কচুর লতির গুণাগুণ

গ্রামবাংলার অতি পরিচিত খাবার কচুর লতি। গলা ধরে বলে অনেকে কচুর লতি খেতে ভয় পায়। কিন্তু সুস্বাদু এই খাবারটি সঠিক পদ্ধতিতে রাঁধলে গলা ধরার ভয় নেই মোটেই।

চিংড়ি দিয়ে রান্না কচুর লতির তরকারির স্বাদের তুলনা হয় না। অনেকে চিংড়ির সঙ্গে নারকেলও দেন। খেতে মালাইকারির চেয়ে কোনো অংশে খারাপ নয়। এছাড়া ছুরি, ফাঁইস্যা, লইট্টা বা চিংড়ি শুঁটকি দিয়ে রান্না কচুর লতিও অতুলনীয়। এত স্বাদের এই সবজিটির গুণাগুণ সম্পর্কে অনেকেই জানেন না।

এছাড়া অভিজাত সবজির ভিড়ে কচুর লতিরও যেন স্থান নেই। অথচ পুষ্টিগুণে অনন্য এই সবজি।

পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, কচুর লতিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। খেলোয়াড়, গর্ভস্থ অবস্থা, বাড়ন্ত শিশু ও কেমোথেরাপি পাচ্ছে- এমন রোগীদের জন্য কচুর লতি খুবই উপকারী একটি উপাদান।

এতে ক্যালসিয়াম পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। যা দেহের হাড় শক্ত করে ও চুলের ভঙ্গুরতা রোধ করতে সক্ষম। এর মধ্যে ডায়াটারি ফাইবার বা আঁশের পরিমাণ খুব বেশি আছে। এই আঁশ খাবার খুব সহজে হজম করে, দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে, এছাড়া যেকোনো বড় ধরণের অপারেশনের পর খাবার হজমে উপকারী পথ্য হিসেবে কাজ করে এই কচু লতি।

কচুর লতি রক্তে চিনির মাত্রা বাড়ায় না। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা নিঃসংকোচে খেতে পারেন কচুর লতি।

কচুর লতি যে কারণে খাবেন-

  • গরমে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। কচুর লতিতে প্রচুর পানি থাকে। সে কারণে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কচুর লতি রাখা যেতে পারে।
  • কচুর লতির আঁশ দেহ থেকে বর্জ্য বের করে দেয়, খাবার হজমে সাহায্য করে।
  • যারা দ্রুত ওজন কমাতে চান তারা কচুর লতি খেতে পারেন।
  • মুখি বা কচুর চেয়ে লতিতে শর্করার পরিমাণ কম। ফলে যারা শর্করা পরিহার করে চলেন তারা কচুর লতি খেতে পারেন।
  • কচুর লতির ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠন শক্ত করে।
  • এতে থাকা আয়োডিন ও ভিটামিন-বি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ভালো রাখে ত্বক আর চুল।
  • কচুর লতিতে থাকা ভিটামিন-সি মানবদেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।
  • কচুর লতিতে আছে প্রচুর লোহা। যারা রক্তশূন্যতায় ভুগছেন কচুর লতি তাদের জন্য ভালো পথ্য হতে পারে।
  • এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ফোলেট, থায়োমিনও রয়েছে।
  • কচু লতি রক্তের কোলেস্টরলের মাত্রা কমায়।
  • কোলন ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে।
  • শিশুদের বেশি করে তেল দিয়ে খাওয়ানো ভালো। এতে রাতকানা রোগের আশঙ্কা কমে।

সতর্কতা:

  • কচুতে অক্সলেট রয়েছে। তাই রান্নার পরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে গলা খানিকটা চুলকায়। তাই কচুর লতির তরকারি খাওয়ার সময় কিছুটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন।
  • অনেক ক্ষেত্রে কচু খেলে শরীরে অ্যালার্জি এবং হজমে সমস্যা দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে যাদের এ ধরনের সমস্যা রয়েছে তারা কচু খাবেন না।
  • যারা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরলজনিত সমস্যায় আক্রান্ত বা উচ্চ রক্তচাপে (হাই ব্লাড প্রেশারের) ভুগছেন তারা কচুর লতি খাওয়ার সময় চিংড়ি ও শুঁটকি বর্জন করুন।

 

টাইমস/জিএস 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
তানজিদের অভিষেক ফিফটিতে টাইগারদের বড় জয় May 03, 2024
img
শনিবার থেকে ট্রেনে বাড়তি ভাড়া, কোন রুটে কত May 03, 2024
img
আরআরআর'র সভাপতি আনোয়ার হোসেন সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম May 03, 2024
img
মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভিষেক হলো আসিফের May 03, 2024
img
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা : জয়দেবপুর স্টেশন মাস্টারসহ তিনজন সাময়িক বরখাস্ত May 03, 2024
img
নির্বাচনী আচরণবিধি না মানলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না: ইসি রাশেদা May 03, 2024
img
টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, তানজিদের অভিষেক May 03, 2024
img
অতি গরমের প্রভাব বাজারে, বেড়েছে মুরগি-সবজির দাম May 03, 2024
img
সরকারকে যারা চাপে রাখতে চেয়েছিল তারা নিজেরাই চাপে আছে: ওবায়দুল কাদের May 03, 2024
img
শনিবার বন্ধ থাকবে ২৫ জেলার স্কুল-মাদরাসা May 03, 2024