খুলনায় দ্বিতীয় দফায় আমরণ অনশনে পাটকল শ্রমিকরা

জাতীয় মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দফায় আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকেরা।

সোমবার সকাল থেকে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা নিজ নিজ মিল গেইটে অবস্থান নিয়ে অনশন পালন করছে। এর আগে রোববার বিকাল ৩টা থেকে নগরীর খালিশপুর বিআইডিসি রোডে অবস্থান নিয়ে শ্রমিকেরা এই কর্মসূচি শুরু করে।

জানা গেছে, খালিশপুরের দৌলতপুর জুটমিল ও দিঘলিয়ার স্টার জুটমিলের শ্রমিকরা বিআইডিসি রোডের প্লাটিনাম গেইটের পূর্বপাশে, প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিকরা মিলের পশ্চিম ফটকে, ক্রিসেন্ট জুটমিল গেইট, খালিশপুর জুটমিল গেইট, আটরা শিল্পাঞ্চলের আলিম ও ইস্টার্ন জুটমিলের শ্রমিকরাও তাদের মিলগেইটে এ কর্মসূচি পালন করেছেন।

ক্রিসেন্ট জুট মিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মুরাদ হোসেন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বারবার প্রতিশ্রুতি পেয়ে আমরা আন্দোলন থেকে সরে এসেছিলাম। ইতিমধ্যে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনবার আলোচনা হলেও, তাতে সমস্যার কোনো সুরাহা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, এখনও আমাদের ৫-৬ সপ্তাহের বেতন বকেয়া রয়েছে। আমাদের সবগুলো দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে, এবার আর আমরা আন্দোলন থেকে সরছি না।

জানা গেছে, শনিবার দুপুর থেকে হাজার হাজার পাটকল শ্রমিক কাজ বন্ধ করে বিআইডিসি রোডে এসে জড়ো হতে থাকেন। এবার আন্দোলনে তাদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যরাও যোগ দিয়েছেন। তীব্র শীতকে উপেক্ষা করেও শ্রমিকেরা সারারাত ধরে অনশন পালন করেন। যা আজও চলছে।

খুলনা অঞ্চলে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল আছে নয়টি। এর মধ্যে খুলনায় আছে সাতটি ও যশোরে দুটি। সেগুলো হলো- ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, দৌলতপুর, খালিশপুর, দিঘলিয়া, আলীম, ইস্টার্ন, কার্পেটিং ও জেজেআই জুট মিল। গত ২৩ নভেম্বর থেকে ১১ দফা দাবিতে খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলের অন্তত ৩২ হাজার শ্রমিক আন্দোলন শুরু করেছিলেন।

এরপর, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের ডাকে গত ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর রাত পর্যন্ত তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেন। সেমময় প্রায় ২০০ শ্রমিককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো।

এর মধ্যে, গত ১২ ডিসেম্বর আমরণ অনশনকালে অসুস্থ হয়ে প্লাটিনাম জুট মিলের তাঁত বিভাগের শ্রমিক আব্দুস সাত্তার (৫৫) মারা যান। পরে গত ১৫ ডিসেম্বর একই মিলের মেকানিক্যাল বিভাগের শ্রমিক সোহরাব (৫৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনিও আমরণ অনশন পালন করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

জাতীয় মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন ছাড়াও পাটকল শ্রমিকদের ১১ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম হলো- সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) সিদ্ধান্ত বাতিল ও অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পি.এফ. গ্রাচ্যুইটির টাকা পরিশোধ করা।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ