দেশি ট্যাংরার চাষ পদ্ধতি

দেশি ট্যাংরা মাছ খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিসমৃদ্ধ। কাঁটা কম থাকায় এটি সবার প্রিয়। দেশে পুকুর, খাল-বিল, ডোবার সংখ্যা কমে যাওয়ায় দেশি ট্যাংরা প্রায় বিলুপ্তির পথে চলে গিয়েছিল। বাজারে কালেভদ্রে অল্পস্বল্প মিললেও দাম বেশ চড়া। কিন্তু হারানো ট্যাংরা মাছের প্রজাতিকে আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

দেশি ট্যাংরা মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও চাষের কৌশল উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের সৈয়দপুর স্বাদু পানি উপকেন্দ্রের একদল মৎস্য বিজ্ঞানী। ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা খোন্দকার রশীদুল হাসানের নেতৃত্বে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মালিহা হোসেন ও শওকত আহম্মেদ এই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন।

এ পদ্ধতিতে ট্যাংরা মাছ চাষের জন্য প্রথমেই পুকুর নির্বাচন করতে হয়। পুকুর নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেখতে হবে পুকুরটি যেন খোলামেলা রোদ্র উজ্জ্বল জায়গায় হয় এবং বাড়ির আশপাশে হতে হবে যেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। পুকুরের আয়তন ৮-১০ শতাংশ ও গড় গভীরতা ১.০ মিটার হলে ভালো।

ট্যাংরা চাষের আগে জেনে রাখতে হবে যে, এ মাছের প্রজনন কাল এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত। এ সময় ৮-১০ গ্রাম ওজনের ট্যাংরা সংগ্রহ করে প্রস্তুতকৃত পুকুরে মজুত করে কৃত্রিম প্রজননের জন্য ব্রুড তৈরি করতে হবে। এরপর হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে ডিম থেকে রেণু পোনা তৈরি করে ১০ দিনের মধ্যে পুকুরে ছাড়তে হবে। রেণু পোনা ছাড়ার আগে পুকুর শুকিয়ে প্রথমে প্রতি শতাংশে এক কেজি হারে চুন প্রয়োগের পাঁচ দিন পর কয়েকবার প্রতি শতাংশে ইউরিয়া ১০০ গ্রাম, টিএসপি ৭৫ গ্রাম ও গোবর চার কেজি ব্যবহার করে নিতে হবে।

পুকুরে রেণু ছাড়ার পর প্রতিদিন দুইবার করে খাবার হিসেবে চালের কুঁড়া ২৫% ফিসমিল ৩০%, সরিষার খৈল ২০%, মিট অ্যান্ড বোনমিল ২৫% হারে মিশিয়ে প্রয়োগ করা হয়। মাছের দৈহিক ওজনের ৮-৫% হারে খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে। দু'মাস পর থেকে প্রতি ১৫ দিন পরপর জাল টেনে মাছের দেহের বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করা হয়। পুকুরে ছাড়া ট্যাংরা ৮-১০ মাসের মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: