মহামারী করোনাভাইরাস নিয়ে পৃথিবী জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিস্ময়কর গতিপ্রকৃতির কারণে করোনাভাইরাস প্রথম থেকেই গবেষকদের কাছে ব্যাপক গুরুত্ব পেয়েছে। এ ভাইরাস আবিষ্কারের পর থেকে গবেষকরা তার প্রতিষেধক তৈরি করতে নানা প্রচেষ্টা চালালেও এখন পর্যন্ত সফলতা আসেনি।
এমনই পরিস্থিতিতে এবার করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্যবিদ ও গবেষকরা নতুন ও চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আনলেন।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, নতুন করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বাতাসে ৩০ মিনিটের মত ভেসে থাকতে সক্ষম। এ ভাইরাসটি দশমিক পাঁচ মিটার বা ১৪.৭ ফুট পর্যন্ত যাতায়াত করতে পারে। চীনের সরকারি এপিডেমিওলজিস্টের একটি দল এই তথ্য দিয়েছে।
চীনের এই গবেষকদের দাবি, শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে নির্গত হওয়ার পর ভাইরাসটি কঠিন ভূমিপৃষ্ঠে কয়েকদিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে। পারস্পরিক স্পর্শের মাধ্যমে এই ভাইরাসটি বেশি ছড়ায়। কেউ যদি অবচেতন মনে নাক, কান, মুখ, চোখ স্পর্শ করে, তাহলেও করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে।
গবেষকরা আরও জানায়, নতুন এই করোনাভাইরাসটি কতক্ষণ সক্রিয় থাকবে তা তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার ওপর নির্ভর করছে। প্রায় ৩৭ ডিগ্রি তাপমাত্রায় এ ভাইরাসটি কাঁচ, কাপড়, ধাতু, প্লাস্টিক ও কাগজের ওপর দুই থেকে তিন দিন সক্রিয় থাকতে পারে।
গত শুক্রবার পিয়ার-রিভিউ জার্নাল প্র্যাকটিক্যাল প্রিভেনটিভ মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে এ বিষয়ে গবেষকরা বলেছেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আবদ্ধ পরিবেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সক্রিয়তার দূরত্ব সাধারণ স্বীকৃত নিরাপদ দূরত্বকে ছাড়িয়ে যাবে। মানুষের মল বা শরীরবৃত্তীয় তরলে করোনাভাইরাস পাঁচ দিনেরও বেশি টিকে থাকতে পারে।
এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে ঘন ঘন হাত ধোয়া ও মাস্ক পরার কোন বিকল্প নেই বলেও জানিয়েছেন গবেষকরা। সেই সঙ্গে গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন, জনাকীর্ণ স্থান পরিহার করা। কারণ আক্রান্ত হওয়ার মাত্র পাঁচদিন পরেই এ ভাইরাসের সংক্রমণের লক্ষণগুলো প্রকাশ পাচ্ছে।
চীনা এসব গবেষকরা আরও বলছেন, করোনাভাইরাসের উপস্থিতি থাকলেও যাদের মধ্যে ১২ দিন পর্যন্ত কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে যে, তাদের মাধ্যমে অন্যরা সংক্রমিত হতে পারেন। কাজেই সংক্রমিত হলে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবশ্য করণীয়।
টাইমস/এসএন/এইচইউ