আখের রসের গুনাগুণ

অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাবার ওজন বাড়ায় এ কথা আমরা সবাই জানি। তবে আখের রস মিষ্টি হলেও ওজন বাড়ে না বরং কমে। এছাড়া আখের রস আছে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটে পুষ্টিবিদরা এমন তথ্য জানিয়েছেন।

আখ ঘাস পরিবারের একটি C4 গাছ, একটি অর্থকরী ফসল, প্রথম উৎপত্তিস্থল গায়নাতে। পরে বাণিজ্যিকভাবে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পরে। বাংলাদেশ, ভারত, দক্ষিণ এশিয়া, ব্রাজিল, ল্যাট্রিন আমেরিকা প্রভৃতি দেশে প্রচুর আখ জন্মে।

সাম্প্রতিক গবেষণাতে আখের রসের পুষ্টিগুণের উপর চমৎকার তথ্য জানা গেছে। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, ২৫০-৩০০ মিলিলিটার আখের রসে সাধারণত ১১১ ক্যালরি থাকে। এর মধ্যে কার্বোহাইড্রেট থাকে ২৭ গ্রাম, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাসিয়াম থাকে ০.২৭ গ্রাম।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, মাঝে মধ্যে শুধু ফলের জুস খেয়ে দিন পার করতে হয়। এতে দেহের বিষাক্ত উপাদান বের হয়ে যায়। এই বিষমুক্তিকরণ প্রক্রিয়ায় আখের রস ব্যাপক কাজে দেয়।

চলুন জেনে নিই নিয়মিত আখের রস খাওয়ার উপকারিতা এবং এর মাধ্যমে যেসব রোগ এড়ানো যায়-

  • আখের অন্দরে থাকা কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, আয়রন, পটাশিয়াম এবং অন্যান্য উপকারী উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর শরীরে চাঙ্গা ভাব দেখা দেয়।
  • আখের রস খেলে বিপাকীয় গতি বাড়িয়ে দেয়। বাড়ে কর্মশক্তি। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এই দুটিই জরুরি।
  • ভোজ্য আঁশ প্রচুর পরিমাণে থাকায় খাবার ও পানীয় হজমে সাহায্য করে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে আখের রস। মলের ওজন বাড়ায় আঁশ। যা পক্ষান্তরে তার অপসারণকে সহজ করে।
  • গর্ভবতী মায়েদের আখের রস খুবই উপকারী, এতে আয়রন এবং ফলিয়েট থাকে যা শিশুর মস্তিষ্ক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • জন্ডিস ও অন্যান্য যকৃতের রোগ প্রতিরোধ আখের রসের বিকল্প নেই।
  • আখের রসে থাকা ‘গ্লাইকোলিক অ্যাসিড’ এর মতো ‘আলফা-হাইড্রক্সি অ্যাসিড (এএইচএ) ত্বকের জন্য উপকারী। এছাড়া ব্রণ প্রতিরোধে করে।

  • আখের রসে থাকা ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও অন্যান্য খনিজ উপাদান দাঁতের ‘এনামেল’ শক্তিশালী ও ক্ষয়রোধ করে।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে আখের রস। বিশেষ করে প্রস্টেট ও স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে। আখে থাকা ‘ফ্লাভানয়েড’ ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষকে ছড়াতে দেয় না।
  • ভারী কাজ কিংবা খেলাধুলার পর আখের রস পান করলে শক্তি ফিরে পাওয়া যায়।
  • আখের রসে প্রচুর ভিটামিন এবং মিনারেল আছে যা বিভিন্ন রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে।

সতর্কতা: আখের রস খেতে হলে বাড়িতে তৈরি করে খান। মনে রাখবেন নোংরা যন্ত্রের সাহায্যে তৈরি করা আখের রস মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: