পানি পানের আদর্শ পরিমাণ ও পদ্ধতি

পৃথিবীর গঠনের মতোই আমাদের দেহের শারীরিক গঠন। মানবদেহের আকারের সাপেক্ষে তাতে ৫৫-৭৮ ভাগ পানি দ্বারা গঠিত। দেহের সব জৈবিক ক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য পানি পান অপরিহার্য এবং তা হতে হবে অবশ্যই জীবাণুমুক্ত।একজন মানুষের প্রতিদিন পানির চাহিদা কতটুকু তা নির্ভর করে আবহাওয়া, তার কাজকর্মের পরিমাণ, শরীরের অবস্থা ইত্যাদির ওপর।

পানি পান নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশে রয়েছে থার্স্ট সেন্টার বা পিপাসাকেন্দ্র। এই কেন্দ্র জানিয়ে দেয় যে কখন পানি পান করা দরকার। একজন মানুষের এই অংশটি কার্যকরী থাকলে পানির অভাব বা বাড়তি কখনোই হবে না।

তবে কোনো কোনো সময়, যেমন মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর এই কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হলে ব্যক্তির পিপাসার নিয়ন্ত্রণ লোপ পায়। তখন পানির অভাবে বিপদ ঘটে যেতে পারে।

পরিমাণের বেশি পানি পান করলে মানুষের কিডনি কার্যকরভাবে অতিরিক্ত পানি প্রস্রাবের মাধ্যমে দেহ থেকে বের করে দেয়। কিন্তু এই কিডনি যদি অকার্যকর হয়ে যায়, তবে অতিরিক্ত পানি শরীরে জমে গিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

চলুন জেনে নিই, পানি পানের আদর্শ পরিমাণ ও পদ্ধতি-

  • দিনের শুরুতে খালি পেটে এক গ্লাস বা আড়াইশ মিলিলিটার পানি পান করাকে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা 'স্বাস্থ্যকর', 'বিশুদ্ধ', 'সুন্দর' ইত্যাদি বিশেষণে বিশেষায়িত করে থাকেন।
  • খাওয়ার ঠিক পরপরই পানি খাওয়া যাবে না। বরং পুরো খাওয়ার মাঝে এক কাপ পরিমাণ বা দেড়শ মিলিলিটার পানি পান করতে হবে, যা পান করতে হবে চুমুকে চুমুকে।
  • দুপুরের খাওয়ার পর থেকে রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত এক ঘণ্টা পরপর এক’দুই চুমুক পানি পান করতে হবে।
  • দৈনিক ৮ আউন্স কাপের ৮ গ্লাস পানি করা দরকার, যা প্রায় ২ লিটারের সমান। তবে অনেক গবেষণাতেই দেখা গেছে, দৈনিক চার লিটার পানি পান করা জরুরি।
  • এয়ার-কন্ডিশন আছে এমন জায়গায় কাজ করলে দৈনিক ২.৫ লিটারের বেশি পানি পান করার দরকার নেই।
  • যদি শরীরচর্চা করে থাকেন তাহলে তা শুরু করার আগে ১৬ আউন্স পানি, ব্যায়াম চলার সময়ে ৪ থেকে ৮ আউন্স পানি এবং শরীরচর্চা শেষ করার পরে আরও ১৬ আউন্স পানি পান করুন।
  • পানি মুখে নিয়ে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড রেখে তারপর গলধঃকরণ করা উচিত।
  • সবসময় ফুটানোর পানি পান করতে হবে। ফুটানোর ১২ ঘণ্টা পর ওই পানি পান না করাই ভালো।
  • পানি পানের স্বাস্থ্যকর পরিমাণ নির্দিষ্টভাবে নির্ণয় করা সম্ভব নয়। এটি নির্ভর করে আবহাওয়া এবং একজন ব্যক্তির শারীরিক পরিশ্রমের উপর। পাশাপাশি সারাদিন অন্যান্য তরল কতটা পান করা হচ্ছে সেটাও হিসেবে রাখতে হবে।
  • দৈনন্দিন খুঁটিনাটি সমস্যাগুলো সারাতে পানি পান করা সমস্যাগুলোকে দীর্ঘস্থায়ী করে তুলতে পারে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার সময় মনে রাখতে হবে, পানি যেন কুসুম গরম হয়। এবং ধীরে ধীরে তা পান করতে হবে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ