প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক নিয়ে জামায়াতের ব্রিফিং

জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে আগামী জাতীয় নির্বাচন ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় উঠে আছে।

রোববার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যায় বৈঠক শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে ব্রিফ করেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

তিনি জানান, নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য করণীয়, বানচালের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ৩ বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন। সংস্কার, বিচার এবং সুষ্ঠু নির্বাচন।

তাহের বলেন, একটা নীলনকশার নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি কিনা, এমন প্রশ্ন উঠেছে। লন্ডনে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়েছে। পরিকল্পিত নির্বাচন হলে গণতন্ত্রকামী মানুষদের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেয়া সংকুচিত হয়ে যাবে।

নির্বাচনের তারিখের ব্যাপারে দ্বিমত নেই, দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই জানিয়ে তিনি বলেন, তবে নির্বাচনের কার্যকারিতার ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেছি।

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করা ৩১টি দলের মধ্যে ২৫টি দল পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ শুধু উচ্চকক্ষে চায়, জামায়াতসহ অনেকে উভয়কক্ষে পিআর চায়। কেন্দ্র দখল ঠেকাতে এই নতুন পদ্ধতিতে নির্বাচন জরুরি। মেজরিটিকে অবজ্ঞা করে কারো চাপে নির্বাচনে গেলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আমাদের জন্য নির্বাচনে যাওয়া সংকুচিত হয়ে যাবে।

দুয়েকটি দল জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বাধা দিচ্ছে অভিযোগ করে তাহের বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে আইনি ভিত্তির দাবি জানিয়েছে জামায়াত। জুলাই সনদের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। বাস্তবায়ন না হলে জুলাই শহীদদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।

এই সরকার দখলদারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি জানিয়ে তিনি বলেন, আগে এক গ্রুপ বাসস্ট্যান্ড দখলে নিয়েছে। এখন আরেক গ্রুপ নিয়েছে। এই সরকার কীভাবে নির্বাচন করবে, তা নিয়ে শঙ্কিত, কিছুটা উদ্বিগ্ন। মনে হচ্ছে, সরকার হাত পা ছেড়ে দিয়েছে। সরকারকে এখন আরও কঠোর হতে হবে। এখনো এর থেকে উত্তরণ ঘটানো সম্ভব।

জুলাই সনদ নিয়ে একটি দলই বাধা দিচ্ছে ‍উল্লেখ করে তাহের বলেন, জুলাই সনদ, পিআর নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়া উচিত। তারা গণভোটে সিদ্ধান্ত নেবে। সরকারের উচিৎ স্টেকদের সাথে আলাপ আলোচনা করে নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া। রাজনৈতিক দলগুলোকেও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করা উচিৎ।

নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, নুরের ওপর হামলার ষড়যন্ত্র গভীরে। সবার বিচার হতে হবে।

আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে জাতীয় পার্টি কাজ করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ব্যপারে যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, জাতীয় পার্টির ব্যাপারেও একই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

বৈঠকে ফ্যাসিবাদের দালালদের প্রশাসন থেকে সরানোর দাবি জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

ইএ/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আসন্ন দুর্গাপূজাকে শান্তিপূর্ণ রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৮ দফা নির্দেশনা! Sep 03, 2025
img
বিক্রি করতে হবে না গুগল ক্রোম Sep 03, 2025
img
কাগজ কলমে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা যায় না : রুমিন ফারহানা Sep 03, 2025
img
চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত Sep 03, 2025
img
আজ রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুনকে জেরা করবেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী Sep 03, 2025
img
তারেক রহমান ও বাবরসহ সব আসামিকে খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের রায় বৃহস্পতিবার Sep 03, 2025
img
ফেরদৌস-শ্রীলেখা সম্পর্ক নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন নায়িকা Sep 03, 2025
img
উদ্যোক্তাদের জন্য ৫০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল ঘোষণা Sep 03, 2025
img
সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে যেসব অঞ্চলে ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের আশঙ্কা Sep 03, 2025
img
১৫ মিনিটের আবেগঘন অভিবাদন, কাঁদলেন ডোয়াইন জনসন Sep 03, 2025
img
অপ্রতিরোধ্য চীনকে কোনোভাবেই ভয় দেখানো যাবে না: শি চিনপিং Sep 03, 2025
img
জাবি ছাত্রীকে বাস থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ, ক্যাম্পাসে ২৫ বাস আটক Sep 03, 2025
img
তামিম-ফারুকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে মুখ খুললেন বুলবুল Sep 03, 2025
img
তারিক সিদ্দিকীর মেয়ে বুশরার আয়কর নথি জব্দের আদেশ আদালতের Sep 03, 2025
img
ভারতের সফর বাতিল, আর্থিক লোকসানে বিসিবি Sep 03, 2025
img
দেশের ৪০ শতাংশ মানুষকে বাইরে রেখে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন কিভাবে, প্রশ্ন জিল্লুর রহমানের Sep 03, 2025
img
গাজীপুরে ডাম্প ট্রাকে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল ২ জনের Sep 03, 2025
img
সমর্থকদের কাঁদিয়ে ম্যানইউকে বিদায় জানালেন অ্যান্টনি Sep 03, 2025
img
ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দিলেন ট্রাম্প Sep 03, 2025
img
যে ক’জনকে কফি খাইয়েছি, তাদের কাছে ক্ষমা চাইছি : শ্রদ্ধা কাপুর Sep 03, 2025