পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে নিহত ৪

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত চার জন নিহত হয়েছেন। আরো অনেকে গুলিবিদ্ধ ও নিখোঁজ রয়েছে।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়,  শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে উত্তর ২৪ পরগনার জেলার সন্দেশখালি এলাকার ন্যাজাটে দলীয় পতাকা খোলাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

বিজেপির অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাহিনী শনিবার সন্ধ্যায় হামলা চালায়। প্রথমে ওই এলাকায় তৃণমূলের বৈঠক হয় এবং বৈঠক শেষে বিজেপির পতাকা খুলতে শুরু করে তৃণমূল, তার থেকেই গোলমালের সূত্রপাত হয় বলে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর দাবি।

জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পাল্টা অভিযোগ, বৈঠক শেষে মিছিল বের করেছিল তৃণমূল। সেই মিছিলে হামলা চালিয়ে তৃণমূল কর্মী কাইয়ুম মোল্লাকে গুলি করে ও কুপিয়ে খুন করা হয়।

জ্যোতিপ্রিয়র দাবি প্রত্যাখ্যান করে বিজেপি বলছে, বাড়ি বাড়ি হামলা চালিয়ে গুলি করা হয়েছে বিজেপি কর্মীদের। তাতে অন্তত তিন বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আহত ও নিখোঁজ আরও অনেকে। বেপরোয়া গুলি চালানোর সময়ে তৃণমূলের গুলিতেই তৃণমূল কর্মী কাইয়ুম মোল্লা নিহত হয়েছে।

তৃণমূলের একটি সূত্র বলছে, ওই দিন বিকালে ন্যাজাটে তাদের বুথ স্তরের দলীয় বৈঠক ছিল। তারপরে একটি মিছিল বেরোলে বিজেপি তার ওপর হামলা চালায়। মিছিলের পিছনে থাকা তৃণমূল কর্মী কাইয়ুম মোল্লাকে প্রথমে গুলি করা হয় এবং পরে টেনে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে মারা হয়। এরপরেই পাল্টা প্রতিরোধে নামে তৃণমূল। দলের অপর সূত্রে জানানো হয়, বৈঠক চলাকালীনই বিজেপি আক্রমণ চালায়।

তৃণমূলই প্রথম তাদের ওপর হামলা চালায়। যার জেরে দলের তিন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে, দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে বিজেপি দাবি করছে।

নিহতরা হলেন- প্রদীপ মণ্ডল, তপন মণ্ডল এবং সুকান্ত মণ্ডল।

বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, তাদের দলের আরও দু’জন নিহত হয়েছেন। তাদের নাম দেবব্রত মণ্ডল ও শঙ্কর মণ্ডল।

রাতে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু দাবি করেন, সংঘর্ষে তাদের দলের পাঁচ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।

'পাঁচ জন বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে তিন জনের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। বাকি দু’জনের দেহ পুলিশ সরিয়ে ফেলেছে বলে আমাদের কাছে খবর আসছে। সুজিত মণ্ডল, তপন মণ্ডল ও সুকান্ত মণ্ডল নামে যে তিন জন বিজেপি কর্মীর দেহ পাওয়া গিয়েছে, এ ছাড়া চারজন নিখোঁজ। ওই চার জনের মধ্যে শঙ্কর মণ্ডল এবং দেবদাস মণ্ডল নামে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। কিন্তু পুলিশ মৃতের সংখ্যা কমিয়ে দেখাতে ওই দুজনের দেহ লোপাট করার চেষ্টা করছে'- সায়ন্তন বসু বলেন।

পুলিশের দাবি, বিজেপির দু’জন নিহত হয়েছেন।

সর্বশেষ অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যর ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১৮টি নিজেদের অধিকারে নিয়েছে বিজেপি, অপরদিকে তৃণমূল পায় ২২টি আসন। এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে রাজ্যের লোকসভা আসনগুলোর মধ্যে ৩৪টিতে জয় পেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস, আর বিজেপি জিতেছিল মাত্র দুইটি আসনে।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: