বাংলাদেশী সংকটে কলকাতার ঈদ বাজারে ধ্বস

ঈদ এলে কেনাকাটার ধুম পড়ে যায় সারাদেশে। ঈদের বাজারে নতুন পোশাক, প্রসাধনী, অলংকারসহ নানা জিনিসের চাহিদা বেড়ে যায়। ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে শুরু করে গুলশান বনানীর অভিজাত শপিং মলে পা ফেলার জায়গা থাকেনা। আবার অনেকেই ঈদের কেনাকাটা করার জন্য পাড়ি জমান বিদেশে।

বিদেশে কেনাকাটার জন্য বাংলাদেশীরা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভারত, আরব আমিরাত, ইংল্যান্ডের মত দেশে বেশি যান। তবে ভারতের কলকাতা বাংলাদেশীদের আবেগের একটা জায়গা। কেনাকাটা হোক আর অবকাশ যাপন। বাংলাদেশের মানুষ সময় সুযোগ পেলেই ছুটে যান কলকাতায়।

আর ঈদের সময়ে তো কথায় নেই। ঈদের শপিংয়ের জন্য অনেক বাংলাদেশীর প্রথম পছন্দ কলকাতা নিউ মার্কেট। এই নিউ মার্কেটের অনেক দোকান শুধু বাংলাদেশীদের ওপর নির্ভর করে চলে। এমনটা জানিয়েছেন খোদ কলকাতা নিউ মার্কেটের দোকানিরা।

বাংলাদেশীদের জন্য কলকাতা নিউ মার্কেটের আস্থার জায়গা ‘মিলন’। ‘মিলন’ মুলত কাপড়ের দোকান। কলকাতা ভ্রমণে যাওয়া বাংলাদেশীরাই এই দোকানের প্রধান খরিদ্দার। আর ঈদের সময় এই দোকানের ৯০ শতাংশ বেচাকেনা জমে বাংলাদেশীদের কেন্দ্র করে।

কলকাতা নিউ মার্কেটের অনেক দোকানী জানান, বাংলাদেশী পর্যটকদের ওপর এসব দোকানের বেচাকেনা নির্ভর করে। বিশেষ করে ঈদের সময় বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক কলকাতা নিউ মার্কেটে শপিং করতে আসেন।

দোকানিরা আরও জানান, প্রতিবছর ঈদের সময় কলকাতার এই নিউ মার্কেটে বাংলাদেশী ক্রেতাদের ভীড় লেগে থাকতো। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন ঘোষণার পর থেকে বাংলাদেশী ক্রেতাদের উপস্থিতি কমে গেছে। ঈদের বাজারে তার প্রভাব পড়েছে।

জানা গেছে, কলকাতার নিউ মার্কেট, সদর স্ট্রিট, মার্কুইস স্ট্রিট, কলিন স্ট্রিট, এসএন ব্যানার্জি রোড, রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডের দোকানগুলোতে বাংলাদেশী ভীড় সব থেকে বেশি থাকতো। কিন্তু করোনার কারণে এসব এলাকায় বাংলাদেশীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে।

যে কারণে এসব এলাকার দোকানগুলো বেচাকেনা কমে গেছে। অনেক দোকান মালিক কর্মচারীদের বেতন দিতে না পেরে তাদের গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে।

কলকাতার বেশ কয়েকটি হোটেল মালিক জানান, ঈদের সময় কেনাকাটা করার জন্য অনেক বাংলাদেশী কলকাতায় আসতো। বাংলাদেশীদের কারণে কলকাতার ঈদের বাজারে বেচাকেনা জমে থাকতো। সেই সঙ্গে কলকাতার হোটেল ব্যবসাও চলতো পুরোদমে। কিন্তু করোনার কারণে সব থমকে গেছে। বাংলাদেশীরা কলকাতায় না আসায় হোটেল ব্যবসাসহ অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্যও থমকে গেছে।

বাংলাদেশীরা না আসায় হতাশা প্রকাশ করেছেন কলকাতার পার্ক সার্কাস, রাজাবাজার, মেটিয়া বুরুজ, খিদিরপুর, পার্ক স্ট্রিট, মল্লিকপুর, বেলগাছিয়া, নিউ মার্কেট, চিৎপুর, টালিগঞ্জসহ মুসলিম অধ্যুষিত এলাকার ব্যবসায়ীরা।

 

টাইমস/এসএন

Share this news on: