ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ হাসান মামুনকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় পুলিশের এক এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে শৈলকূপা থানা ওসি তাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যান।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, এ ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। তবুও সিসিটিভি ফুটেজ দেখা মাত্রই ঘটনার সাথে জড়িত থানার এসআই সাখাওয়াত হোসেনকে পুলিশ লাইনসে ক্লোজ করা হয়েছে। সেই সাথে শৈলকূপা সার্কেলের এএসপি আরিফুল ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান মামুন জানান, গত সোমবার বিকেলের দিকে ইউনিয়নের কাতলাগাড়ি বাজারের গরু হাটের ইজারা নিয়ে এলাকার দুইটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং উভয় পক্ষের লোকজন ঢাল-ভেলা নিয়ে সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একই দিন রাতে পুরাতন বাখরবা গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন ব্যক্তি আহত হয়। আহতদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়।
চেয়ারম্যান বলেন, খবর পেয়ে তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে আসেন। সেখানে সাদা পোশাকে উপস্থিত ছিলেন শৈলকূপা থানার এসআই সাখাওয়াত, এসআই রফিকুল এবং এএসআই রেজায়ানুল হকসহ কয়েকজন। হাসপাতালে উপস্থিত গ্রামের সাধারণ লোকজনকে ধরে ধরে একটি ইজিবাইকে তোলা শুরু করে দেয় তারা। এসময় লোকজনকে কেন ধরা হচ্ছে জানতে চাইলে প্রথমে তার বুকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলা দেওয়া হয় এবং লাথিসহ মারপিট করা হয়।
চেয়ারম্যান আরও অভিযোগ করেন, এসময় গায়ে থাকা গেঞ্জি ছিড়ে দেয় পুলিশ। এমনকি জোর করে তাকে একটি ইজিবাইকে তুলে থানায় নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। একই দিন গভীর রাতে শৈলকূপা থানার বর্তমান ওসি জাহাঙ্গীর আলম তাকে ফোন করে বলেছেন, “কপাল ভাল, আমি হাসপাতালে ছিলাম না। সবার আগে আপনার হাতে হ্যান্ডকাপ লাগতো। বেশী বাড়াবাড়ি করতেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে মাটির সাথে মিশিয়ে দেব।”
এদিকে শৈলকূপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে সাদা পোশাকধারী পুলিশের দ্বারা লাঞ্ছিত হওয়ার একটি ভিডিও এবং মোবাইল ফোনে থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলমের দেওয়া হুমকির কথপোকথনের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ক্লোজ হওয়া এসআই সাখাওয়াত হোসেন।
ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশে এসআই সাখাওয়াতকে বুধবার পুলিশ লাইনসে ক্লোজ করা হয়েছে। এর বেশী কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
টাইমস/ফাতেমা/এইচইউ