পৃথিবীর প্রথম বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রাচীন চীনে। খ্রিষ্টপূর্ব ২২০০ শতকে চীনের রাজা শান (Shun) এর শাসনামলে প্রথম বৃদ্ধাশ্রম তৈরি শুরু হয়। পরবর্তীতে চীনের বিভিন্ন প্রদেশে বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণ করা হয়।
ঘরছাড়া অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করে ইতিহাসে আলাদাভাবে জায়গা দখল করে নেয় চীনের এই শান রাজবংশ।
যতটুকু জানা গেছে, পৃথিবীর প্রথম প্রতিষ্ঠিত সেই বৃদ্ধাশ্রমে ছিল বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের আরাম-আয়েশের সব রকম ব্যবস্থাই। ছিল খাদ্য ও বিনোদন ব্যবস্থা।
ইতিহাসবিদেরা এই বৃদ্ধাশ্রমকে প্রাচীন চীনে গড়ে ওঠা সভ্যতারই অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে অভিহিত করেছেন।
বর্তমানে দেখা যায়, একবার বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাতে পারলেই যেন সব দায়মুক্তি। এখন নানা অজুহাতে বাবা-মাকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। অনেক নামী-দামি বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, চাকরিজীবী, যারা একসময় খুব বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ছিলেন, বৃদ্ধ বয়সে এসে নিজের সন্তানের দ্বারাই অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হয়ে বৃদ্ধাশ্রমের স্থায়ী বাসিন্দা হতে বাধ্য হচ্ছেন।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক সন্তান বা আত্মীয়স্বজন আর তাদের কোনো খবরও নেন না। তাদের দেখতে আসেন না, এমনকি প্রয়োজনীয় টাকা-পয়সা বা জিনিসপত্রও পাঠান না। বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠানে বা ঈদের আনন্দের সময়ও বাবা-মাকে বাড়িতে নেন না।
আমাদের মনে রাখা উচিত- আজ যিনি সন্তান, তিনিই আগামী দিনের বাবা কিংবা মা। বৃদ্ধ বয়সে এসে মা-বাবারা যেহেতু শিশুদের মতো কোমলমতি হয়ে যান, তাই তাদের জন্য সুন্দর জীবনযাত্রার পরিবেশ তৈরি করাই সন্তানের কর্তব্য।
আর যেন কখনো কোনো বাবা-মার ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম না হয়। তাদের জন্য তৈরি করতে হবে একটা নিরাপদ ও সুন্দর পৃথিবী।
টাইমস/জিএস