১০ বছরে নতুন কোটিপতি ৫৬ হাজার: বাংলাদেশ ব্যাংক

দেশে চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৬ হাজার ২৮৬ জন। যা ২০০৯ সালের মার্চ শেষে ছিল ১৯ হাজার ৬৩৬ জন। এই হিসাবে গত দশ বছরে কোটিপতি বেড়েছে ৫৬ হাজার ৬৫০ জন।

ব্যাংকে টাকা আমানত রেখেছেন এমন ব্যক্তিদের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ চিত্র তুলে ধরেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ব্যাংকে আমানত রাখেন না দেশে এমন কোটিপতির সংখ্যা এর চেয়েও বেশি বলেও জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে কোটিপতি আমনতকারীর সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ১৬৩ জন। পাঁচ বছর পর ২০১৩ সালের ডিসেম্বর শেষে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯ হাজার ৬৪০ জনে। সে হিসাবে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম মেয়াদের ৫ বছরে দেশে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৩০ হাজার ৪৭৭ জন। এই সময়ে গড়ে প্রতিবছর কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে ৬ হাজার ৯৫ জন।

অন্যদিকে সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের পাঁচ বছর, অর্থাৎ ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে কোটিপতি আমানকারীর সংখ্যা বেড়েছে ২৫ হাজার ৯২৩ জন। এ সময়ে গড়ে প্রতিবছর কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে ৫ হাজার ১৮৪ জন। আর সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম তিন মাস, অর্থাৎ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে দেশে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৭২৩ জন। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ সরকারের ১০ বছর তিন মাসের শাসনামলে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৫৭ হাজার ১২৩ জন।

জানা যায়, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের শেষে দেশে কোটিপতি আমনতকারীদের মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ৭৭ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। তখন মোট আমানতের ৩১ শতাংশ ছিল কোটিপতি আমানতকারীদের। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতি আমানতকারীর আমানতের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৪৭ হাজার ১৭৬ কোটি টাকায়। তখন মোট আমানতকারীদের ৪০ দশমিক ৬০ শতাংশ ছিলেন কোটিপতি। আর এ সময়ে কোটিপতি আমানতকারীদের আমানতের পরিমাণ বাড়ে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা।

অন্যদিকে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশে কোটিপতি আমানতকারীর অর্থের পরিমাণ বেড়ে হয় ৪ লাখ ৭৮ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। মোট আমানতকারীর ৪৪ দশমিক ২৭ শতাংশ তখন ছিল।

এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি ছিলেন মাত্র পাঁচজন। ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরে এই সংখ্যা বেড়ে ৪৭ জনে দাঁড়ায়। ১৯৮০ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৮ জনে। এরশাদ সরকারের পতনের সময় ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা ছিল ৯৪৩ জন। ১৯৯৬ সালের জুনে কোটিপতি ছিলেন দুই হাজার ৫৯৪ জন। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এ সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ১৬২ জনে। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৮৮৭ জনে। ২০০৮ সালে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ১৯ হাজার ১৬৩ জন।

 

টাইমস/এএইচ/এসআই

 

Share this news on:

সর্বশেষ