প্রথম পাতা কালোকালিতে ঢেকে ‘অভিনব’ প্রতিবাদ

সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে অভিনব পন্থায় প্রতিবাদ জানিয়ে প্রথম পাতার শব্দগুলি কালো কালিতে মুছে দিয়ে পত্রিকা প্রকাশ করল অস্ট্রেলিয়ার সংবাদপত্রগুলি। খবর: ডয়েচেভেলে ও বিবিসি।

সোমবার নিজেদের মধ্যকার প্রতিযোগিতা ভুলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করার প্রতিবাদে সামিল হয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়ার দৈনিক পত্রিকাগুলি। প্রতিবাদের লক্ষ্য ছিল অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা আইন, সাংবাদিকদের মতে এটি অস্ট্রেলিয়াতে সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করবে এবং একটি গোপনীয়তার সংস্কৃতি গড়ে তুলবে।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে কিন্তু “কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়”।

গত জুনে, পুলিশ অস্ট্রেলিয়া ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের (এবিসি) অফিস এবং নিউজকর্প অস্ট্রেলিয়ার একজন সাংবাদিকের বাড়ি রেইড করলে ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

সংবাদ সংস্থাগুলো বলছে, হুইসেল ব্লোয়ারদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাদের হাতে চলে এসেছিল।এর একটি ছিল যুদ্ধ অপরাধের অভিযোগ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য এবং অন্যটি একটি সরকারি এজেন্সি কর্তৃক অন্যায়ভাবে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের উপর গোয়েন্দা নজরদারির পদক্ষেপ সংক্রান্ত তথ্য।

গত সোমবারের ‘ইউর রাইট টু নো’ প্রচারণায় বিভিন্ন টিভি, রেডিও এবং অনলাইন আউনলেটগুলিও সমর্থন জানিয়েছে।

নিউজকর্প অস্ট্রেলিয়ার নির্বাহী চেয়ারম্যান মিশেল মিলার তার পত্রিকার শব্দ মুছে দেয়া মাস্টারহেডের একটি ছবি টুইটারে প্রকাশ করে লিখেছেন- সাংবাদিকরা কিসের উপর প্রতিবেদন করতে পারবে সরকার প্রতিবার তার উপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে, অস্ট্রেলিয়ানদের অবশ্যই প্রশ্ন করা উচিৎ, ‘তারা আমার কাছ থেকে কী লুকাতে চায়?’

একারণেই আমি অস্ট্রেলিয়াতে ক্রমবর্ধমান সরকারী গোপনীয়তার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছি।

প্রতিষ্ঠানটির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আরও দুই পত্রিকা ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড এবং ‘দ্য এজ’ একই ধরণের প্রথম পাতা ছাপিয়েছে।

এবিসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেভিড এন্ডারসন বলেছেন, “অস্ট্রিলিয়া বিশ্বের সব থেকে গোপন গণতন্ত্র হয়ে ওঠার ঝুঁকিতে রয়েছে।”

গত রোববার অস্ট্রেলিয়া সরকার পুনব্যক্ত করেছে যে, সম্ভবত রেইডের ফলে তিন সাংবাদিককে প্রসিকিউসনের মুখোমুখি হতে হবে।

এদিকে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অস্ট্রেলিয়ার গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। কিন্তু এটাও বলেছেন যে, “আইনের শাসন” বজায় রাখাটাও জরুরি।

তিনি বলেন, “এটি আমি অথবা কোন সাংবাদিক বা অন্য যে কারও ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।”

গণমাধ্যম সংস্থাগুলির জোট বলছে, গত ২০ বছরে সাংবাদিকদের কাজ করার স্বাধীনতা খর্ব হয় এবং তথ্য ফাঁসকারীদের শাস্তি প্রদান করা সম্ভব হয় এমন ৬০টি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

সিক্রেট হিসেবে চিহ্নিত ডকুমেন্ট প্রকাশের সীমাবদ্ধতা এবং সার্চ ওয়ারেন্ট প্রতিরোধ করার অধিকারসহ প্রচারণায় মোট ৬টি আইনগত পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়েচেভেলে।

অন্যদিকে বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার সরকারের কাছে তথ্য স্বাধীনতা ও মানহানি আইনের ৭টি পরিবর্তন দাবি জানিয়েছে প্রতিবাদকারীরা।

 

 

টাইমস/এনজে/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য : ওবায়দুল কাদের Apr 27, 2024
img
আজ ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না রাজধানীর যেসব এলাকায় Apr 27, 2024
img
গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা শুরু আজ, কেন্দ্রে থাকবে পানি ও চিকিৎসা ব্যবস্থা Apr 27, 2024
img
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা Apr 27, 2024
img
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ Apr 27, 2024
img
আ.লীগ নেতাকর্মীদের দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর Apr 26, 2024
img
৯ মে পর্যন্ত বন্ধ চুয়েট, খোলা থাকবে হল Apr 26, 2024
img
প্রথমবার এশিয়া কাপে আম্পায়ারিং করবেন বাংলাদেশের জেসি Apr 26, 2024
img
গাজায় ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারে লাগতে পারে ১৪ বছর : জাতিসংঘ Apr 26, 2024
img
বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী Apr 26, 2024