অপরাধের দায় নেবে না দল: ১৫ দিনের রিমান্ডে পাপিয়া

অস্ত্র ও মাদক আইনের মামলায় গ্রেপ্তার নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামিমা নুর পাপিয়ার অপরাধ কর্মের দায় তার ব্যক্তিগত। পাপিয়ার এসব অপকর্মের দায় কোনো ভাবেই দল নেবে না বলে জানিয়েছেন যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল।

এদিকে সোমবার পাপিয়ার ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এরই মধ্যে পাপিয়ার নামে অবৈধ মুদ্রা ব্যবসা, জালিয়াতি, মাদক কারবার, অর্থ পাচারসহ একাধিক মামলা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান সুমন ওরফে সুমন চৌধুরী, সুমনের সহযোগী সাব্বির খন্দকার ও পাপিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী শেখ তায়্যিবা।

জানা গেছে, গ্রেপ্তার শামিমা নুর পাপিয়াকে বহিষ্কারাদেশ সম্বলিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে অপু উকিল লিখেছেন, এ সকল সমাজের কীটদের অপকর্মের দায় সংগঠন কোন ভাবেই নেবে না। দলের পক্ষ থেকে এ ধরণের অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।

এর আগে শনিবার দুপুরে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করে দেশত্যাগের সময় শামীমা নূর পাপিয়াকে তার চারজন সহযোগীসহ আটক করে র‌্যাব-১।

গ্রেপ্তারের পর রোববার বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১ অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্ণেল শাফী উল্লাহ বলেন, চাকরিপ্রত্যাশী নারীদের ফাঁদে ফেলে দেহ ব্যবসায় নিয়োজিত করতো পাপিয়া। এরপর নারীদের আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে তাদের ব্ল্যাকমেইল করা হত। এভাবে অল্প দিনেই শামিমা নুর পাপিয়া শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, পুলিশের এসআই ও বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন পদে মানুষকে চাকরি দেয়ার কথা বলে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন শামিমা। এসব তথ্য আটক হওয়ার পর র‌্যাবকে জানিয়েছেন শামিমা ও তার স্বামী সুমন।

এছাড়া জমির দালালি, সিএনজি পাম্পের লাইসেন্স দেয়া, গ্যাসলাইন সংযোগের নামেও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন এই প্রতারক চক্র।

লে. কর্ণেল শাফী উল্লাহ আরও জানান, পাপিয়ার তথ্যানুযায়ী রাজধানীর ফার্মগেটস্থ তার বাসায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ অস্ত্র, মাদকদ্রব্য, বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ ও বিদেশী মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাবের দাবি, পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরীর নামে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চাকরির প্রলোভনে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া নরসিংদী এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উপার্জনের তথ্যও র‌্যাবের হাতে এসেছে।

এদিকে হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের সঙ্গে পাপিয়ার ছবি উঠানোর ব্যাপারে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, কারো সঙ্গে ছবি তুললেই অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ হয়না। ছবি উঠানোর ব্যাপার এসব অপরাধের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয়।

র‌্যাব আরও জানায়, যুবলীগ নেত্রী পাপিয়া পিউ নামেই বেশি পরিচিত। এই নেত্রীর প্রকাশ্য আয়ের উৎস হিসেবে রয়েছে গাড়ি বিক্রি ও সার্ভিসিংয়ের ব্যবসা। এর আড়ালে জাল মুদ্রা সরবরাহ, বিদেশে অর্থপাচার এবং অবৈধ অস্ত্র রাখাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এসব অভিযোগের অনুসন্ধান করছিল র‌্যাবের একটি দল। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে শনিবার সকালে তড়িঘড়ি করে দেশত্যাগের চেষ্টা করেন পাপিয়া। কিন্তু তার আগেই তিনি আটক হন।

 

টাইমস/এসএন/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ