ভূমিকম্পের অবস্থান জানার যন্ত্রটি প্রথম আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী জাঙ হেঙ

ভূ-অভ্যন্তরে শিলায় পীড়নের জন্য যে শক্তির সঞ্চয় ঘটে, সেই শক্তির হঠাৎ মুক্তি ঘটলে ভূ-পৃষ্ঠ ক্ষণিকের জন্য কেঁপে ওঠে এবং ভূ-ত্বকের কিছু অংশ আন্দোলিত হয়। এই রূপ আকস্মিক ও ক্ষণস্থায়ী কম্পনকে ভূমিকম্প বলে।

কম্পন-তরঙ্গ থেকে যে শক্তির সৃষ্টি হয়, তা ভূমিকম্পের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এই তরঙ্গ ভূ-গর্ভের কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলে উৎপন্ন হয় এবং উৎসস্থল থেকে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ভূমিকম্প সাধারণত কয়েক সেকেন্ড থেকে এক/দু-মিনিট স্থায়ী হয়।

ভূমিকম্পের অবস্থান ও বিবরণ জানার জন্যে ১৩২ খৃস্টাব্দে একটি যন্ত্র অর্থাৎ Seismograph আবিষ্কার করেছিলেন চীনা বিজ্ঞানী জাঙ হেঙ। তার উদ্ভাবিত যন্ত্রটি ছিল বেশ মজার।

এতে ছিলো গম্বুজাকৃতির পাত্র, যার বহির্গত্র অলংকৃত ছিলো বিভিন্ন প্রাচীন প্রাণীর মূর্তি দিয়ে। পাত্রের পরিধি বরাবর বাইরের দিকে মুখ করে ছিলো আটটি ড্রাগনের মাথা। যাদের প্রত্যেকের মুখে ছিলো একটি করে ব্রোঞ্জের গোলক। ভিত্তির চারিদিকে ঘিরে ছিলো আটটি হা করা ব্যাঙ মূর্তি, যাতে করে ড্রাগনের মুখ থেকে গোলক বের হয়ে গেলে ব্যাঙের মুখে পড়ে।

Seismograph-টির ভেতরে ছিলো মৃদু ভারসাম্যপূর্ণ একটি স্তম্ভ, যা ভূ-কম্পনের সময় আন্দোলিত হতো এবং আটটি দিক- পথে একটি একটি যান্ত্রিক প্রক্রিয়া পরিচালিত করতো। তখন একটি ড্রাগন তার সম্মুখে থাকা ব্যাঙের মুখে গোলকটি ছেড়ে দিতো।

গোলকটি ব্যাঙের মুখে পড়ার পর জোরে শব্দ হতো। জোরে শব্দ হলেই সতর্ক হতে হতো ভূমিকম্প হচ্ছে বা কাছেই কোথাও ভূমিকম্প হচ্ছে। ভূমিকম্পের অবস্থান নির্দেশিত হতো যে দিকের ব্যাঙের মুখে গোলক পড়ত সেদিকে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: