আধুনিক কৃষি উৎপাদন প্রক্রিয়ায় রাসায়নিক সার একটি অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ। ষাট দশকের শুরু থেকে রাসায়নিক সারের ব্যবহার শুরু হয়, যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে, বর্তমানে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সারে ভেজাল দ্রব্য মিশিয়ে নকল বা ভেজাল সার তৈরি ও বিক্রি করছেন। আর কৃষি কাজে এসব সার ব্যবহার করে কৃষক প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক দিক দিয়েও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
তাই আসল সার চেনা জরুরি। একটু সতর্ক হলেই আসল ও ভেজাল সারের পার্থক্য বোঝা যায়। আসুন জেনে নেই, ভেজাল সার চেনার উপায়-
ইউরিয়া সার চেনার উপায়
আসল ইউরিয়া সারের দানাগুলো সমান হয়। তাই কেনার সময় প্রথমেই দেখে নিতে হবে যে সারের দানাগুলো সমান কিনা। ইউরিয়া সারে কাঁচের গুড়া অথবা লবণ ভেজাল হিসেবে যোগ করা হয়। চা চামচে অল্প পরিমাণ ইউরিয়া সার নিয়ে তাপ দিলে এক মিনিটের মধ্যে অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ তৈরি হয়ে সারটি গলে যাবে। যদি ঝাঁঝালো গন্ধসহ গলে না যায়, তবে বুঝতে হবে সারটি ভেজাল।
টিএসপি সার চেনার উপায়
টিএসপি সার পানিতে মিশালে সঙ্গে সঙ্গে গলবে না। আসল টিএসপি সার চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা পর পানির সঙ্গে মিশবে। কিন্তু ভেজাল টিএসপি সার পানির সঙ্গে মিশালে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই গলে যাবে বা পানির সঙ্গে মিশে যাবে।
ডিএপি সার চেনার উপায়
ডিএপি সার চেনার জন্য চামচে অল্প পরিমাণ ডিএপি সার নিয়ে একটু গরম করলে এক মিনিটের মধ্যে অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ হয়ে তা গলে যাবে। যদি না গলে তবে বুঝতে হবে সারটি সম্পূর্ণরূপে ভেজাল। আর যদি আংশিকভাবে গলে যায় তবে বুঝতে হবে সারটি আংশিক পরিমাণ ভেজাল আছে। এছাড়াও কিছু পরিমাণ ডিএপি সার হাতের মুঠোয় নিয়ে চুন যোগ করে ডলা দিলে অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ বের হবে। যদি অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ বের না হয় তাহলে বুঝতে হবে সারটি ভেজাল।
এমওপি বা পটাশ সার চেনার উপায়
পটাশ সারের সঙ্গে ইটের গুড়া ভেজাল হিসেবে মিশিয়ে দেয়া হয়। গ্লাসে পানি নিয়ে তাতে এমওপি বা পটাশ সার মিশালে সার গলে যাবে। তবে ইট বা অন্য কিছু ভেজাল হিসেবে মিশানো থাকলে তা পানিতে গলে না গিয়ে গ্লাসের তলায় পড়ে থাকবে। তলানি দেখে সহজেই বুঝা যাবে সারটি আসল নাকি ভেজাল।
জিংক সালফেট সার চেনার উপায়
জিংক সালফেট সারে ভেজাল হিসেবে পটাশিয়াম সালফেট মেশানো হয়। জিংক সালফেট সার চেনার জন্য এক চিলতে জিংক সালফেট হাতের তালুতে নিয়ে তার সঙ্গে সমপরিমাণ পটাশিয়াম সালফেট নিয়ে ঘষলে ঠাণ্ডা মনে হবে এবং দইয়ের মতো গলে যাবে।
টাইমস/জিএস