তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে আবারো মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর) দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বুধবার সকাল ৯টায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। সেখানকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া দিনাজপুরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়া অঞ্চলগুলোর মধ্যে রংপুরের বদলগাছীতে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি, ডিমলায় ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি, রাজারহাটে ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি, তাড়াশে ৮ ডিগ্রি, রংপুরে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি, রাজশাহীতে ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি, ঈশ্বরদীতে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি, সৈয়দপুরে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি, চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি এবং টাঙ্গাইলে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
এছাড়া ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমল হক বলেন, কুষ্টিয়া ও টাঙ্গাইল অঞ্চলসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টিকালীন সময়ে আকাশে মেঘ থাকবে। বৃষ্টিপাত কেটে যাওয়ার পরে তাপমাত্রা ১-৩ ডিগ্রি কমে যেতে পারে এবং চলমান শৈত্যপ্রবাহ আরো বেশি অঞ্চলজুড়ে অব্যাহত থাকতে পারে।
বুধবার সকাল ৯টা পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গের গাঙ্গেয় উপকূল ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশের রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
এদিকে, তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, তেঁতুলিয়ায় বুধবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এটি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। একই সঙ্গে চলতি শীত মৌসুমেও এটি সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড।
তেঁতুলিয়ায় দেশের ইতিহাসের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি। সেদিন সেখানে তাপমাত্রা নেমে আসে ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ১৯৬৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশের হাসপাতালে শীতজনিত রোগব্যাধির প্রকোপ বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে এআরইউতে ৯২৯ জন ও ডায়রিয়ায় এক হাজার ৯৫৮ জনসহ মোট দুই হাজার ৮৮৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
এছাড়া গত ১ নভেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫৪ দিনে (প্রায় দুই মাসে) সারাদেশের হাসপাতালে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে মোট ২ লাখ ৫৮ হাজার ৬৫৭ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। একই সময়ে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
টাইমস/এইচইউ