গুণে অনন্য সরিষা

আমাদের উপমহাদেশে রান্নায় নানাবিধ মশলার ব্যবহার চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। কেউ সবজিতে পাঁচফোড়ন দিয়ে আবার কেউ কেউ তরকারিতে মেথি যোগ করে তৈরি করেন নিজের বিশেষ রেসিপি। আবার অনেকেই দৈনন্দিন রান্নায় ব্যবহার করেন হলুদ অথবা সরিষা।

সরষে বাটা আর ইলিশের সুখ্যাতির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। সরিষা এমনি একটি উপাদান, যার স্বাদ বাড়ানো ছাড়াও অন্য অনেক গুণাগুণ রয়েছে। কম ক্যালোরি আর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ সরিষায় রয়েছে অ্যান্টিসেপ্টিক ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান।

সাধারণত সাদা, কালো ও বাদামী এই তিন ধরণের সরিষা দানা দেখতে পাওয়া যায়। আর রান্নায় সরষের ব্যবহার করা  হয় পিষে, গুড়ো করে বা অনেক সময় আস্ত দানা হিসেবেই।

সাধারণত আমাদের বাড়ি-ঘরে রান্নার সময় কালো সরিষার দানাই সব থেকে বেশি ব্যবহৃত হয়। অনেক সময় এটিকে আস্ত রেখেই হালকা ভেজে বিভিন্ন তরকারিতে রসনা হিসেবে যোগ করা হয়ে থাকে। কিছুটা ঝাল ঝাল খেতে এই সরষে দানার বাটা দিয়ে মাখানো হয় মুখরোচক ভর্তা, যেমন- আম মাখা, পেয়ারা মাখা, আমড়া মাখা প্রভৃতি।

চলুন সরষের নানা গুনাগুণ সম্পর্কে জেনে নিই-

  • সরষে দানা খনিজ উপাদানে পরিপূর্ণ এবং এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস থাকে।
  • প্রথাগতভাবে সরিষা দানা ঠাণ্ডা উপশমে, হজমের জটিলতা নিরসনে, ব্যথা, জ্বালাপোড়া কমাতে এবং শ্বাসকষ্ট উপশমে ব্যবহৃত হয়।
  • সরিষা দানায় বিভিন্ন খনিজ উপাদান যেমন- কপার, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও সেলেনিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

  • অ্যাজমা রোগীদের জন্যেও সরিষা বেশ উপকারী। এতে বিদ্যমান কপার, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ও সেলেনিয়াম অ্যাজমা অ্যাটাক রোদ করার জন্য কাজ করে।
  • সরিষা দানা ক্যারোটিন ও লুটেনিনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এছাড়াও এতে ভিটামিন এ, সি ও কে বিদ্যমান। সব মিলে এটি একটি অনন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
  • এতে প্রচুর পরিমাণে সালফার থাকে, যা ফাঙ্গাস প্রতিরোধে খুবই কার্যকর। এটি চর্ম রোগ হতে আমাদেরকে রক্ষা করে।
  • এটি একই সঙ্গে খাদ্যআঁশের অন্যতম উৎস। যা আমাদের দেহের বিপাক ক্রিয়া উন্নত করে। এর ফলে মল নির্গমন সহজ হয় এবং দেহের মেটাবোলিজমের উন্নয়ন সাধন হয়।
  • সরষে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান ঠাণ্ডাসহ নানা ধরণের রোগ থেকে দেহকে মুক্ত রাখে।

  • সরষে দানা ভিটামিন বি-কমপ্লেক্সের সহজলভ্য একটি উৎস। এতে ফোল্যক্স, নিয়াসিন, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, পাইরিডোক্সিন, প্যান্টোথেনিস প্রভৃতি উপাদান বিদ্যমান। তথ্যসূত্র: দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: