চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার জনসভার আগে ২৪ জনকে হত্যা: ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

১৯৮৮ সালে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের আমলে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভার আগে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। মামলায় ৫ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার বিকাল ৩ টার পর চট্টগ্রামের বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালি অঞ্চলের তৎকালীন পেট্রোল ইনসপেক্টর জে সি মণ্ডল, কন্সটেবল মোস্তাফিজুর রহমান, প্রদীপ বড়ুয়া, শাহ মো. আবদুল্লাহ ও মমতাজ উদ্দিন। এদের মধ্যে সি মণ্ডল পলাতক আছেন।

এ মামলার অপর ৩ আসামির মধ্যে প্রধান আসামি চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদা, কনস্টেবল বশির উদ্দিন ও আব্দুস সালাম মৃত্যুবরণ করেছেন।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সোমবার সকালে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন করার কথা ছিল। আসামি পক্ষ যুক্তি উপস্থাপন না করায় আদালতের বিচারক বিকালে এ রায় ঘোষণা করলেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি নগরীর লালদীঘি ময়দানে সমাবেশে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালালে ২৪ জন মারা যান। আহত হন দু’শতাধিক মানুষ। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মো. হাসান মুরাদ, মহিউদ্দিন শামীম, এথলেবার্ট গোমেজ কিশোর, স্বপন কুমার বিশ্বাস, স্বপন চৌধুরী, পঙ্কজ বৈদ্য, বাহার উদ্দিন, চান্দ মিয়া, অজিত সরকার, রমেশ বৈদ্য, বদরুল আলম, ডি কে চৌধুরী, পলাশ দত্ত, আব্দুল কুদ্দুস, গোবিন্দ দাশ, শাহাদাত, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, সবুজ হোসেন, কামাল হোসেন, বি কে দাশ, সমর দত্ত, হাসেম মিয়া ও মো. কাসেম।

৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা বাদী হয়ে ওই মামলা করেন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মামলাটি পুনরায় প্রাণ ফিরে পায়। আদালতের আদেশে মামলাটির তদন্তের ভার পড়ে সিআইডির ওপর। সিআইডি ১৯৯৭ সালের ১২ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আদালতে। আবারও আদালতের নির্দেশে অধিকতর তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর পুলিশের আট সদস্যকে আসামি করে দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। ওইদিন আদালত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ১৯ জানুয়ারি দিন ঠিক করেন।

রোববার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী যুক্তি উপস্থাপন শেষে পাঁচ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। পরে আদালত আসামি পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য সোমবার দিন রেখেছিলেন। কিন্তু সোমবার সবালে আসামিপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন না করায় আদালত বিকালে রায় ঘোষণা করেন।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
একফ্রেমে ধরা দিলেন শাকিব-ববি Oct 17, 2025
img
কিডনির যত্নে সতর্কতা, ভিটামিন ডি ব্যবহারে ভুল হলেই বিপদ Oct 17, 2025
img
পান মশলার বিজ্ঞাপন নিয়ে ফের সমালোচনার মুখে বলিউড বাদশা Oct 17, 2025
img
দেশে এখন সবকিছু গডফাদার কেন্দ্রিক হয়ে গেছে : গোলাম মাওলা রনি Oct 17, 2025
img
ত্রিপুরায় ৩ বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিবৃতি দিলো সরকার Oct 17, 2025
img
আত্মপ্রকাশ করলো ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি’ সংগঠন Oct 17, 2025
img
তিন নায়িকার নামে জাল ভোটার কার্ড,তদন্তে নেমেছে নির্বাচন কমিশন Oct 17, 2025
img
কিছু রাজনৈতিক দলের জুলাই সনদে সই করার নাম জাতীয় ঐক্য নয়: নাহিদ Oct 17, 2025
img
নেপালের প্রথম এভারেস্টজয়ী দলের শেষ জীবিত সদস্য কাঞ্চা শেরপা আর নেই Oct 17, 2025
img
রাকসুতে ছাত্রদল প্যানেল থেকে একমাত্র বিজয়ী নার্গিস Oct 17, 2025
img
ভারত সিরিজের আগে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি অস্ট্রেলিয়া Oct 17, 2025
img
শিক্ষার্থীদের রায়ই চূড়ান্ত, আপনাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ : এষা Oct 17, 2025
img
রুশ তেল নিয়ে ট্রাম্প-মোদী ফোনালাপই হয়নি, দাবি ভারতের Oct 17, 2025
img
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি অনেকটাই ন্যায্য : উপ প্রেস সচিব Oct 17, 2025
img
জুলাই শহীদ পরিবারদের অবস্থান, সংসদ ভবনে ‘জুলাই সনদ’ অনুষ্ঠানের অচলাবস্থা Oct 17, 2025
img
রাকসুর জিএস পদে জয়ী সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার Oct 17, 2025
img
আমি ১৬ মাসের গর্ভবতী : সোনাক্ষী সিনহা Oct 17, 2025
img
জাতীয় সংসদের ১২ নম্বর গেটে বসে পড়েছেন জুলাই যোদ্ধারা Oct 17, 2025
img
সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে করা যাবে ডেঙ্গু পরীক্ষা Oct 17, 2025
img
জামায়াত একটা ঐতিহাসিক ভুল করতে যাচ্ছে : জাহেদ উর রহমান Oct 17, 2025