মায়ের জন্য রক্তের টাকা যোগার করতে সন্তান বিক্রি!

হবিগঞ্জে মায়ের জন্য রক্তের টাকা যোগার করতে নিজের সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন জন্মদাতা মা-বাবা। মাত্র ৬ হাজার টাকায় ১৫ দিনের নবজাতককে বিক্রি করে দিয়েছেন তারা।

শনিবার সন্ধ্যায় সদর আধুনিক হাসপাতালে এ ঘটনাটি ঘটেছে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে শিশুটি তার মা-বাবার কোলে ফেরে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার মন্দরি গ্রামের রহিম উদ্দিনের স্ত্রী আকলিমা বেগম ৮ জানুয়ারি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে সদর আধুনিক হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি হন। এ সময় চিকিৎসকরা জানান ৫ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন।

পরে নবজাতকের বাবা রহিম উদ্দিন টাকার অভাবে রক্তের ব্যবস্থা করতে না পারায় সন্তান বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি জানতে পারেন একই ওয়ার্ডে রোগী নিয়ে আসা নবীগঞ্জ উপজেলার চরগাঁও গ্রামের আছকির মিয়া। এ সময় তিনি নবজাতক শিশুটি কিনতে আগ্রহী হলে মাত্র ৬ হাজার টাকার বিনিময়ে সন্তান বিক্রি করে দেন।

নবজাতকের বাবা রহিম উদ্দিন বলেন, ১৫ দিন আগে গ্রামের বাড়িতে তার স্ত্রী একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। এর আগেও তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলেও টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি। সম্প্রতি তার স্ত্রীর অবস্থার অবনতি হলে ৮ জানুয়ারি সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চিকিৎসকরা জানান তার স্ত্রীর জন্য ৫ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। কিন্তু টাকার অভাবে রক্তের ব্যবস্থা করতে না পারায় স্ত্রীকে বাচাতে সন্তান বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন।

নবজাতকের মা আকলিমা বেগম বলেন, টাকার জন্য নিজের চিকিৎসা করাতে পারছিলাম না। মা-বাবা, ভাই-বোনসহ আত্মীয় স্বজনের কাছে ঘুরেও টাকার ব্যবস্থা করতে পারিনি। যে কারনে সন্তান বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি।

বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ ঘটনাস্থেলে পৌঁছে কিনে নেয়া দম্পতির সাথে যোগাযোগ করে বাচ্চাকে ফিরিয়ে আনেন। পরে রাত সাড়ে ৯টায় শিশুটিকে তার মা বাবার কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হেলাল উদ্দিন বলেন, হাসপাতাল থেকে দুই ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে। কিন্তু সন্তান বিক্রির বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। জানার পর পুলিশের সহায়তায় শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মা বাবার কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।

 

টাইমস/টিএইচ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পদে থেকে কোনো উপদেষ্টা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না : ইসি আনোয়ারুল Dec 09, 2025
img
নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র জনগণ মেনে নেবে না : ফয়জুল করীম Dec 09, 2025
img
ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪২১ Dec 09, 2025
img
বেলারুশ থেকে উড়ে আসা বেলুনের কারণে লিথুনিয়ায় জরুরি অবস্থার ঘোষণা Dec 09, 2025
img
নির্বাচন পেছানো-আগানোর মতো অবস্থা নেই : সারজিস আলম Dec 09, 2025
img
মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা শুক্রবার Dec 09, 2025
img
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের ২ গাড়িসহ জমি জব্দের আদেশ আদালতের Dec 09, 2025
img
সাংস্কৃতিক ইশতেহার ছাড়া ভোট না দেওয়ার হুঁশিয়ারি হামিন আহমেদের Dec 09, 2025
img
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ Dec 09, 2025
img
তফসিল ঘোষণার পর ‘বেআইনি ও অনুমোদনহীন আন্দোলন’ থেকে বিরত থাকার আহ্বান Dec 09, 2025
img
লাতিন বাংলা সুপার কাপে ব্রাজিল–আর্জেন্টিনা ক্লাবের ম্যাচ স্থগিত Dec 09, 2025
img
২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে আন্দোলন স্থগিত সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের Dec 09, 2025
img
পুলিশের সাবেক যুগ্ম-কমিশনার বিপ্লব কুমারসহ চার জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা Dec 09, 2025
img
হচ্ছে আতিফ আসলামের কনসার্ট, সঙ্গে বিআরটিসি বাস সার্ভিস! Dec 09, 2025
img
সোভিয়েত ইউনিয়ন পুনর্গঠন-ন্যাটোতে হামলা করতে চান না পুতিন Dec 09, 2025
img
শপথ নিলেন বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেন Dec 09, 2025
img
জনগণ এখন শাসন ব্যবস্থারও পরিবর্তন চায় : গোলাম পরওয়ার Dec 09, 2025
img
স্কুল লেভেলে কয়েকটি ভাষা বাধ্যতামূলক করা হবে : তারেক রহমান Dec 09, 2025
img
অসুস্থতা কাটিয়ে বাড়ি ফিরলেন প্রেম চোপড়া Dec 09, 2025
img
বিএনপির মিশন ৩০ এর অন্যতম রূপকার মাহবুব উল্লাহ : মির্জা ফখরুল Dec 09, 2025