৮০ বছরের বৃদ্ধা পেলেন ৭০ বছর আগের বাক্সভর্তি প্রেমপত্র

অবশেষে ৭০ বছর পর ফেসবুকের কল্যাণে ৮৮ বছরের বৃদ্ধা ফিরে পেলেন ১৮ বছর বয়সে আদান-প্রদান করা বাক্সভর্তি প্রেমপত্র। চিঠিগুলো বিদেশে কর্মরত ব্রিটিশ সেনা সদস্য বব ব্যাসলি ও যুক্তরাজ্যের ক্যান্ট এলাকার অধিবাসী নরমা হল’র মধ্যে আদান-প্রদান হয়েছিল। খবর বিবিসি

সম্প্রতি ব্রিটেনে বসবাসরত কিম রো তার ছাদঘর পরিষ্কারের সময় চিঠিগুলি খুঁজে পেয়েছিলেন। জানা যায়, কিমের মা চিঠিগুলিকে কোনো এক প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে প্রায় ২০ বছর আগে নিজের কাছে নিয়ে আসেন।

তবে কিম চিঠিগুলি প্রথমে ডাস্টবিনে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, “আমার মা চেরি ভ্যালান্স একবার দেখেই বুঝতে পারেন এগুলি নিশ্চয় কারো লেখা প্রেমপত্র, তাই তিনি এভাবে ফেলে দিতে রাজি হননি।”

এমনকি চেরির পরিবার যখন তাদের পূর্বের বাড়ি পরিবর্তন করেছিল, তখনও তিনি চিঠিগুলি নিজের সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। চিঠিগুলি আসল মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেবার ইচ্ছা থাকলেও ২০১৬ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চেরি বব ব্যাসলি ও নরমা হলের খোঁজ পায়নি।

কিন্তু এবার যখন চিঠিগুলি আবারও কিমের সামনে পড়ল, তখন তার মনে হলো দম্পতিটিকে তাদের স্মৃতি ফিরিয়ে দিয়ে মায়ের ইচ্ছা পূরণ করা দরকার।

তিনি বলেন, “আমি তথ্য খুঁজতে গিয়ে শুধু দু’টি চিঠি পড়েছি, বাকিগুলি পড়িনি। কারণ আমি মনে করি এগুলো তাদের ব্যক্তিগত আবেগের কথা, যা আমার জানবার অধিকার নেই।”

তারপর কিম ফেসবুকে পোস্ট করে বন্ধুদের কাছে চিঠির মালিকের খোঁজ জানতে চেয়েছিলেন। পোস্টটি ১১ হাজার বার ফেসবুকে শেয়ার হয় এবং ১৫০০ বিয়্যাকশন পায়। সৌভাগ্যক্রমে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী দম্পতিটিকে চিনতে পেরে তাদের ঠিকানা জানালে কিম সেই ঠিকানায় চিঠি লিখে এবং প্রেমপত্রগুলি আসল মালিকের হাতে তুলে দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

যুক্তরাজ্যের লিঙ্কনে বসবাসরত নরমা হলের বয়স এখন ৮৮ বছর। তার কোনো ধারণাই ছিল না বব ব্যাসলির লেখা চিঠিগুলো এখনও কোথাও থাকতে পারে। তিনি আনন্দে নির্বাক হয়ে গিয়েছিলেন, কারণ কয়েক মাস আগেই ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ববের মৃত্যু হয়েছিল।

নরমা বলেন, “আমরা প্রথমে বন্ধু হিসেবে লিখতে শুরু করি, তারপর বন্ধুর থেকেও বেশি কিছুতে পরিণত হই। এমনকি আমি সাধারণত চিঠি লিখতেই পছন্দ করতাম না। তবে তাকে প্রতি সপ্তাহেই চিঠি লিখতে আমার ভালো লাগত। ১৯৫১ সালে আমরা বিয়ে করি।”

নরমা আরও জানান, চিঠিগুলি তিনি মায়ের বাড়িতে রেখে এসেছিলেন, তারপর কিভাবে হারিয়ে যায় তা তিনি জানেন না। তবে চিঠিগুলি খুঁজে পেয়ে এখন তিনি খুব খুশি।

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: