মাইগ্রেনের আক্রমণ থেকে মুক্তির সহজ উপায়

সাধারণ মাথা ব্যথার থেকে মাইগ্রেন অনেকটাই আলাদা। এর ফলে প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব ও বমি হয় এবং শব্দ ও আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা তৈরি হয়। এটি আপনার জীবনে বাড়তি ঝামেলা বয়ে নিয়ে আসে।

এ ব্যথা মাথার যে কোনো অংশ থেকে শুরু হয়। পরে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হলে তা কয়েক ঘণ্টা, এমনকি কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। যদি একে নিয়ন্ত্রণের কৌশল জানা থাকে, তাহলে বসে থেকে মাইগ্রেন শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। ব্যথামুক্ত হয়ে দৈনন্দিন কাজে ফিরতে পারবেন।

চলুন জেনে নিই মাইগ্রেনের আক্রমণ থেকে মুক্তির সহজ উপায়-

চিকিৎসার পরিকল্পনা রাখুন
সঠিক পরিকল্পনা আপনাকে মাইগ্রেনের ব্যথা মারাত্মক হয়ে ওঠার আগেই তার থেকে মুক্তি দেবে। ভবিষ্যতের মাইগ্রেন অ্যাটাক হলে এটিই হবে আপনার সব থেকে ভালো অস্ত্র।

ওষুধ হাতের কাছে রাখতে হবে, যাতে করে ব্যথা আসছে বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গেই আপনি ওষুধ গ্রহণ করতে পারেন। ফলে ব্যথা শুরু হলে কী করবেন সেই দুশ্চিন্তা হতে আপনি মুক্ত থাকবেন। ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে আপনি সঠিক ওষুধ নির্বাচন করতে পারেন।

গোঁড়ার দিকেই চিকিৎসা শুরু করুন
মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে মুক্তির জন্য ‘টাইমিং’ বা ‘সঠিক সময়ে কাজ’ খুব জরুরি। যত দ্রুত সম্ভব ব্যথানাশক গ্রহণ করুন। দ্যা আমেরিকান হেডেক সোসাইটি’র পরামর্শ হলো অ্যাটাকের প্রোড্রোম পর্যায়ে ওষুধ খেয়ে নিতে হবে। প্রোড্রোম হলো মাইগ্রেন ব্যথা আসার হুশিয়ারি সংকেতের মতো। পুরোপুরি মাইগ্রেন অ্যাটাকে আক্রান্ত হলেন কিনা সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করবেন না।

কেন এটি হচ্ছে তা বোঝার চেষ্টা করুন
আপনি যদি আপনার মাইগ্রেনের কারণ খুঁজে বের করতে পারেন, তাহলে আপনি হয়তো তা থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে গেলে অনেকের মাইগ্রেন শুরু হয়। অর্থাৎ আপনি যদি ক্ষুধার্ত থাকেন তাহলে এটি হতে পারে, সে ক্ষেত্রে আপনি দ্রুত কিছু খেয়ে নিন।

আবার ডিহাইড্রেশনের কারণেও মাইগ্রেন অ্যাটাক হতে পারে। আপনি যদি পর্যাপ্ত পানি না পান করে থাকেন তাহলে অল্প অল্প করে পানি পান করতে থাকুন।

অন্ধকার নির্জন জায়গায় বিশ্রাম নিন
আলো ও শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা মাইগ্রেনের একটি সাধারণ উপসর্গ। যদি সম্ভব হয় তাহলে অন্ধকার ও নির্জন কোনো স্থান খুঁজে বের করুন এবং সেখানে বিশ্রাম নিন। সম্ভব হলে শুয়ে থাকুন এবং নিঃশ্বাসের দিকে নজর দিন। লম্বা ও গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে থাকুন। গভীর নিঃশ্বাস অনুশীলন প্রক্রিয়া মাইগ্রেনের ব্যথার স্থায়িত্ব কম করে, ফলে দ্রুত এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

ক্যাফেইন আপনাকে সাহায্য করতে পারে
এক কাপ কফি আপনাকে মাইগ্রেন থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারে। কারণ কফিতে ক্যাফেইন পাওয়া যায়। আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন অনেক ব্যথানাশক ট্যাবলেটে কিছু পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে। কারণ ক্যাফেইন ওষুধের কার্যকারিতা বাড়ায়।

তবে খুব বেশি ক্যাফেইন গ্রহণ করবেন না। সাময়িক কিছু সুফল পাওয়া গেলেও ভবিষ্যতে আরও বেশি মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে অতিরিক্ত ক্যাফেইন।

গরম বা ঠাণ্ডা থেরাপি
আপনি নিশ্চয় গরম বা ঠাণ্ডা থেরাপির সঙ্গে পরিচিত। দেহের কোনো স্থানে ব্যথা পেলে সাধারণত আমরা বরফ লাগাই বা হট ওটার ব্যাগ দিয়ে সেই স্থানটি চেপে রাখি। মাইগ্রেনের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতিটি কার্যকর। সূর্যের তাপ যদি আপনার মাইগ্রেনের কারণ হয়, তাহলে ঠাণ্ডা থেরাপি অধিকতর কার্যকর হবে। অন্যান্য সময় গরম থেরাপিও ভালো কাজ করে।

মাইগ্রেন একটি জটিল সমস্যা, তাই একাধিক কৌশল একসঙ্গে প্রয়োগের মাধ্যমে এটি কমানোর চেষ্টা করতে হবে। যে পদ্ধতিগুলো আপনার ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর সেগুলো প্রয়োগ করুন। তথ্যসূত্র: হেলথলাইন.কম

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: