির রিজভী, অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল ও রশিদুজ্জামান মিল্লাত ছাড়াও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর উপদেষ্টা শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সংগঠনের উপদেষ্টা মো. আবুল কাশেম ও ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই জামান সেলিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহসম্পাদক সাইফ আলী খান, মালয়েশিয়া বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার বাদলুর রহমান খান বাদল, কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুল হক সাজু, ছাত্রদল বুয়েট শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিফসহ জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ ও বকশিগঞ্জের স্থানীয় বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ইউটি/টিএ





Share this news on:

সর্বশেষ

img
আর নেই প্রবীণ অভিনেত্রী ইন্দিরা দেবী Oct 14, 2025
img
সায়েন্সল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ Oct 14, 2025
img
শিক্ষকরা মর্যাদা না পেলে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন উন্নত জাতি গঠন সম্ভব নয় : নুরুল হক নুর Oct 14, 2025
img
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে গুঞ্জনে বিসিবির স্পষ্ট বার্তা Oct 14, 2025
img
জয়পুরহাট এনসিপির প্রধান সমন্বয়কের পদত্যাগ Oct 14, 2025
img
অভয়নগরে যৌথ বাহিনীর অভিযান, অস্ত্র উদ্ধার Oct 14, 2025
img
অভয়নগরে যৌথ বাহিনীর তল্লাশি, অস্ত্র উদ্ধার Oct 14, 2025
img
শেখ হাসিনাসহ ৩ আসামির বিরুদ্ধে ৩য় দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন আজ Oct 14, 2025
img
সম্মান রক্ষার মিশনে টাইগাররা, চোখ এখন পরের সিরিজে Oct 14, 2025
img
বিচার বিভাগের পৃথক সচিবালয় অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ই হবে: আইন উপদেষ্টা Oct 14, 2025
img
জামিন হওয়ার পর এক ক্লিকেই আদেশ চলে যাবে কারাগারে: আইন উপদেষ্টা Oct 14, 2025
img
ওয়ার্ল্ড হেলথ সামিটে যোগ দিচ্ছেন কৃতি! Oct 14, 2025
img

অর্থ উপদেষ্টা

বাংলাদেশে সংস্কার অগ্রগতি যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ আগ্রহ বাড়াবে Oct 14, 2025
img
ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা স্পষ্ট নয়: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী Oct 14, 2025
img
মালয়েশিয়ায় প্রায় ৬,০০০ শিক্ষার্থী ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত, স্কুল বন্ধ ঘোষণা Oct 14, 2025
img
আর্জেন্টিনার দলে ফিরছেন মেসি! Oct 14, 2025
img
বেরোবির অনুষ্ঠানে মঞ্চ দখলে ছাত্রলীগ, দর্শকের ভূমিকায় উপাচার্য Oct 14, 2025
ঢালিউডের ট্রাজেডি কিং হঠাৎ ‘বিদায়’ লিখলেন Oct 14, 2025
img
গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আটক Oct 14, 2025
img

চাকসু নির্বাচন

৩৫ বছর পর চবি ক্যাম্পাসে ফের ভোটের আমেজ Oct 14, 2025