শাবনূর আমার বাসায় এসে আমারই সামনে সালমানের কানে মুখ নিয়ে কথা বলত। যা আমার একদমই পছন্দ ছিল না। সোমবার সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে একথা বলেন নায়কের সাবেক স্ত্রী সামিরা।
তিনি বলেন, শুরু থেকেই বলে আসছি ইমন (সালমান শাহ) আত্মহত্যা করেছে, আগেও যা বলেছি সেটাই পিআইবির প্রতিবেদনে আবার উঠে এসেছে। পিবিআই দেওয়া প্রতিবেদন খুব একটা আনন্দেরও না, আবার বেদনারও না।
সালমান শাহর সঙ্গে শাবনূরের ঘনিষ্ঠতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, একদিন ডাবিং রুমে তার সঙ্গে শাবনূরকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখি। বিষয়টি একদমই ভালো লাগেনি আমার। শাবনূর খুব বেশি সালমানের সঙ্গে মিশত, এটা আমার ভালো লাগত না। পৃথিবীর কোনো স্ত্রীরই এটা ভালো লাগার কথা নয়। আমারও লাগেনি। সে বার বার সালমানের কানের কাছে মুখ নিয়ে কথা বলা দেখে আমার খারাপ লাগত।
সামিরা আরও বলেন, এরপর সালমান আমার কাছে ওয়াদা করে শাবনূরের সঙ্গে আর ছবি করবে না। যেগুলো চুক্তিবদ্ধ হওয়া আছে সেগুলো শেষ করবে। তবে সেই সব ছবির শুটিং ও ডাবিংয়ে আমাকে নিয়ে যাবে। এমনিতেই সালমানের শুটিংয়ে আমার থাকা হতো। কারণ ওর ড্রেস ডিজাইনার ছিলাম আমি।
সামিরা আরও বলেন, শাবনূরের সঙ্গে সব ছবিতেই শুটিংয়ে যেতাম আমি। তার সঙ্গে সম্পর্ক থাকলেও সেখান থেকে ফিরে এসেছিল সালমান। তার সঙ্গে আর ছবি করবে না, সেটা তো সে সংবাদ সম্মেলন করে সবাইকে জানিয়েও দিয়েছিল।
পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামিরাকে না বলে গোপনে ডাবিং করতে যান সালমান ও শাবনূর। এ কথা অস্বীকার করে সামিরা বলেন, এটা আমাকে সকালে জানিয়েই গিয়েছিল। আমাকে যেতে বললে আমি বলেছিলাম তুমি যাও পরে আসছি।
তবে সালমান শাহর আত্মহত্যাকে খুন বলে চালানোর চেষ্টা করেছে সালমানের পরিবার। আর সেটা সামিরার ওপর চাপাতেও চেষ্টা করেছিল। কারণ সালমানের সম্পদের প্রতি যেন কোনো দাবি না করতে পারেন সামিরা, এমনটিই জানান তিনি।
সামিরা এখন তিন সন্তানের মা। ১৯৯৯ সালে দুই পরিবারের সম্মতিতে তিনি বিয়ে করেন সালমান শাহর বন্ধু মোস্তাক ওয়ায়েজকে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটন রোডে নিজের বাসা থেকে সালমান শাহর লাশ উদ্ধার করা হয়।
২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর আলোচিত এ মামলাটি তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন আদালত। সোমবার আলোচিত এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
মঙ্গলবার ৬০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি আদালতে জমা দেন পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম।
পিবিআই এর এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলা চলচ্চিত্রের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি, তিনি পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা করেছিলেন। বিশেষ করে তাদের প্রতিবেদনে উঠে আসে শাবনূরের নাম। যার সঙ্গেও নাকি সংসার করতে চেয়েছিলেন সালমান শাহ।
টাইমস/জেকে