শীতে মেজাজ ভালো রাখতে যা খেতে হবে

মৌসুম পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মেজাজের পরিবর্তন খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। হঠাৎ করে মেজাজ পরিবর্তন হয়ে যাবার ঘটনাকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘মুড সুয়িং’। আর মৌসুমের সঙ্গে মেজাজ খারাপ হবার ঘটনাকে বলা হয় সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিজঅর্ডার (মৌসুম প্রভাবিত অসুখ)।

এর ফলে ব্যক্তি বিষণ্ণতা ও অবসাদ অনুভব করে। একই সঙ্গে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, মনোযোগের ঘাটতি, হতাশা প্রভৃতি দেখা যায়। থেরাপি, ওষুধ সেবন বা শরীর চর্চার দ্বারা এর চিকিৎসা করা সম্ভব। তবে খাদ্যাভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন আনার মধ্য দিয়ে এই হতাশা রুখে দেয়া যেতে পারেন। এমন কিছু খাবার রয়েছে, যা এই রোগের উপসর্গগুলি উপশমে সাহায্য করবে।

চলুন জেনে নিই, শীতে যেসব খাবার মেজাজ ভালো রাখবে-

কলা
প্রাকৃতিক চিনি হতে সৃষ্টি শর্করা আর কলাতে থাকা পটাসিয়াম মস্তিষ্ককে কর্মচঞ্চল করে তুলতে সক্ষম। আর এই কর্মচাঞ্চল্য অবসাদ আর বিষণ্ণতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অত্যন্ত কার্যকর। কলাতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা ও নিদ্রাহীনতা দূর করতে সহায়তা করে। সুতরাং এই শীতে মন খারাপ হলে একটু বেশি কলা খেতে কার্পণ্য করবেন না।

মাছ
মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এটি পেশি শিথিল করে, হজম ক্ষমতা বাড়ায় এবং উর্বরতা বা সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করে তাদের বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। মাছ ছাড়াও সয়াবিন বীজ, আখরোট প্রভৃতি শস্যদানায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়।

বেরি
বিষণ্ণতা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ব্লু-বেরি, স্ট্রবেরি বা রাস্পবেরির তুলনা হয় না। বলা হয়ে থাকে, যেকোনো জাতের বেরি বিষণ্ণতা প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর। কারণ, বেরি আমাদের দেহে কোর্টিজল নামক স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণে বাঁধা সৃষ্টি করে। এই হরমোনটি বিষণ্ণতার জন্য দায়ী।

ডার্ক চকলেট
আপনি যদি চকলেট প্রেমী হয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই জানেন যে খুব মন খারাপের দিনেও চকলেটে কামড় দিতে ইচ্ছে করে। গবেষণা বলছে, চকলেটে বিশেষ করে ডার্ক চকলেটে প্রচুর পরিমাণে পলিফেনল থাকে। আর পলিফেনল হলো এমন একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমাদের মেজাজ ভালো করতে সহায়তা করে। সুতরাং চোখ বুজে প্রচুর পরিমাণে কোকো সমৃদ্ধ চকোলেট হাতে তুলে নিন।

এই শীতে মন খারাপ, বিষণ্ণতা আর অবসাদ এড়াতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন। তবে অবশ্যই ফাস্ট ফুড এবং অতিরিক্ত তেল মশলা সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন। চিনিযুক্ত পানীয় বা খাবারও বেশি খাবেন না, কারণ এটি আপনার অবস্থার অবনতি ঘটাতে পারে। খুব বেশি বিষণ্ণতা বা অবসাদ দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন। তথ্যসূত্র: দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: