স্কোয়াশ মূলত একটি শীতকালীন সবজি। এটি বিদেশি জনপ্রিয় সবজি। বাংলাদেশে নতুনভাবে এর চাষ শুরু হয়েছে। স্কোয়াশে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ রয়েছে। এর পাতা ও কাণ্ড সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। এর বিভিন্ন জাতের মধ্যে বারি স্কোয়াশ-১ একটি উচ্চ ফলনশীল জাত। পরাগায়নের পর থেকে মাত্র ১৫-১৬ দিনেই ফল সংগ্রহ করা যায়। গড় ফলের ওজন ১.০৫ কেজি। এ জাতের জীবনকাল ৮০-৯০ দিন। প্রতি হেক্টরে গড় ফলন ৪৫-৫০ টন।
স্কোয়াশ চাষের জমি তৈরি
স্কোয়াশ চাষের জন্য বেলে-দোআঁশ মাটি বেশ উপযুক্ত। বসতবাড়ি ও চরেও এর আবাদ সম্ভব। ভালো ফলন পেতে হলে জমি গভীরভাবে চাষ করতে হবে। মাটি ও জমির প্রকারভেদে ৫-৬টি চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করে নিতে হবে। শীতকালীন চাষের সময় জমিতে রসের পরিমাণ কম থাকলে প্রয়োজনে চাষের আগে সেচ দিয়ে নিতে হবে।
বীজ বপনের সময়
শীতকালীন চাষাবাদের জন্য ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্তিক মাসের মাঝামাঝি (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) মাসে বীজ বপন করা হয়। তবে আগাম শীতকালীন ফসলের জন্য ভাদ্র মাসের ১ম সপ্তাহ থেকে আশ্বিন মাসে (আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বর মাসে) জমিতে সরাসরি বীজ বপন করা হয়। এক বিঘা বা ৩৩ শতক জমিতে ছোট সাইজের বীজ হলে ৩০০ গ্রাম / ২৪০০-২৫০০ টি বীজ লাগবে। বড় সাইজের বীজ হলে ৫০০ গ্রামের মতো লাগতে পারে।
স্কোয়াশের রোপণ প্রযুক্তি
স্কোয়াশ বীজ সরাসরি জমিতে রোপণ করা যায়। তবে ছোট আকারের পলিথিন ব্যাগে চারা উৎপাদন করে বা প্লাস্টিক ট্রেতে করে তা জমিতে রোপণ করলে ভালো হয়। এছাড়াও স্কোয়াশের বীজ মাদায় বপন করা যায়। প্রায় ৩ ফুট দূরে দূরে একটি মাদায় ২-৩ টি বীজ বপন করা হয়। বীজ বপন বা চারা রোপণ করার সময় গাছ থেকে গাছে দূরত্ব ১.৫ ফুট এবং একটি গাছের লাইন থেকে অন্য গাছের লাইনের দূরত্ব হলো ৩ ফুট। বীজ প্রায় ১ ইঞ্চি গভীরে বপন করতে হবে। চারা গজানোর পর মাটি তুলে ৬-১২ ইঞ্চি উঁচু করে দিতে হবে এবং ১-২ ফুট প্রশস্ত করতে হবে।
ফুল ও ফল আসার সময়
বীজ রোপণের অল্প দিনের মধ্যেই গাছ বেড়ে ওঠে এবং রোপণের ৩৫-৪০ দিনের মধ্যেই গাছে ফুল আসে। পরাগায়নের ১০-১৫ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করতে হবে। বীজ লাগানো থেকে ফল তুলতে সময় লাগে দুই আড়াই মাস। ফুল ও ফল দেখতে অনেকটা মিষ্টি কুমড়ার মতো। ৫৫-৬০ দিনের ভিতর স্কোয়াশ বাজারজাত করা যায়।
সার প্রয়োগ ও সেচ
সেচ ও নিষ্কাশন পদ্ধতি
অন্যান্য পরিচর্যা ও করণীয়
স্কোয়াশের রোগবালাই ও পোকামাকড়
স্কোয়াশের ক্ষতি করে মাছিপোকা, রেড পামকিন বিটল ও জাবপোকা। মাছিপোকা স্কোয়াশের কচিফল ও ফুলের মধ্যে প্রথমে ডিম পাড়ে। পরবর্তীতে ডিম থেকে কীরা বের হয়ে ফল ও ফুলের ভিতর কুরে কুরে খায়, যার ফলে ফল ও ফুল পচন ধরে নষ্ট হয়ে যায়। এই পোকার আক্রমণের ফলে প্রায় ৫০-৭০ ভাগ ফল নষ্ট হয়ে যায়। পামকিন বিটলের পূর্ণবয়স্কপোকা চারা গাছের পাতায় ফুটো করে এবং পাতার কিনারা থেকে খাওয়া শুরু করে সম্পূর্ণ পাতা খেয়ে ফেলে। এ পোকা ফুল ও কচি ফলেও আক্রমণ করে। এছাড়া প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক জাবপোকা দলবদ্ধভাবে গাছের পাতার রস চুষে খায়। ফলে পাতা বিকৃত হয়ে যায়, বৃদ্ধি ব্যাহত হয় ও প্রায়শ নিচের দিকে কোঁকড়ানো দেখা যায়।
দমন ব্যবস্থাপনা
টাইমস/জিএস