বিভাগীয় শহরে হবে করোনা পরীক্ষা: ডিজিএইচএস

করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। জেলা-উপজেলা লকডাউন, জনসমাগম ও দেশে-বিদেশী নাগরিকের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাসহ সুরক্ষামূলক কাজ ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। এবার করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য সরকার সব বিভাগীয় শহরের জন্য সাতটি পিসিআর মেশিন আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে কর্মরত ল্যাব টেকনিশিয়ানের সংখ্যা জানানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

সোমবার ডিরেক্টরেট জেনারেল অব হেলথ সার্ভিসের (ডিজিএইচএস) একটি সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

ডিজিএইচএস এর মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে পিসিআর বসানো হবে। তাড়াতাড়িই এসব পিসিআর চালানোর জন্য টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এছাড়া সরকার খুব দ্রুত আরও কিছু টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে।

তিনি আরও জানান, দেশে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য শুধুমাত্র জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) কাজ করে যাচ্ছিল। কিন্তু যেকোন সময় দেশে করোনা পরিস্থিতি মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছতে পারে, এই আশঙ্কায় সরকার বিভাগীয় শহরগুলোতে পিসিআর বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

করোনা ভাইরাস বিষয়ে ডিজিএইচএসের সাবেক পরিচালক বেনজির আহমেদ বলেন, করোনাভাইরাসের মত মহামারী নিয়ন্ত্রণের সব থেকে কার্যকর পদ্ধতি হলো ‘গৃহবন্দি’। যদি প্রত্যেকটি পরিবার তার বাড়ির সদস্যদের থেকে এ ভাইরাসের ছড়িয়ে যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তবেই করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

এদিকে আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক মাহমুদুর রহমান জানান, করোনা নিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে বুঝার জন্য নজরদারি বাড়ানো দরকার। পরিস্থিতি খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়ার বিকল্প নেই।

মাহমুদুর রহমান বলেন, বিভিন্ন জায়গায় করোনার উপসর্গ থাকা রোগীদের পরীক্ষা ও নমুনা শনাক্ত করতে আইইডিসিআর অনীহা প্রকাশ করেছে বলে জানা যাচ্ছে। দেশের এমন সংকটকালে আইইডিসিআরের এ ধরণের তৎপরতা বেমানান। করোনার উপসর্গ পাওয়া মাত্রই যদি পরীক্ষা করা হয়, তবে ক্ষতি অনেক কম হবে।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় সর্দি কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে নারাজ ডাক্তাররা। অধিকাংশ চিকিৎসক পিপিই (পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট) না থাকার অজুহাতে রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসাও দিচ্ছেন না। এতে রোগী ও তাদের স্বজনদের মাঝে আতঙ্ক আরও জোরদার হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন চিকিৎসক নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, সরকার এখন পর্যন্ত চিকিৎসকদের পিপিই নিশ্চিত করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা তো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রস্তুতিহীন ভাবে কাজ করতে পারেনা। রোগীর চিকিৎসা যেমন প্রয়োজন, চিকিৎসকের জন্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জামও তেমনই গুরুত্বপূর্ণ।

এ ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা মোজাহেরুল হক বলেন, সরকার সেল্ফ কোয়ারেন্টিনে মানুষকে উৎসাহিত করছে। কিন্তু সবাই এটা আমলে নেবে না। কাজেই সরকারের উচিত হবে একটু কঠোরতা দেখানো। এছাড়া বিদেশ ফেরতদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে ইউপি সদস্যদের সহযোগিতা নিতে পারে সরকার। প্রান্তিক পর্যায় থেকে সক্রিয় সহযোগিতা পাওয়া গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে।

 

টাইমস/এসএন/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ১৬০০ মিটার দৌড় : দুই তারকা ক্রিকেটারসহ অনুপস্থিত পাঁচ Apr 20, 2024
img
তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশ, যশোরে রেকর্ড তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি Apr 20, 2024
img
লেবুপানি খাবেন যে কারণে Apr 20, 2024
img
চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২.৩, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু Apr 20, 2024
img
সর্বোচ্চ বাড়িয়ে কমল স্বর্ণের দাম Apr 20, 2024
img
উপজেলা নির্বাচনকালে আ.লীগের সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ : কাদের Apr 20, 2024
img
যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন : ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪০৭ Apr 20, 2024
img
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা Apr 20, 2024
img
মালয়েশিয়ায় শোষণের শিকার বাংলাদেশি শ্রমিকরা : জাতিসংঘ Apr 20, 2024
img
শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক ডিপজল Apr 20, 2024