বিদেশ থেকে দশ বছরে ফিরেছে ২৭ হাজার শ্রমিকের মরদেহ

২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিগত ১০ বছরে বিদেশ থেকে ২৬ হাজার ৭৫২ জন শ্রমিকের মরদেহ দেশে ফিরেছে বলে জানিয়েছে ‘নারীশ্রমিক কণ্ঠ’ নামে একটি সংগঠন। এর মধ্যে গত ৯ মাসে প্রায় ৩ হাজার শ্রমিকের মরদেহ দেশে ফিরেছে।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন কর্মজীবী নারী’র পরিচালক রাহেলা রব্বানী। নারী শ্রমিকের নিরাপদ বিদেশ গমন ও নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করার দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

সরকারের বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন-২০১৩ যথাযথভাবে প্রয়োগ হচ্ছেনা অভিযোগ করে নারী শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় ১৩ দফা দাবি তুলে ধরে সংগঠনটি।

দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- অভিবাসী শ্রমিক প্রেরণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নীতি অনুযায়ী সকল প্রকার সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি মেনে অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে; নারী অভিবাসী শ্রমিকদের শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার ও সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদন ও বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে; প্রবাসে কর্মরত নারী শ্রমিকদের নিয়োগকর্তার নাম, কর্মস্থলের ঠিকানাসহ নারীশ্রমিকের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার তথ্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ ও অভিবাসী শ্রমিকের পরিবারকে তথ্য দিতে হেল্প ডেস্ক চালু করতে হবে; প্রলোভন দেখানো রিক্রুটিং এজেন্টের লাইসেন্স বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণ করা ও অভিবাসী শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় ঘোষিত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বাস্তবায়ন করা; অভিবাসী শ্রমিকরা যে কোনও ধরনের বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশি দূতাবাস ও কনস্যুলেটের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক উদ্ধার, আবাসন, খাদ্যসহ আইনি সহায়তা প্রদান করা এবং সরাসরি সরকারিভাবে নারী অভিবাসী শ্রমিক প্রেরণ নিশ্চিত করা; নারী শ্রমিকদের নির্যাতনের তথ্য জানার পরও দূতাবাসসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের যে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি, তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, উন্নত জীবনের আশায় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যাওয়া নারী অভিবাসী শ্রমিকরা প্রতিদিনই মারাত্মকভাবে শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অপরাপর মন্ত্রণালয় এবং সরকারের কোনও পর্যায় থেকেই কোনও পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নারী শ্রমিক জোটের সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমল, প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুন নাহার প্রমুখ।

 

টাইমস/এএইচ/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ