খিচুড়ি : স্বাদ আর পুষ্টির অনন্য সমাহার

বাঙালির প্রিয় খাবারগুলির মধ্যে অন্যতম হলো খিচুড়ি। বৃষ্টি হলে, শীতের মৌসুমে বা ছুটির দিনে প্রায়শই আমরা খিচুড়ি খেয়ে থাকি। আবার অসুস্থ রোগীকে পথ্য হিসেবে সবজির সঙ্গে খিচুড়ি বানিয়ে খাওয়ানো হয়।

খিচুড়িতে একইসঙ্গে শর্করা, ক্যালসিয়াম, আমিষ, ভিটামিনসহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান থাকায় একে শক্তিবর্ধক ও স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

নানা উপায়ে খিচুড়ি তৈরি করা যায়; তবে চাল, ডাল, হলুদ, মরিচ আর লবণ এর প্রাথমিক উপাদান। স্বাদ বাড়াতে অনেকে দারুচিনি-এলাচিও যোগ করেন, আবার মাংস কিংবা সবজিও যোগ করা যেতে পারে।

যেহেতু খিচুড়ির প্রধান উপাদান চাল ও ডাল, তাই শর্করা ও আমিষের প্রয়োজনীয়তা পূরণে এটি একটি আদর্শ খাদ্য হিসেবে বিবেচিত। সুস্বাদু এই খাবারটি তৈরির খরচ তুলনামূলকভাবে কম এবং উপাদানগুলিও সহজলভ্য হওয়ায় সব শ্রেণীর মানুষের জন্যই খাবারটি আদর্শ।

আসুন আমাদের প্রিয় এই খাবারটির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নিই-

  • খিচুরিতে ব্যবহৃত মুগ বা মসুর ডাল ও ছোলা ফাইবারের (খাদ্য আঁশ) সমৃদ্ধ উৎস হিসেবে বিবেচিত। এতে ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম, তামা, পটাসিয়ামসহ উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।
  • অন্যান্য ডালের তুলনায় মুগ ডালে শর্করার পরিমাণ কম থাকে, ফলে স্থূলতা জনিত জটিলতা সৃষ্টি হয় না এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • ডালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো- এতে উচ্চমাত্রায় আমিষ থাকে। তাই খিচুড়ি আমিষের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম।
  • এছাড়াও এটি হজমের উন্নতি ঘটায়। কারণ, ডাল অন্ত্রে বুটিরেট নামক ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি করে, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
  • প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে মজাদার খিচুড়ি বদহজম, ডায়রিয়া, অ্যাসিডিটিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য আদর্শ।এছাড়াও সার্জারি, সংক্রমণ বা জ্বর থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার সময় খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। অসুস্থ রোগীদের জন্য এটি দ্রুত তৈরি যোগ্য সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার।
  • পাচনতন্ত্রকে দূষিত পদার্থ মুক্ত করার পাশাপাশি শান্ত রাখতে খিচুড়ি কার্যকর। এর উপাদানগুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • মুগ ডালের খিচুড়িতে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকে; যা শরীরে ইনসুলিন, রক্তে গ্লুকোজ ও ফ্যাট এর স্তর হ্রাস করতে সহায়তা করে। ফলে খিচুড়ি রক্তের শর্করার মাত্রা হ্রাস করতে এবং ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। তথ্যসূত্র: দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: