কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় দেশের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার ও নীলফামারী জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
নীলফামারীতে শনিবার সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, উজানের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বৃহস্পতিবার নীলফামারী জেলায় তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে।
শুক্রবার দিনের বেলা সেখানে ৮ সেন্টিমিটার পানি কমে যায়। তবে সন্ধ্যা সাতটায় তা আবার বেড়ে গিয়ে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে। শনিবার সকাল ছয়টার দিকে পানি আরও বেড়ে ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিস্তার পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খাগড়াবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ি ও জলঢাকা উপজেলার তিস্তা নদীবেষ্টিত প্রায় ১৫টি চরাঞ্চলের ২০ হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে গাইবান্ধায় আরও বেড়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার চার সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
শনিবার সকাল ৯টায় নদের ফুলছড়ি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ।
শুক্রবার আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারী বর্ষণ অন্তত আরও দু’দিন অব্যাহত থাকবে। এতে আগামী তিনদিন নদ-নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে- দেশের সুরমা, কুশিয়ারা, খোয়াই, সোমেশ্বরী, কংস, তিস্তা সাঙ্গু নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া, কুশিয়ারা নদী সিলেটের আমলশীদ, শেওলা ও শেরপুরে; সুরমা নদী কানাইঘাট, সিলেট, সুনামগঞ্জে; খোয়াই নদী হবিগঞ্জের বাল্লায়; সোমেশ্বরী নদী কলমাকান্দায়; তিস্তা নদী নীলফামারীর ডালিয়ায় এবং সাঙ্গুনদী বান্দরবন ও চট্টগ্রামের দোহাজারীতে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট, চট্রগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় নিম্নাঞ্চল বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহওয়া অধিদপ্তর।
টাইমস/জিএস