সকালে ঘুম থেকে ওঠার উপকারিতা

ভোরের পাখি আর নিশাচর প্রাণীদের মধ্যে বিতর্ক দীর্ঘ দিনের। ভিন্ন জীবনাচরণ দুটির ভিন্ন ভিন্ন ভালো ও মন্দ দিক রয়েছে। একদিকে ভোরের ঘুম থেকে ওঠা লোকেরা দাবি করেন এটি তাদেরকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করে তোলে, অন্যদিকে নিশাচর ব্যক্তিদের দাবি যে রাত জাগা তাদেরকে স্মার্ট করে।

কিন্তু বিজ্ঞান কী বলছে? বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে- সকালে ঘুম থেকে ওঠার অনেক সুফল রয়েছে এবং এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। রাত জাগা লোকেরা হয়ত এর সঙ্গে সহমত প্রকাশ করতে পারবেন না।

চলুন জেনে নেয়া যাক, ভোরে ঘুম থেকে ওঠার উপকারিতা সমূহ-

ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে
নর্থ-ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা অনুযায়ী ভোরে ঘুম থেকে ওঠা আমাদের ওজনকে প্রভাবিত করে। যারা সকালে দেহে রোদ লাগায় তাদের দেহে অতিরিক্ত মেদের পরিমাণ যারা দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন তাদের তুলনামূলক কম। তবে এই গবেষণাটিতে ব্যক্তিগত খাদ্যাভ্যাস ও প্রতিদিনের ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি।

উন্নত ড্রাইভিং দক্ষতা
রাত জাগা ব্যক্তিরা যদিও স্বীকার করতে চাইবেন না, কিন্তু যারা ভোরে ওঠেন তারা আসলে ভালো ড্রাইভার।

একটি স্প্যানিশ গবেষক দলের করা গবেষণায় দেখা গেছে, যারা রাতে জেগে থাকেন তারা বিকাল বা সন্ধ্যার তুলনায় সকালে বাজে ড্রাইভিং করেন। কিন্তু যারা ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন তারা সব বেলাতেই ভালো ড্রাইভ করতে সক্ষম।

গবেষণাটি আরও বলছে, ভোরে ওঠা লোকেরা বিস্তারিতভাবে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে থাকেন।

বেশি কর্মক্ষমতা
যখন আপনি ভোরে ঘুম থেকে উঠে সুন্দর একটি সূচনা করবেন, তখন অনেক বেশি কর্মোদ্দীপনা অনুভব করবেন এবং কর্মক্ষমতা বেড়ে যাবে।

হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউতে প্রকাশিত গবেষণা বলছে, ভোরে জেগে ওঠা লোকেরা রাত জাগা লোকদের থেকে বেশি সংকল্পবদ্ধ ও চিন্তাশীল।

দৈহিক সুস্থতা
যারা ভোরে উঠে অভ্যস্ত, তারা ভোর বেলাতেই শরীর চর্চা করে নিতে পারেন এবং ভোরের শরীর চর্চা বেশি কার্যকর। ফলে দেরি করে ঘুম ভাঙা লোকদের থেকে তারা অতিরিক্ত সুফল ভোগ করেন। দেরি করে ওঠা লোকেরা প্রায়শই আলস্য অনুভব করেন এবং শরীর চর্চা করতে ভুলে যান।

বিজ্ঞান বলছে, আপনি যদি ওজন কমাতে এবং সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে চান, তাহলে সকালের শরীর চর্চা আবশ্যক।

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে
দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণের পক্ষে ক্ষতিকর। বিজ্ঞান বলে যে, ঘুমের প্রাকৃতিক নিয়ম রক্ষা করা উচিৎ। যারা সঠিক সময়ে ঘুমাতে যান এবং ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন; তারা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা যেমন হৃদরোগ, রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়া, মেটাবলিক সিনড্রোম প্রভৃতি প্রতিরোধে বেশি সক্ষম। তথ্যসূত্র: দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: